বাজার নিয়ন্ত্রণ: সরকার কতটা কঠোর?

7

গত কয়েক বছর ধরে লক্ষ করা যাচ্ছে, রমজান শুরুর মাসখানেক আগে থেকেই বাজারে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। রমজান শুরুর প্রাক্কালে প্রতি বছরের মতো এবারও বাজারে পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট গত দুমাসে ধাপে ধাপে এসব পণ্যের দাম বাড়িয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। স¤প্রতি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘পবিত্র রমজান মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বক্তারা বলেছেন, বর্তমানে দেশে নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন তদারকি সংস্থা সক্রিয় রয়েছে। তাই পণ্যের দাম বৃদ্ধির শঙ্কা নেই। উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও এ ওয়েবিনারে অংশ নিয়েছিলেন। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে সুযোগ নিতে না পারে, এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে তৎপর হওয়ার আহŸান জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া স¤প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেছেন, রমজানে অহেতুক মূল্য বৃদ্ধি ও মজুতদারি নিয়ন্ত্রণে সরকার সতর্ক রয়েছে। তিনি যথার্থই বলেছেন, রমজান এলেই একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমরা প্রতি বছর রমজানের আগে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখার ব্যাপারে নানারকম স্বস্তিদায়ক বক্তব্য ও আশ্বাস শুনতে পাই। তবে অভিজ্ঞতা বলে, শেষ পর্যন্ত বাজারের নিয়ন্ত্রণ চলে চায় দুষ্টচক্রের কব্জায়। অবশ্য এক্ষেত্রে ভোক্তারাও দায়মুক্ত নন। রোজা শুরুর আগে অনেকেই বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়ায় বিক্রেতারা এর সুযোগ নেয়।
তাছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নানা কৌশলে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করে তোলে। এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে মনে করি আমরা। বস্তুত, সারা দেশে অসাধু ব্যবসায়ীদের এক অদৃশ্য অথচ শক্তিশালী চক্র গড়ে উঠেছে। এ চক্রের শক্তির উৎস খুঁজে বের করে তা ধ্বংস করতে হবে।
বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি হলে বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। আসন্ন রমজানে সব ধরনের পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারের পাশাপাশি দেশের ব্যবসায়ীরাও আন্তরিক হবেন, এটাই প্রত্যাশা।