বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়েছে বিশ্বে অবস্থান ১৩তম

50

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) প্রকাশ করা দুর্নীতির ধারণা সূচকে চার ধাপ অবনতি হয়েছে বাংলাদেশের। এর মানে হলো, বাংলাদেশে দুর্নীতি আগের চেয়ে বেড়েছে। সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ১৩তম অবস্থানে উঠেছে বাংলাদেশ। যার স্কোর ২৬। ২০১৮ সালে প্রকাশিত তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৭তম। স্কোর ছিল ২৮। তার আগের বছর (২০১৬ সালে) অবস্থান ছিল ১৫তম।
জার্মানির বার্লিনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান টিআইয়ের প্রকাশ করা দুর্নীতির ধারণাসূচক ২০১৮-এর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ তথ্য তুলে ধরেন।
১৮০টি দেশের ওপর টিআই এই জরিপ চালিয়েছে। জরিপে ০ থেকে ১০০ নম্বরের স্কেলে দেশগুলোকে নম্বর দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে কম নম্বর (১০ স্কোর) পেয়ে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হয়েছে সোমালিয়া। তার পরেই রয়েছে (১৩ স্কোর) সিরিয়া ও দক্ষিণ সুদান। তৃতীয় অবস্থানে (১৪ স্কোর) রয়েছে ইয়েমেন ও উত্তর কোরিয়া। ১৮০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯ নম্বরে। এর আগে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ছিল ১৪৩ নম্বর অবস্থানে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
আর সবচেয়ে বেশি (৮৮ স্কোর) পেয়ে সবেচয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ বিবেচিত হয়েছে ডেনমার্ক। কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে এরপরেই রয়েছে (৮৭ স্কোর) নিউজিল্যান্ড। তৃতীয় অবস্থানে (৮৫ স্কোর) রয়েছে ফিনল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড।
বাংলাদেশের সঙ্গে একইরকমভাবে ২৬ স্কোর পেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে ১৩ নম্বর অবস্থানে রয়েছে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক ও উগান্ডা।
এদিকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ আফগানিস্তান (১৬ স্কোর)। আর সবচেয়ে কম দুর্নীতি ভুটান (৬৮)। এই এলাকায় দুর্নীতির দিক থেকে আফগানিস্তানের পরই রয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের স্কোর ৪১, তালিকায় অবস্থান ৭৮। পাকিস্তানের স্কোর ৩৩, তালিকায় অবস্থান ১১৭ নম্বরে।
টিআই’র মতে যে কারণে বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়েছে : বাংলাদেশে দুর্নীতি বাড়ার কারণ হিসেবে কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ চিহ্নিত করেছে টিআই।
জার্মানির বার্লিনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান টিআইয়ের প্রকাশ করা দুর্নীতির ধারণাসূচক ২০১৮-এর প্রতিবেদনে এই কারণগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। সম্ভাব্য কারণগুলো হচ্ছে- দুর্নীতির বিরুদ্ধে অঙ্গীকারের সঙ্গে বাস্তবায়নের মিল না থাকা, হাইপ্রোফাইলদের দুর্নীতি চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় না আনা, সরকার ও রাজনৈতিক দল এক হয়ে যাওয়ায় স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি হওয়া, আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতে ঋণ খেলাপি ও জালিয়াতি বৃদ্ধি, ভূমি-নদী-খালবিল দখল, টেন্ডার ও নিয়োগে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ না কমা, অবৈধ অর্থের লেনদেন বন্ধ না হওয়া, দুর্বল জবাবদিহিতা, দুদকের কার্যকারিতা ও স্বাধীনতার অভাব, অস্বীকারের সংস্কৃতি, দায়মুক্তি ও দুর্বল আইনের শাসন, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের ক্ষেত্র সংকুচিত করা।