বরখাস্ত হলেন সেই ‘শিক্ষক স্বামী’

4

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষক স্ত্রীর দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলার জের ধরে চাকরিতে সাময়িক বরখাস্ত হলেন শিক্ষক স্বামী। বরখাস্ত হওয়া ওই শিক্ষকের নাম আবদুল করিম। গত সোমবার চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহীদুল ইসলাম তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে অফিস আদেশ জারি করেন। আসামি করিমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় গত ১০ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হওয়ার পর সাময়িক বরখাস্তের এই নির্দেশ এসেছে। এই বিষয়ে মো. শহীদুল ইসলাম সাময়িক বরখাস্তের অফিস আদেশে জানান, শিক্ষক আবদুর রহিমের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী কুমকুমের দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার পর সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর ৩৯(২) ধারায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হল।
তথ্যমতে, করিম-কুমকুম দম্পতি দুজনই আনোয়ারা থানা এলাকার দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। করিম পূর্ব বারখাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন বরখাস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত। আর কুমকুম আকতার শোলকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। সংসার জীবনে তাদের নয় বছরের ফুটফুটে একটি সন্তানও রয়েছে। বর্তমানে যৌতুকের জন্য কুমকুমকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিচারের মুখোমুখি আবদুল করিম। দুজনের পথ এখন দুদিকে ছিটকে গেছে। সংসার হয়ে গেছে তছনছ।
এই বিষয়ে কুমকুম জানান, করিম আরেকটি বিয়ে করেছেন। কুমকুমের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় আবদুল করিমের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আদালতে অভিযোগ গঠন করে বিচারকাজ চলছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ। এই ধরনের আরো মামলা আছে আবদুল করিমের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও এতদিন কোনো প্রতিকার পাচ্ছিলেন না কুমকুম। শেষতক সোমবার চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দেয়া উল্লেখিত আদেশে ন্যায় বিচার পাওয়ার পথ সুগম হয়েছে বলেও জানান এই শিক্ষিকা।
বাদীনীর দায়ের করা মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ২০০৭ সালে তার সাথে করিমের বিয়ে হয়। ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টায় আনোয়ারা এলাকাস্থ আসামিদের বসতঘরে যৌতুকের জন্য বাদীনিকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এই ঘটনায় কুমকুম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে আবদুল করিমসহ ৬ জনকে। সবাই করিমের পরিবারেরই সদস্য। ঘটনার সত্যতা পেয়ে আবদুল করিম, তার মা সালমা বেগম ও ভাই আবদুল হাকিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালতের বিচারক। একই সাথে তিনজনকে জামিনের আদেশ দেন। এর মধ্যে আবদুল করিমের অস্থায়ী জামিনের আদেশ হয়েছিল।