বাঁশখালীতে বাস খাদে নিহত ১, আহত ৩০

47

বাঁশখালীর বাণীগ্রাম নয়াদিঘি এলাকায় যাত্রীবাহী একটি বাস প্রধান সড়ক থেকে ছিঁটকে খাদে পড়ে গেলে একজন নিহত ও কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গতকাল দুপুর পৌনে ১টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। মারা যাওয়া অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ চমেক হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনস্টেবল রিপন দাশ পূর্বদেশকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়। এরমধ্যে অজ্ঞাত একজনকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাকি তিনজনকে ২৮নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, আনোয়ারা পিএবি অন্তর্ভুক্ত সুমাইয়া এক্সপ্রেস নামক লোকাল গাড়িটি নিয়মিত চালকের পরিবর্তে চালাচ্ছিলেন বাইল্লা নামে এক বদলি চালক। গাড়িটি বাস টার্মিনাল থেকে ছাড়লেও নতুন ব্রিজ থেকেও অতিরিক্ত যাত্রী তোলে। গাড়িটির গন্তব্য ছিল বাঁশখালী উপজেলা সদর পর্যন্ত। গাড়িটি ১টা ৪০ মিনিটের দিকে বাণীগ্রাম নয়াহাট এলাকায় পৌঁছলে হঠাৎ খাদে পড়ে যায়। যাত্রীদের কান্না শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে গাড়িটি দ্রুত উল্টে যাওয়া অবস্থা থেকে তুলে এবং আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও চমেক হাসপাতালে দুইজন আহতকে নিয়ে যাওয়া বৈলগাঁও এলাকার ইমন দাশ পূর্বদেশকে বলেন, শহর থেকে জলদীর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া গাড়িটি হঠাৎ রাস্তার পাশে উল্টে যায়। আমি তখন একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম। এসময় যাত্রীদের কান্না শুনে স্থানীয় লোকজনসহ গাড়িটি তুলে আহত যাত্রীদের উদ্ধার করি। আমি নিজেই দুইজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। এরমধ্যে একজন মারা গেছেন বলে জানান ডাক্তার। তবে তার নাম জানা যায়নি। দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
সূত্র জানায়, বাঁশখালী ও চমেক হাসপাতালে মোট আটজন আহত যাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরমধ্যে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া একজন যাত্রী মারা যান। গত রাত ৯টা পর্যন্ত ওই যাত্রীর পরিচয় জানা যায়নি। দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া হয়েছে ছিদ্দিক আহমদ (৫০), আনসার (৪০) ও রুস্তমকে (৩২), বাঁশখালী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন আলমগীর (৩০), জহির (৬০) ও আক্তার হোসেন (৪০)।
বাঁশখালী হাসপাতালের চিকিৎসক সহকারী বোরহান উদ্দিন পূর্বদেশকে বলেন, হাসপাতালে আহত চারজন চিকিৎসা নিলেও তাদের আঘাত গুরুতর নয়। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হলেও এক্সরে করতে গিয়ে তিনি আর হাসপাতালে আসেননি। দুর্ঘটনায় আহত বাকিরা আনোয়ারা ও চমেক হাসপাতালে চলে গেছে বলে শুনেছি।
গাড়ি মালিক সমিতি সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম-বাঁশখালী পিএবি সড়কে স্পেশাল ও সুপার সার্ভিস ছাড়াও লোকাল সার্ভিসের কিছু গাড়ি চলাচল করে। লোকাল সার্ভিসের অধিকাংশ গাড়ির মালিক আনোয়ারার। এ রুটে আনোয়ারার ২০টির মতো গাড়ি চলাচল করে। ফিটনেসবিহনী গাড়িগুলো তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু এলাকায় পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে চলাচল করে।
পুঁইছড়ি এলাকার বাসিন্দা রিয়াজ উদ্দিন পূর্বদেশকে বলেন, বাঁশখালী রুটে চলাচলকারী গাড়িগুলোর অধিকাংশরই ফিটনেস নেই। কবে কখন গাড়িগুলো ফিটনেস সার্টিফিকেট নিয়েছে কেউ জানে না। শুধুমাত্র রঙ করেই নতুনত্ব নিয়ে গাড়িগুলো চলাচল করে। বেশিরভাগ গাড়ির চালক অদক্ষ।