বাংলাদেশকে ৬ কোটি ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র

48

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কল্যাণে ব্যয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৬ কোটি ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি তাদেরকে আশ্রয় দেওয়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্যও সহায়তার আহব্বান জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছাপ্রসূত, স্থায়ী, নিরাপদ ও সুরক্ষিত প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিতের আহব্বান জানানো হয়েছে মিয়ানমারের প্রতি।
যুক্তরাষ্ট্রের এই অনুদানের সিদ্ধান্ত এলো জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা এবং ‘ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশনের’ পক্ষ থেকে ৯২ কোটি ডলারের তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণার প্রেক্ষিতে। ‘৯ লাখেরও বেশি’ রোহিঙ্গা ও তাদের আশ্রয় দেওয়া স্থানীয় বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে সহায়তা প্রয়োজন এমন ‘তিন লাখ ৩০ হাজার’ মানুষের প্রয়োজন পূরণের জন্য এই তহবিল সংগ্রহ করা হবে।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের ২০১৯ সালের ‘জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান ফর বাংলাদেশের’ অংশ হিসেবে মার্কিন সহায়তা প্রদানের ঘোষণাটি দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবার্ট পালাদিনো এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৯ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা ও তাদের আশ্রয় দেওয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের জরুরি প্রয়োজন পূরণে এই অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে। তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি অব্যাহত রাখারও প্রতিশ্রুতি দেন। যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সবচেয়ে বড় অর্থ সহায়তাকারী। দেশটির অনুদানের পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি ডলার।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জেনেভাতে জাতিসংঘের যে যৌথ কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে তার লক্ষ্য জাতিসংঘের ১৩২টি সংশ্লিষ্ট সংস্থা, স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেওয়া। ২০১৮ সালের যৌথ কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১২ মাস ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তা করা হয়েছে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। এমন বাস্তবতায় নিধনযজ্ঞের বলি হয়ে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। আগে থেকে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় দশ লাখে। এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে বসবাস করছে।