ফয়’স লেকে বিনোদনের নতুন অভিজ্ঞতা

18

নিজস্ব প্রতিবেদক

জিপ লাইন, কায়াকিং, আর্চারি, ক্রাইম্বিং ওয়াল, উড কেবিন, ট্রি টপ অ্যাক্টিভিটি, অন গ্রাউন্ড অ্যাক্টিভিটি, টিম বিল্ডিং গেম, হিউম্যান ফুসবলসহ চমকপ্রদ সব গেমিং এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে ফয়’স লেক বেসক্যাম্প। খোলা আকাশ, সবুজ পাহাড়, নীল জলের হ্রদ মিলে অপরূপ ফয়’স লেকে বেসক্যাম্পের যাত্রার মাধ্যমে দর্শণার্থীদের বিনোদনের অভিজ্ঞতা বদলে যাবে। আউটডোর একটিভিটির মাধ্যমে আরো আত্মবিশ্বাসী মনোভাব গড়ে উঠবে দর্শনার্থীদের।
গতকাল রবিবার দুপুরে ফয়’স লেক বেসক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা এমন মন্তব্য করেন।
বিনোদন আর বাস্তবধর্মী শিক্ষার জন্য এমন উদ্যোগ নেয়ার কথা জানানো হয়। বলা হয়, শিশু-কিশোরদের সুস্থ বিনোদন প্রদানের লক্ষ্যে কনকর্ড বাংলাদেশে প্রথম ২০০২ সালে বিশ্বমানের থিম পার্ক ফ্যান্টাসি কিংডম চালু করে। এরই ধারবাহিকতায় ওয়াটার কিংডম, এক্সট্রিম রেসিং ট্র্যাক, রিসোর্ট অ্যাটলান্টিস,বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নিয়ে তৈরি হেরিটেজ পার্ক, চট্টগ্রামে ফয়’স লেক কনকর্ড, সি ওয়ার্ল্ড ও ফয়’স লেক রিসোর্ট তৈরি করে।
অন্যদিকে বেসক্যাম্প এডভেঞ্চার লিমিডেট বাংলাদেশের একমাত্র এবং সর্বপ্রথম আউটডোর এক্টিভিটি এবং এডভেঞ্চার ক্যাম্প। বাংলাদেশের পর্যটন সেক্টরে আমূল পরিবর্তনের লক্ষ্যকে সামনে রেখে বেসক্যাম্প দীর্ঘ আট বছর ধরে কাজ করে আসছে।
বেসক্যাম্প অ্যাডভেঞ্চার লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাহবুব জামান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি প্রত্যেকের ভেতর ‘বাঘ’ লুকায়িত আছে। আমরা যুদ্ধ করেছি পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে। অমিত শক্তি সবার আছে। সব বয়সের মানুষকে আকর্ষণ করেছে ফ্যান্টাসি কিংডম। আমরা ট্যুরিজমে ভিন্নতা আনতে চাই। অ্যাক্টিভিটি দিতে চাই। ট্যুারিজমকে ছড়িয়ে দিতে চাই সারা দেশে। ফয়’স লেক বেসক্যাম্প নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে দেবে। চট্টগ্রাম উজ্জ্বল অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছে। যুবক কিশোরদের নতুন পথ দেখানো সম্ভব হবে। সমগ্র দেশকে নতুন আলো দিতে পারবে। সেলফ স্টিম দেবে। টিম বিল্ডিং করবে। আমরা মাত্র শুরু করেছি। অনেক দূর যেতে পারব আশা করি।
কনকর্ড গ্রুপের এমডি শাহরিয়ার কামাল বলেন, ১৯৭৩ সালে কনকর্ড যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে আমাদের ১৪টি কোম্পানি আছে। সাভারে স্মৃতিসৌধ করেছে কনকর্ড। বাংলাদেশের প্রথম রেডিমিক্স ইট কনকর্ড করে। পর্যটন সেবায় দেশের প্রথম থিমপার্ক করেছে। ২০০৪ সালে ফয়’স লেকের যাত্রা শুরু। আজ যৌথভাবে বেসক্যাম্পের যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি। এটি থাইল্যান্ড সিঙ্গাপুরের বেসক্যাম্পের চেয়ে কম হবে না।
কনকর্ড গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক অনুপ সরকার বলেন, ফয়’স লেকের দর্শকদের ভিন্নধর্মী বিনোদন দিতে বেসক্যাম্প। বিনোদনে নতুন মাত্রা যোগ করতে এ আয়োজন। এখন পর্যটন শিল্পের মূল আকর্ষণ অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম। বেসক্যাম্প বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ করবে। এখানে রাত্রি যাপনের সুযোগ থাকবে। শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশে যা যা থাকা দরকার, সব সুযোগ এখানে রাখা হয়েছে।
বেসক্যাম্প অ্যাডভেঞ্চার লিমিটেডের এমডি তামজীব সিদ্দিক স্পন্দন বলেন, মানুষ যত সভ্য হচ্ছে সে নিজেকে চিনতে চায়। আমাদের লোগোতে বাঘের মাথা আছে। আমরা মনে করি প্রত্যেকের ভেতর অমিত শক্তি আছে। আমরা চাই মানুষ তাঁবুতে থাকবে। নাইট সাফারি করবে। মানুষ যখন নিজের শক্তি সম্পর্কে জানতে পারে, তখন পৃথিবী বদলে দিতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা বেসক্যাম্পের জন্য একটি গাছও কাটিনি। যতটা কম ইট পাথর ব্যবহার করেছি। আমাদের সব গিয়ার, হ্যালমেট ফ্রান্স থেকে এনেছি। ফিজিক্যালি ফিট মানুষই বেসক্যাম্প অ্যাক্টিভিটি করতে পারবে। আমরা ট্রেইনার রেখেছি ভয় কাটিয়ে মানুষ যাতে অংশ নিতে পারে। গর্ভবতীরা অংশ নিতে পারবেন না। নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়া সিগারেট অ্যালাউ না।
মাউন্টেনিয়ার ডা. বাবর আলী বলেন, যা আছে বাংলাদেশে, তা আছে চট্টগ্রামে। নদী, ঝর্না, পাহাড়, লেক আছে এখানে। আমার শহরে বেসক্যাম্প হয়েছে এটা আনন্দের। এখানে কায়াক আছে। ইয়াংরা এখানে আসবে। এটাকে বেস করে নিজেদের অ্যাডভেঞ্চার যাত্রা শুরু করতে পারবে। পরিবেশ দূষণ না করে থিম পার্ক করায় ধন্যবাদ জানাই। গাজীপুরে, বান্দরবানে বেসক্যাম্প আছে। এখন চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু হলো।
ফয়’স লেক বেসক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একক বা দলবদ্ধভাবে বেসক্যাম্পের একটিভিটি উপভোগ করা যাবে। বিভিন্ন প্যাকেজে ও ইভেন্ট আলাদা আলাদাভাবে উপভোগ করা যাবে। সর্বনি¤œ ১৫০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে থাকছে ইভেন্টগুলো। নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা কর্মীর পাশাপাশি আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। ৩৩৬ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত ফয়’স লেকে গতানুগতিক গন্ডি থেকে বেরিয়ে নিজেকে নতুন করে আবিস্কার করার উদ্দেশ্যে বেসক্যাম্প এডভেঞ্জারস লি. যাত্রা শুরু করেছে। দর্শনার্থীদের টিম বিল্ডিং আর লিডারশিপ কোয়ালিটি শিখাতে এবং আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে এই উদ্যোগটি নেয়া হয়েছে।