বাঁশখালী পৌরসভা ও চাম্বল ইউপিতে দুদকের অভিযান

138

বাঁশখালী পৌরসভায় ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়ম, চাম্বল ইউপিতে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ ও চেয়ারম্যানের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বিকালে দুদকের একটি টিম বাঁশখালী পৌরসভা কার্যালয় ও চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদে এ অভিযান চালায়। পৌরসভায় অভিযানে অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা মিললেও চাম্বলের দুটি অভিযোগ অধিকতর তদন্ত করার কথা জানিয়েছে দুদক।
গতকাল বিকালে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক ও টিম লিডার হুমায়ুন কবীরের নেতৃত্বে সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাশ ও উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন অভিযান পরিচালনা করেন।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক হুমায়ুন কবীর পূর্বদেশকে বলেন, ‘বাঁশখালী পৌরসভা কার্যালয়ে ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়ম এবং চাম্বলে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ, নিবন্ধণ ফি সরকারি কোষাগারে জমা না দেয়া ও চেয়ারম্যানের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ছিল। পৌরসভায় নির্ধারিত সময়ে ভিজিএফের চাল বিতরণ না করে গোডাউনে ফেলে রাখা হয়। এছাড়া নিবন্ধনের কিছু টাকা জমা না দিয়ে রেখে দেয়া হয়। মোটামুটি পৌরসভায় অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। চাম্বল ইউপির উদ্যোক্তা নিজেই জন্ম নিবন্ধনের ফি আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রমাণ হয়েছে। এছাড়া চাম্বলের বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ ও চেয়ারম্যানের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ইউনিয়নে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ ও চেয়ারম্যানের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করা হবে।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল বিকালে পৌরসভা কার্যালয় গিয়ে কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। তদন্ত চলাকালীন সময়ে বাঁশখালী পৌরসভার একটি লোহার আলমারির বক্স খুলে ফেলে। এ সময় পৌরসভায় উপস্থিত হয়ে মেয়র বিরোধী হিসেবে পরিচিত কাউন্সিলর মোহাম্মদ নজরুল কবির সিকদার, দিলীপ চক্রবর্ত্তী, দেলোয়ার হোসেন দুদক কর্মকর্তাদের মেয়রের দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরেন। অভিযানকালে কার্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন বাঁশখালী পৌরসভার মেয়র শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী।
অন্যদিকে চাম্বলে জন্ম নিবন্ধন ফি জমা না দিয়ে তিন লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন ইউনিয়ন উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে দুদক। একইসাথে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ ও চেয়ারম্যানের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। এসব কাগজ পেলেই আবারো বিস্তারিত অনুসন্ধানে নামবে দুদক।
পৌরসভায় অভিযানকালে উপস্থিত থাকা কাউন্সিলর দিলীপ চক্রবর্ত্তী পূর্বদেশকে বলেন, পৌরসভায় ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে দুদকের টিম আসে। গরীব-দুস্থদের মাঝে ঈদে বিতরণ না করা ৯৫ বস্তা চাল গোডাউন রাখা দেখে হতবাক হয় দুদক। তারা জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণ না করা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। দুদক আমার কাছে জিজ্ঞাসা করে আমার ওয়ার্ডে জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়েছে কিনা। আমাকে পৌরসভায় সম্মানি না দেয়াসহ পৌরসভার কার্যক্রম থেকে মেয়র ইচ্ছেকৃতভাবে দূরে রাখেন এবং পূজায় ব্যস্ত থাকায় এ চাল বিতরণ করা হয়নি বলে জানিয়েছি। পৌরসভার আলমিরায় কিছু টাকা পাওয়া গেছে। যা বিভিন্ন নিবন্ধনের ফি জমা না দিয়ে সেখানে রাখা হয়েছিল। আমরাও দুর্নীতিবাজ এই মেয়রের বিরুদ্ধে অনিয়মে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও দুদকে অভিযোগ দিয়েছি।