বন্ধ হোক নারীর প্রতি সহিংসতা

7

 

মিছিল, সমাবেশ, মানববন্ধনসহ নানা আয়োজন উৎসবের মধ্য দিয়ে ২৫ নভেম্বর উদযাপিত হল আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। সাধারণত, ১৯৮১ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এবং ১৯৯৭ সাল থেকে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাপী নারীর প্রতি সকল বৈষম্য এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জানান দিতে প্রতি বছর এই দিনে পৃথিবীর প্রায় সব দেশে দিবসটি উদযাপিত হয়ে থাকে। একইসাথে প্রতিবছর ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষও পালিত হয়ে থাকে।
কিন্ত, সেই আদি থেকে নারীর প্রতি যে নির্মম, নিষ্ঠুর বৈষম্য তার তেমন একটা পরিবর্তন লক্ষ্যণীয় নয়। বরং,নারীর প্রতি নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। যৌতুকের বলি হয়ে স্বামীর হাতে খুন, তুচ্ছ কারণে স্বামীর হাতে চোখ নষ্ট,কথায় কথায় তালাক,গণ পরিবহনে নিপীড়ন,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা চাকুরীর ক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্য আজও ব্যাপকভাবে লক্ষ্যণীয়। এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, এই কঠিন বাস্তবতার ফাঁদে ৯৭ শতাংশ নারী-ই ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়। আর,আদালত যখন সহিংসতার সাথে অভিযুক্তদের কঠোর হস্তে দমন না করে নিরব থাকে, তখন তা তাদেরকে সমর্থন করার মত হয়ে দাঁড়ায়। ফলে দিন দিন নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছেই। একশন এইড বাংলাদেশ এক সময় দেশের ২০ টি জেলায় সংগঠিত ২ হাজার ৮০০ টি নারী সহিংসতা ও সহিংসতার ফলাফল নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদনে দেখা যায় একটি পরিবারের পক্ষে টাকা খরচ ও সময় দিয়ে মামলা পরিচালনা করা কঠিন। তাইতো,শতকরা ৯০ ভাগ মামলাই আলোর মুখ দেখে না।
আবার দেখা যায় কর্মক্ষেত্র কিংবা বাহিরের অন্য কোথাও নয়, নিজ ঘরেই বেশীরভাগ নারী অনিরাপদ। তাই নারীদের ব্যাপারে পরিবার থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক অঙ্গন পর্যন্ত সর্বত্র আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষভাবে সব তদন্ত করে সহিংসতার অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে,অভিযুক্ত নিপীড়কের বিরুদ্ধে শাস্তির যে বিধান আছে তা কার্যকর করতে হবে। আর তখনই সার্থকতা আসবে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালনের।