বাংলাদেশিদের ভাগ্যে এবারও হজ নেই

24

সৌদি আরব ঘোষণা করেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে চলতি বছর শুধু সৌদি আরবে অবস্থানরত মুসলিমরাই হজ পালনের সুযোগ পাবেন, ফলে দেশটির বাইরে থেকে কেউ সেখানে গিয়ে এবার হজ পালনের সুযোগ পাবে না। দেশটির হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত মন্ত্রণালয় বলছে, এবার সর্বোচ্চ ৬০ হাজার ব্যক্তিকে তারা হজ পালনের অনুমতি দেবে এবং তাদের বয়স অবশ্যই ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে। একই সাথে হজ পালনের জন্য টিকা গ্রহণকে বাধ্যতামূলক ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হজ) মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বলেছেন, সৌদি সরকার তাদের সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে যে এবার বহির্বিশ্ব থেকে কাউকে তারা হজ পালনের অনুমতি দেবে না, ফলে বাংলাদেশ থেকেও এবার কেউ হজে যেতে পারছেন না।
আমাদের দিক থেকে চেষ্টা ছিলো। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে সৌদি আরব সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং আমাদের সেটি গ্রহণ করতে হবে। গত বছর যারা রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন এবার তারা অগ্রাধিকার পেতেন। তেমন পরিকল্পনাই ছিলো আমাদের।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু হজে যাওয়া হচ্ছে না তাই কেউ চাইলে তার জমা টাকা যে কোন সময় তুলে নিতে পারবেন। খবর বিবিসি বাংলার।
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারির কারণে গতবছরই সৌদি সরকার সব মুসলিম দেশ থেকে হজযাত্রা নিষেধ করেছিল।
গত বছর মাত্র ১০০০ ব্যক্তি হজ পালনের সুযোগ পেয়েছিলেন। অথচ স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর প্রায় বিশ লাখ মুসলিম হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে সমবেত হতো। এবার হজ পালনের বিষয়ে ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হবে বলে আশা করেছিলেন অনেকে। কিন্তু হঠাৎ করেই করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সৌদি আরবেও নানা ধরণের বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে গতবছর ৬১ হাজার মানুষের নিবন্ধন রয়েছে। তাই এই বছর নিবন্ধন বন্ধ রেখেছে সরকার। কোটা অনুযায়ী স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এক লক্ষ ৩৭ হাজার বাংলাদেশি হজে যেতে পারার কথা।
হজ কোটা কিভাবে নির্ধারিত হয়? : হজের জন্য সৌদি আরবকে বিশাল আয়োজন করতে হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন বা ওআইসি’র একটি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হজের এই কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। ওআইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি দশ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ১০০০ জন হজে যেতে পারবে।
বাংলাদেশ থেকে হজে যাবার প্রক্রিয়া কী? : বাংলাদেশের বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী হজে যেতে আগ্রহীদের অনলাইনে প্রাক-নিবন্ধন করতে হয়। এই নিবন্ধন সারা বছরই চলে। হজ পালনের কয়েকমাস আগে সরকারের তরফ থেকে চূড়ান্ত নিবন্ধনের আহব্বান জানানো হয়। সেক্ষেত্রে যারা আগে প্রাক নিবন্ধন করেন, তালিকায় ক্রমানুসারে তারাই চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে পারেন। চূড়ান্ত নিবন্ধনের জন্য সরকার সময় নির্ধারণ করে দেয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কেউ যদি নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তালিকা থেকে ক্রমানুসারে অন্যদের সুযোগ দেয়া হয় বলে বলছেন কর্মকর্তারা।
যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে কেউ যদি হজ পালন করতে ইচ্ছুক হয়, তাহলে প্রায় দুই বছর আগে থেকে প্রক্রিয়া শুরু করতে হয়।