বন্দরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ ভিড়েছে কৃতিত্ব চট্টগ্রাম বন্দরের

7

১৪ বছরে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৫

  • ২০২৬ সালের শুরু এবং শেষের দিকে বে-টার্মিনাল আর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর চালু হবে
  • পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের ৯৭ ভাগ কাজ শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃদপিÐ। এটি ¯েøাগান নয়; বাস্তবতা। চট্টগ্রাম বন্দর যখন থেমে যায় তখন বাংলাদেশ থেমে যায়। গত ১৪ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি। বন্ধ হয়নি বলে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। পদ্মা সেতু নির্মাণ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও মেট্রোরেল নির্মাণের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের ভূমিকা রয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৫তম। ২০০৮ সালে ছিল ৬০তম স্থানে। ১৪ বছরে ৩৫তম স্থানে উন্নয়নে বেশিরভাগ কৃতিত্বের অধিকারী চট্টগ্রাম বন্দর। গত ১৪ বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি-১ জেটিতে প্রথমবারের মতো ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজের বার্থিং এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের ৯৭ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে; দ্রæততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করা হবে। ২০২৪ সালে বে-টার্মিনাল চালু করার কথা থাকলেও করোনা মহামারি এবং বৈশ্বিক দুর্যোগ ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বহুবিধ সমস্যায় সম্ভব হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এক মুহূর্তের জন্য বসে নাই। আমাদের সক্ষমতা আছে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বে-টার্মিনালের বৃহৎ অংশ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল যেটি চট্টগ্রাম বন্দর করবে সেটির ডিটেইল প্লান তৈরি হচ্ছে। ২০২৫ সালের শেষে বা ২০২৬ সালের শুরুতে বে-টার্মিনালের বৃহৎ অংশ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল যেটি চট্টগ্রাম বন্দর করবে সেটি চালু করতে সক্ষম হব। মাতারবাড়ি বন্দর ২০২৬ সালের মাঝামাঝি অথবা শেষের দিকে চালু করতে পারব। তিনি বলেন, অনেকে বলেছেন-বাংলাদেশ শ্রীলংকার মতো হয়ে যাবে। তা হয়নি। কেন হলো না-এটা অনেকের মনে কষ্ট হচ্ছে। আগে বাংলাদেশ বাজেট তৈরির জন্য বিদেশিদের কাছে যেতো। এখন দাতাগোষ্ঠী আমাদের পিছনে হাঁটছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এখন আর আমরা তলাবিহীন ঝুড়ি নই; সেটি মিথ্যা প্রমাণিত। ২০৩০ সালে অর্থনৈতিক সূচকে ২৫-৩০ এর মধ্যে চলে যাব। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশের মাটি ও মানুষকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণ করেছি। বাংলাদেশ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়; আঞ্চলিক দেশগুলোর জন্য তৈরি হচ্ছে।
বৈদেশিক বিনিয়োগ অপেক্ষা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, সমগ্র পৃথিবীর বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসবে। এজন্য দরকার স্থিতিশীলতা। গত ১৪ বছরে স্থিতিশীলতা আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়। সেটি সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা যে উন্নয়ন করেছেন; দেশের মানুষকে যে সম্মান দিয়েছেন; সেখানে দেশের মানুষ শেখ হাসিনার বিকল্প অন্য কিছু ভাবছে না। আগামী নির্বাচনে আরো বেশি সমর্থন নিয়ে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করবে। কোনো বিদেশি চাপে পিছিয়ে যাবে না। দেশের মানুষকে নিয়ে এগিয়ে যাবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আরিফ এবং কর্ণফুলী রিভার স্টাডি কনসালটেন্ট এইচ আর ওয়ালিংফোর্ড এর বাংলাদেশের পার্টনার ইন্টারপোর্টের পরিচালক ড. মঞ্জুরুল হক।
প্রসঙ্গত, ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে বড় জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়লে জাহাজে কন্টেইনারের পরিমাণ বাড়বে ও কমবে পণ্য পরিবহন খরচ। ভোক্তা পর্যায়ে পণ্যের দাম কমে সুফল পাবে সাধারণ মানুষ।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দরের ভাÐার ভবন এলাকায় নবনির্মিত ‘চট্টগ্রাম বন্দর কেন্দ্রীয় ভাÐার’ উদ্বোধন করেন। ৭১ কাঠা জমির ওপর নির্মিত ভাÐারের মোট প্রজেক্ট এরিয়া ৫১ হাজার বর্গফুট।