বাঁশখালীতে ৩ দিনে পানিতে ডুবে ৬ শিশুর মৃত্যু

5

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে পুকুর, নদী কিংবা ডোবায় ডুবে শিশুমৃত্যু বাড়ছে। অভিভাবকদের অসতর্কতার কারণে প্রতিদিনই কোন না কোন উপজেলায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। গত তিনদিনে শুধুমাত্র বাঁশখালীতেই পানিতে ডুবে মারা গেছে ছয় শিশু। এরমধ্যে গতকাল একদিনেই দুটি ঘটনায় পানিতে ডুবে মারা গেছেন তিন শিশু। এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ছয় শিশুর বয়স দুই থেকে আট বছর। জানা যায়, গত রবিবার বাঁশখালীর পশ্চিম পুকুরিয়া ইউনিয়নের তেচ্ছিপাড়ায় শঙ্খ নদীতে ডুবে আপন দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। বিকাল ৩টার দিকে পিতার সাথে কৃষিজমিতে কাজ করতে গিয়ে খেলার ফাঁকে নদীতে পড়ে যায় মো. সাজ্জাদ হোসেনের ছেলে মো. সাহেদ হোসেন (৮) ও মো. রাব্বি হোসেন (৭)। পরে দুইভাইকে পিতা নিজেই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গত সোমবার মিনজিরীতলা ৬নং ওয়ার্ডের মাহমুদুল ইসলামের তিন বছর বয়সী শিশু সন্তান আসিফুল ইসলাম পানিতে ডুবে মারা যায়। গতকাল উত্তর জলদী ৩নং ওয়ার্ডের নেয়াজর পাড়া এলাকায় মো. হামিদের দুই বছরের শিশু সন্তান হুজাইফা পানিতে ডুবে মারা যায়। একইদিনে কাথরিয়ার বাগমারা ২নং ওয়ার্ডের মগুনী বাড়ির মো. করিমের দুই কন্যা সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী লাইসা ও দুই বছর বয়সী জাইসা পানিতে ডুবে মারা যায়। কাথরিয়া ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আনচার বলেন, মা-বাবা বাড়ির পাশেই মেশিন থেকে ধান তোলার কাজ করছিল। এসময় হঠাৎ দুই মেয়ে পুকুরে নেমে পড়ে। চারপাশে খোঁজাখুঁজি করার পর দুই শিশুকে না পেয়ে পুকুরে গেলে সেখানে দুই শিশুর লাশ ভেসে ওঠে।
শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের উপর পরিবারের সদস্যদের নজরদারি কম থাকার কারণেই পুকুরে ডুবে শিশু মৃত্যু বেড়েছে। বিশেষ করে বাড়ির পাশে যেখানেই পুকুর আছে, সেখানে শিশুদের একা ছেড়ে দিয়ে অভিভাবকদের কাজে মনোনিবেশ করা উচিত নয়। শিশুদের প্রতি বাড়তি নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। প্রতিবছর ঈদের সময় শহর থেকে প্রচুর শিশু অভিভাবকদের সাথে বাড়িতে যায়। তারা সেখানে গিয়ে পানি দেখে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা উৎফুল্ল হয়। এই উৎফুল্লতা থেকেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের নজরদারি থাকলে পুকুরে ডুবে শিশুমৃত্যু কমবে।