বাঁশের ভেলার নিচে সেগুন কাঠের টুকরো

29

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি

বন বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জোগসাজশে অভিনব কায়দায় বনের মূল্যবান গাছ পাচারে সক্রিয় রয়েছে কাঠ পাচারকারী চক্র। তারা কর্ণফুলী নদী ও সড়ক পথে প্রতি রাতেই মূল্যবান সেগুন কাঠ পাচার করছে। মূলত বনকর্মীদের ঘুষ দিয়ে তারা এই অপরাধ করে আসছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। কাঠ পাচারকারী চক্রগুলো রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান উপজেলার ২ শতাধিক অবৈধ ব্রিক ফিল্ডের লাকড়িও পাচার করছে বলে জানা গেছে। সড়ক ও কর্ণফুলী নদী পথ দিয়ে পাচার করা হচ্ছে মূল্যবান সেগুন, গামারিসহ নানাপ্রজাতির গাছ। সংরক্ষিত বনের এই গাছ রক্ষায় যারা নিয়োজিত তাদের অনেকেই যুক্ত এই চক্রের সাথে। জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন কাপ্তাই’র চিৎমরম, ডলুছড়ি ও রাম পাহাড়, সিতা পাহাড়সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে কর্ণফুলী নদী ও সড়ক পথে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা মূল্যের সেগুন ও গামারী কাঠ পাচার হয়েছে গত ১ সপ্তাহে। এ ক্ষেত্রে কর্ণফুলী নদী পথের রাম পাহাড় বিট ও বড়ইছড়ি চেক স্টেশনের কতিপয় বন কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশ রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানায়।
চোরাইকাঠ পাচারকারী চক্রের অন্যতম শাহ আলম জানান, প্রতি রাতে কর্ণফুলী নদী পথে বাঁশের ভেলার নিচে সেগুন গাছের রদ্দা বেঁধে নদীতে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রশাসনের নজরদারি যেন তখন হালকা করে সে জন্য রদ্দা হিসেবে ঘুষ দিয়ে এই কাজটি করা হয়। তিনি বলেন, গত ১ মাসে ব্যাপকভাবে কাঠ পাচার হয়েছে। আবার চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক পথেও ট্রাকে-জীপে করে সেগুন গাছের রদ্দা পাচার করছে অর্ধশতাধিক কাঠ পাচারকারী চক্র।
সূত্র জানায়, গত ৫-৬ মাস আগেও বিজিবি যেভাবে অভিযান চালিয়ে কাঠ আটক করেছে, সেই অভিযানে শিথিলতা আসায় সুযোগ নিচ্ছে চক্রগুলো।
বন বিভাগের বড়ইছড়ি চেক স্টেশন অফিসার ওমর আলী জানান, আমরা চোরাই কাঠ পাচার বন্ধে সজাগ রয়েছি। আমার জানা মতে এ সড়ক দিয়ে কাঠ পাচার হয়না। রাম পাহাড় বিট কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমদুল হক মুরাদ জানান, আমরা প্রায় সময় অবৈধ কাঠ জব্দ করে আসছি। আমাদের অভিযান আরো জোরদার করছি। কাঠ পাচারকারীদের সাথে কোনো আপোষ নেই। বন বিভাগের কেউ এতে জড়িত নেই। রাঙামাটি দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা শোয়েব খান জানান, আমি বিষয়টি শুনেছি। বন কর্মকর্তাদের কাঠ পাচার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।