বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতা, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তি

10

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আমাদের স্বপ্নের প্রতিদিন। এদিনই বাংলাদেশ নিশ্চিত ও স্বাধীন। কারণ বঙ্গবন্ধু ডাক দেন- ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি বঙ্গবন্ধুর ডাকে। এখন চলছে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তির সংগ্রাম। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে গতকাল সোমবার নগরীর টিআইসি মিলনায়তনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন বলেন, অর্থনৈতিক মুক্তির লড়াই অন্ধকার মোচনের সূর্যালোক। এজন্য লড়তে হবে একসাথে। ৭ই মার্চ বাঙালি জাতিসত্তার জাগরণের ঐতিহাসিক দলিল। এই দিনটি জাতীয় দিবস পালনের সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্তে¡ও আমরা ঘরে ঘরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে পারিনি। এই ব্যর্থতাকে স্বীকার করে আগামীতে এই দিনটিকে সম্মান ও শ্রদ্ধায় অভিষিক্ত করতে দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ হতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ছিল মাটির গন্ধময় সাধারণ মানুষের বোধগম্য সঠিক নির্দেশনা। এতে কোন ধরণের পান্ডিত্য নেই, তবে কৌশল ও যুদ্ধের প্রস্তুতির ঈঙ্গিত দিয়ে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহব্বান সারা বিশ্বকে অবাক করে দেয়। তাই ভাষণটি বিশ্ব সভায় ১০টি শ্রেষ্ঠ ভাষণের অন্যতম। ৭ই মার্চ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অবিনাশী শক্তি। যেই শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আমরা বঙ্গবন্ধুর আহব্বানে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। আমরা হিম্মত রাখি যে কোন অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আমরা রাজপথে থেকে তাদেরকে মোকাবেলা করবো এবং দেশ থেকে তাদেরকে নির্মূল করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, হাসান মাহমুদ শমসের, শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, মশিউর রহমান চৌধুরী, মোহাম্মদ হোসেন, দিদারুল আলম চৌধুরী, আবদুল আহাদ, আবু তাহের, নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অমল মিত্র।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এড. সুনীল কুমার সরকার, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, উপদেষ্টা শফর আলী, শেখ মোহাম্মদ ইছহাক, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য যোবায়েরা নার্গিস খান, হাজী শহীদুল আলম, নির্বাহী সদস্য আবুল মনসুর, পেয়ার মোহাম্মদ, বিজয় কিষান, খালেদ বাহার, রোটারিয়ান মো. ইলিয়াস, সাইফুদ্দিন, হাজী বেলাল আহমেদ, মোরশেদ আকতার চৌধুরী, থানা আওয়ামী লীগের হাজী ছিদ্দিক আলম, ফিরোজ আহমেদ, শাহাবউদ্দিন আহমেদ, মো. আনসারুল হক, রেজাউল করিম কায়সার, মো. ইলিয়াস, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মো. শামসুল আলম, আবুল হাশেম বাবুল, আবছার উদ্দিন চৌধুরী, নুরুল আজিম নুরু, ইকবাল হাসান, আমিনুল হক রঞ্জু, নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট আইয়ুব খান, মো. ইস্কান্দর মিয়া, মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, আবু তৈয়ব ছিদ্দিকী, মো. ইয়াকুব, আবুল বশর, শেখ সোহরাওয়ার্দী, মিথুন বড়ুয়া, আবদুস শুক্কুর ফারুকী, মো. আলী নেওয়াজ, কায়সার মানিক, সরওয়ার মোর্শেদ কচি, নাজিম উল ইসলাম মজুমদার, হাবিবুর রহমান চৌধুরী, মো. জসিম উদ্দিন, মোহাম্মদ মুছা, গোলাম মো. যোবায়ের, আকবার আলী আকাশ, লুৎফুল হক খুশি, ইফতেখার আলম জাহেদ প্রমুখ।
দিবসটি পালন উপলক্ষে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ সম্প্রচার। সভার শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু জাতীয় চারনেতা এবং মহানমুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ: চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের উদ্যোগে গতকাল সোমবার জেলা পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম। সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল।
এম এ সালাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর অলিখিত এ মহাকাব্যিক ভাষণে বাঙালির মুক্তির মূলমন্ত্র অন্তর্নিহিত ছিল। কোন রাখঢাক না করেই সমসাময়িক রাজনৈতিক শাসকদের পরিস্থিতি উপস্থিত জনতার কাছে সরাসরি তুলে ধরে বাঙ্গালীর মুক্তির রূপরেখাই তিনি এ ভাষণের মাধ্যমে দিয়েছেন অত্যন্ত আবেগপূর্ণ কিন্তু সাবলীল ও আন্তরিক ভঙ্গিমায় যা মন্ত্রমুগ্ধ করে মুক্তিমংগ্রামের জন্য সর্বাঙ্গীনভাবে প্রস্তুত করে ফেলেছিল সমগ্র বাঙালি জাতিকে। পৃথিবীর অন্যান্য ঐতিহাসিক রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ভাষণকে ছাড়িয়ে অনন্য উচ্চতায় আসীন এ ভাষণ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সচিব মো. দিদারুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, সদস্য জাফর আহমেদ, আ ম ম দিলসাদ, মোহাম্মদ ইউনুছ, রেহেনা বেগেম ফেরদৌস চৌধুরী, এডভোকেট উম্মে হাবিবাসহ জেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ : চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ১৯ মিনিটের সেই অলিখিত জাতিকে দিক নির্দেশনা মূলক ভাষণটির মধ্য দিয়ে পুরো জাতি স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়েছিল। ৭ মার্চের সেই ভাষণের আবেদন আজো ফুরিয়ে যায়নি।
গতকাল সোমবার বিকেল ৩টায় নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ সংগঠন কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ পালন উপলক্ষে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ধারাবাহিক আন্দোলন ও লাখো শহীদের জীবন দানে এই বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ কোন শক্তির কাছে পদানত হবে না।
সভায় বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস, আইন সম্পাদক এড. মির্জা কছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এড. জহির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ, দপ্তর সম্পাদক আবু জাফর, প্রচার সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. তিমির বরণ চৌধুরী, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন, সদস্য ছিদ্দিক আহমদ বি.কম, দেবব্রত দাশ, হায়দার আলী রনি, এ কে আজাদ, মাহাবুবুর রহমান শিবলী প্রমুখ।

জেলা প্রশাসন: চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে গতকাল সোমবার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন। মূখ্য আলোচক ছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, সিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কতুমার নাথ, জেলা পুলিশ সুপার এস.এম রশিদুল হক, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল দুলু।
এসময় বক্তব্য রাখেন মহানগর সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ নূর আলম।
বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ হলো রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমর কাব্যমালার অনন্য নিদর্শন। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো ঐতিহাসিক এ ভাষণকে বৈশ্বিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় আর্ন্তজাতিক পরিমন্ডলেও এ ভাষণের তাৎপর্য ও গুরুত্ব অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।