‘বন্দিশিবির বানাতে ৫৪ কোটি টাকা দিয়েছেন মোদি’

29

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি দিল্লিতে এক সমাবেশে দাবি করেছেন তার দেশে কোনও বন্দিশিবির নেই। তবে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তার এমন দাবি খারিজ করে দিয়েছেন আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তিনি বলেন, মোদি একজন মিথ্যাবাদী। ২০১৮ সালে (তরুণ গগৈ মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে) আসামে বন্দিশিবির বানাতে তিনি ৪৬ কোটি রুপি দিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর দাম দাঁড়ায় ৫৪ কোটি ৭০ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৬ টাকা। তরুণ গগৈ বলেন, বিজেপি দলীয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলেই বিভিন্ন রাজ্যকে বন্দিশিবির বানাতে বলা হয়েছিল। মোদী ক্ষমতায় আসার পরে আসামে বন্দিশিবির বানাতে ৪৬ কোটি রুপি দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘বাজপেয়ী সরকারের আমলে প্রথম বন্দিশিবিরের কথা শোনা যায়। বলা হয়েছিল, যে বিদেশিরা অনুপ্রবেশের পর কারাগারে আছে, তাদের কারাবাসের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে আটকে রাখা হবে বন্দিশিবিরে। নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর বৃহত্তম বন্দিশিবির বানাতে ৪৬ কোটি রুপি দিয়েছিলেন। সেখানে তিন হাজার মানুষকে রাখার কথা হয়েছিল। এখন তিনি কীভাবে বলছেন যে, দেশে কোনও বন্দিশিবির নেই?’ তরুণ গগৈ ২০০১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আসামে কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তিনি জানান, তার আমলেই সেখানে বন্দিশিবির তৈরি করে বিজেপি সরকার। গুয়াহাটি হাইকোর্ট বলেছিল, যারা ঘোষিত বিদেশি, তাদের রাখার জন্য ডিটেনশন ক্যাম্প বানাতে হবে। তরুণ গগৈ বলেন, মোদি সরকার এখন ‘মুখরক্ষার জন্য’ বলছে, দেশে কোনও ডিটেনশন সেন্টার নেই। আসামের সাবেক এ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪ সালে মোদি যখন প্রধানমন্ত্রী হলেন, তিনি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে রাজ্যগুলোর সঙ্গে অনুপ্রবেশকারী বা ডিটেনশন সেন্টার নিয়ে আলোচনা করেননি। এমনকি বাংলাদেশের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেননি। এখন তিনি সবাইকে বোঝাতে চাইছেন, সরকার খুব উদার। আমরা কাউকে আটক করি না।’ তরুণ গগৈ বলেন, অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা বা তাদের আটকের ক্ষেত্রে কারও ধর্মীয় পরিচয় দেখা উচিত নয়। তার ভাষায়, ‘বাস্তবে ডিটেনশন ক্যাম্পে মুসলিমদের চেয়ে হিন্দুরাই বেশি আছেন। কে এই হিন্দুদের আটক করেছে? বিজেপিই করেছে।’ আসামের সাবেক এই মুখ্যমন্ত্রী চান, ডিটেনশন ক্যাম্পে বেশি কড়াকড়ি করা উচিত নয়। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, আটক হওয়া ব্যক্তিদের তিন বছর পর মুক্তি দিতে হবে। সুতরাং তার জন্য ব্যবস্থা করতে হবে।