বাজেট প্রণয়নে এমপিদের সুযোগ দেওয়া হয়নি

15

সরকারি দলের সংসদ সদস্যদেরও জাতীয় বাজেট কিংবা সরকারের অন্যান্য নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ দেওয়া হয় না বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী। গতকাল শনিবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘বাজেট ডায়লগ -২০২১’ শীর্ষক বাজেট পরবর্তী আলোচনা সভার গেস্ট অব অনারের বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
‘সাংসদরা শুধু হ্যাঁ বা না বলার জন্য সংসদে আছেন’- বলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই সাংসদ মন্তব্য করেন।
সিপিডি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সাংসদ রুমিন ফারহানা, এফবিসিসিআই সভাপতি জসীম উদ্দিন, এমসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, বিজিএমইএ সহ-সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ আজিমসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তাদের অনুরোধে বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে অন্তত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রধানদের পরামর্শ নিতে। এবং বসে উনি নিজে নোট করতেন। তো এটাতো এই বছর আর হয়নি। তো আমার মনে হয় না কোনো কমিটির ওনার (অর্থমন্ত্রীর) সাথে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের সিস্টেমে সংসদ আসলে খুব একটা আলোচনার মধ্যে আসে না’।
এসময় অন্যান্য বক্তার বক্তব্যের সূত্র ধরে তিনি বলেন, ‘আপনারা অনেকেই বলেন, বাজেট অবশ্যই অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই হতে হবে। এখানে যেন অপচয় না হয় সেটা দেখতে হবে। কিন্তু আমরা যে আলোচনা করব, বিতর্ক করব, আমরা যে ডায়লগ করব- এই বেসিসটাতো (ভিত্তি) ঠিক থাকতে হবে। সেটা আমরা কিভাবে করব’।
সাবের বলেন, ‘এটা না হলে যে সমস্যাটা হয় আমরাতো শুধু সংসদে আছি, হ্যাঁ বা না বলার জন্য। আমরা সংসদে আছি মানুষের যে চাহিদার কথাগুলো আছে সেগুলো ব্যাখ্যা করা এবং তুলে ধরার জন্য। কিন্তু আমরা যদি সেই প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত না থাকি। তাহলে সেই বিষয়গুলো কেন আসবে’।
বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের ঘাঁতি আছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘সেটা আমাদের ঠিক করতে হবে। আবার যদি আমরা মনে করি যে শুধু সরকার যেটা দেবে, সেটাকেই পাস করে দেওয়া, তাহলেতো আমাদের বাজেট অধিবেশনের প্রয়োজন নাই’।
এই প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলের ভূমিকা রাখার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আরেকটা ভূমিকা এখানে রাখতে পারে রাজনৈতিক দল। আমাদের সরকারি দল বা মুখপাত্র বাজেটের সাথে সাথেই বলে দেন যে বাজেটটা ভালো, এখানে সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন আছে’। খবর বিডিনিউজের
তারাও যদি এই বাজেট আলোচনার অংশ না থাকেন তাহলে আসলে জবাবদিহির জায়গাটা কিভাবে তৈরি হবে, জানতে চান তিনি। তিনি বলেন, ‘আরেকটা হচ্ছে বাজেটটা যখন সংসদে উপস্থাপন করা হয়, তারপরে কিন্তু আমি আর পরিবর্তন দেখি না। হয়তো আমাদের দুয়েকজন সংসদ সদস্যদের কিছু বিষয় বলা হয়, সেটা ওনারা সেটা উত্থাপন করেন। পরে সেগুলোকে মেনে নেওয়া হয়। কিন্তু মৌলিক যে কাঠামোর কোনো পরিবর্তন করা হয় না’।
তারমতে- এই প্রক্রিয়ায় বাজেটের গুণগত মান পরিবর্তনে সাংসদ বা সংসদ তেমন একটা কিছু করতে পারছে না। খবর বিডিনিউজের