বক্তব্যের জন্য ক্ষমা না চাইলে গুডস হিল ঘেরাও

72

চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীকে ‘শহীদ’ হিসেবে তুলে ধরে তার ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীর দেওয়া শ্লোগানের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্ত¡রে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা কমিটি আয়োজিত এ সমাবেশ থেকে হুম্মাম কাদেরের শ্লোগানকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ উল্লেখ করে তার বিচার দাবি করা হয় এবং আগামী সাত দিনের মধ্যে বিএনপিকে জাতির নিকট ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানান বীর মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির আহবায়ক সাহেদ মুরাদ সাকু’র সভাপতিত্বে এবং জেলার সদস্য সচিব মো. কামরুল হুদা পাভেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. মশিউর রহমান চৌধুরী, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের স্বাক্ষী কাজী নুরুল আবছার, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম.আর আজিম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি মো. সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি।
বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ বলেন, গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় নিজের বাবাকে ‘শহীদ’ উল্লেখ করে শ্লোগান তোলেন সাকা পুত্র হুম্মাম। আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধারা মনে করি এটা শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে অপমান। আমি একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ১৯৭২ সালে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী সাকা চৌধুরীর বিচার হলে হুম্মাম চৌধুরীর জন্ম হতো না। আজকে তার অঙ্গভঙ্গি রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। কাজেই তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করা উচিত। তিনি বিএনপিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানান। অন্যথায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধকালীন নির্যাতন কেন্দ্র গুডস হিল ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. মশিউর রহমান চৌধুরী বলেন, জিয়া ক্ষমতায় আসার পর থেকে স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতিতে এনেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসিয়েছে। পরবর্তীতে খালেদা জিয়াও একই কাজ করেছে। কিন্তু ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে এসে রাজাকারদের বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এসে আবার এ পথ বন্ধ করার নানা ফন্দি করেছে। তবুও বঙ্গবন্ধুকন্যা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শামীমা হারুন লুবনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে ক্ষতবিক্ষত করার জন্য যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার সাকা চৌধুরীর পুত্র হুঙ্কার দিয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, বঙ্গবন্ধুর ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সন্তানদের ঠাঁই হবে না। বক্তৃতারা দ্রæততম সময়ে রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। একই সাথে হুম্মামের বিরুদ্ধে আইনি মোতাবেক সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে হবে। সমাবেশে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল, সাবেক মন্ত্রী জহুর আহমেদ চৌধুরীর সন্তান সরফরাজ আহমেদ চৌধুরী রাজু, কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রুজি, চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাজিম উদ্দীন, সাবেক ছাত্র নেতা ইয়াসিন আরাফাত, সংগঠনের চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সজিব, মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, সদস্য সচিব কাজী মুহাম্মদ রাজিশ ইমরান, জেলার সদস্য তৌরাফ হোসেন রাফি, মহানগর সদস্য রিতাপ উদ্দিন বাবু, সৈয়দ মঈনুল আলম সৌরভ, জয়নাল আবেদীন, রিপন চৌধুরী, জয়নুদ্দিন জয়, এস এম ইশতিয়াক আহমেদ রুমি, শেখ ফরিদ মিঠু প্রমুখ। বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগরের সকল থানা কমান্ডার ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জামাল খান চত্ত্বরে এসে শেষ হয়। বিজ্ঞপ্তি