বর্তমান সরকার বিশ্বাস করে ধর্ম যার যার উৎসব সবার

147

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেছেন, বর্তমান সরকার বিশ্বাস করে ধর্ম যার যার উৎসব সবার। হিংসা-বিদ্বেষ দেশ ও জাতির ক্ষতি করে। ধর্ম মানুষকে উন্নত করে। আড়াই হাজার বছর পূর্বে সিদ্ধার্থ গৌতম তাঁর এ উপলব্দি মানুষের মাঝে প্রচার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন হিংসার মাধ্যমে হিংসাকে জয় করা যায় না। মৈত্রী দ্বারাই হিংসাকে জয় করতে হয়। তিনি বলেন, হিংসাকে জয় করতে প্রয়োজন, ক্ষমা, মৈত্রী, ভালবাসা। মৈত্রীর অনন্ত গুণ, অহিংসার অনন্ত গুণ। এই গুণ দিয়ে নিজেকে নয় সারা নিখিল বিশ্বকে জয় করা সম্ভব। গত ৮ মার্চ মিরসরাই উপজেলার হাইতকান্দিস্থ দমদমা নবাবপুর ধর্মকীর্তি বৌদ্ধ বিহারে আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আরো বলেন, হাজার বছর ধরে এদেশের মানুষ মিলেমিশে নিজ নিজ ধর্ম পালনের পাশাপাশি অন্যের ধর্মের প্রতি যে শ্রদ্ধা ও সম্প্রীত প্রদর্শন করে আসছে তা আমাদের অহংকার। প্রাচীনকাল থেকে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের এ জাতীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজে শান্তি এবং অহিংসার বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে আমাদের কৃষ্টি, সভ্যতা, সংস্কৃতি ও সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডে ঐতিহ্যবাহী অবদান রেখে আসছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষন দেন অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির সভাপতি ড. জ্ঞানরত্ন মহাথেরো, আশীর্বাদক কুমিল্লা কণকস্তপ বিহার অধ্যক্ষ ধর্মরক্ষিত মহাথেরো।
আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ মহাসম্মেলন উদযাপন পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী কৃষিবিদ পুষ্পেন্দু বড়ুয়ার সার্বিক তত্বাবধানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আরএফএল গ্রুপ সিওও কামরুল হাসান, সিঙ্গাপুরের টনি লিও, রেইনবো পেইন্টের ডিজিএম সাজ্জাদুল আলম, শ্রীলঙ্কার হারাস্কারে নাগিতা থেরো, আমেরিকার ফরা বিজিতা ধাম্মাপানি, মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান আলহাজ¦ জসিম উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। জয়ন্তী নায়কের অভিব্যক্তি করেন দমদমা-নবাবপুর ধর্মকীর্তি বৌদ্ধ বিহার অধ্যক্ষ বিশ্বনাগরিক ড. ধর্মকীর্তি মহাথেরো। মহাথেরো অভিধাপ্রাপ্ত ভিক্ষুর অভিব্যক্তি মালয়েশিয়ার বিলাসা মহাথেরো, নব-উপসম্পদাপ্রাপ্ত ভিক্ষুর অভিব্যক্তি দমদমা-নবাবপুর ধর্মকীর্তি বৌদ্ধ বিহারের বোধিরত্ন ভিক্ষু। সম্পাদকীয় প্রতিবেদন উত্থাপন করবেন অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির মহাসচিব ডা. অসীম রঞ্জন বড়ুয়া। এছাড়া কর্মসূচীর মধ্যে ছিল আকাশ প্রদীপ উত্তোলন, আতশবাজি প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
ধর্মকীর্তি ইন্টারন্যাশনাল পিচ্ এন্ড প্রগেস সোসাইটির উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এই সম্মেলনে নবনির্মত দমদমা-নবাবপুর বৌদ্ধবিহারের দারোৎঘাটন বুদ্বধমূর্তি প্রতিষ্ঠা, বিহারের অধ্যক্ষ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বৌদ্ধ পন্ডিত বিশ্বনাগরিক ড. ধর্মকীর্তি মহাথেরো ৫০ বছর পূর্তিতে সুবর্ণ জয়ন্তী, মালেশিয়ার বিদর্শন সাধক ভদন্ত বিলাসা থেরো মহাথেরো বরণ, উদীয়মান কর্মযোগী বোধিরত্ন শ্রমণের শুভ উপসম্পদা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, মালেশিয়া, ভারত, সিঙ্গাপুর, চীন, জাপান, অষ্ট্রেলিয়া, আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উচ্চ পর্যায়ের ভিক্ষুসংঘসহ দেশী-বিদেশী ৫শ’ ভিক্ষুসংঘ অংশগ্রহণ করেন।
এরআগে শুক্রবার সকালে প্রথমপর্বের অনুষ্ঠানে আশীর্বাদক ছিলেন রাউজান বিমলানন্দ বিহার অধ্যক্ষ উপ-সংঘরাজ শীলানন্দ মহাথেরো। প্রধান অতিথি ছিলেন সিঙ্গাপুর মহাকরুনা বুড্ডিস্ট সোসাইটির ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ভেন. ড. কে. গুণারাতানা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা কণকস্তপ বিহার অধ্যক্ষ ধর্মরক্ষিত মহাথেরো, খাগড়াছড়ি বুদ্ধ শাসন কল্যাণ পরিষদের মহাসচিব সুরিয়ান্তা মহাথেরো, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া ভিক্ষু সমিতির সভাপতি বিমুক্তিবারিধি রত্নপ্রিয় মহাথেরো, রাঙ্গামাটি রাজবন বিহার অধ্যক্ষ প্রজ্ঞালংকার মহাথেরো, ভারতীয় ভিক্ষু মহাসভার উপ-সংঘরাজ ধর্মরত্ন মহাথেরো, ঢাকা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার অধ্যক্ষ ধর্মমিত্র মহাথেরো, ফটিকছড়ি উত্তর ছিলোনিয়া জ্ঞানরত্ন বিহার অধ্যক্ষ প্রজ্ঞালোক মহাথেরো, মধ্যম বিনাজুরী মিলনারাম বিহার অধ্যক্ষ বিনয়পাল মহাথেরো, চট্টগ্রাম ইপিজেড বৌদ্ধ বিহারের অধ্যাপক জ্ঞানরত্ন মহাথেরো, হালিশহর নৈরঞ্জনা বৌদ্ধ বিহারের জ্ঞানরত্ন মহাথেরো। প্রধান সদ্ধর্মদেশক পটিয়া কেন্দ্রীয় বিহার অধ্যক্ষ ড. সংঘপ্রিয় থেরো।
সদ্ধর্মদেশক মোগলটুলী শ্মশ্মানভূমি শাক্যমুণি বুদ্ধ বিহার অধ্যক্ষ তিলোকাবংশ মহাথেরো, ভারত বুড্ডিস্ট ওয়েলফেয়ার মিশন প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আর্য্যপাল থেরো।