‘ফ্লাইওভার’ মানেই তো উড়ালসড়ক!

19

 

 

ইংরেজি ‘ফ্লাইওভার’ শব্দটি আমাদের কাছে যতটা পরিচিত, বাঙালি হয়েও বাংলায় ‘উড়ালসড়ক’ আমাদের অনেকের কাছে ততটা পরিচিত নয়। তারপরেও গাড়ির চালকগণ বাংলা ‘উড়ালসড়ক’ শব্দটি নিজদায়িত্বে বুঝে নিয়ে, ফ্লাইওভার বা উড়ালসড়কে গাড়িকে উড়োজাহাজ মনে করে উড়াতে থাকে। ফ্লাইওভারে প্রতিবার যাতায়াতে অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছি, মোটর সাইকেল থেকে শুরু করে বাস ট্রাক পর্যন্ত সকলপ্রকার যানবাহনের চালকগণ সর্বোচ্চ গতিতে বিমানের মত চলতে বা উড়তে থাকে। গাড়ির অবুঝ চালক পুরানো জরাজীর্ণ গাড়িটিকেও মনে করে বিমান; আর এই অবোধ চালক নিজেকে সেই বিমানের পাইলট মনে করে! তাদের গাড়ি চালানো অবস্থা দেখে মনে হয় এই যেন ডিভাইডারে বা সাইডরেলিং-এ কিংবা অন্যকোন গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে! অন্যদিকে রাত হলে তো আর কথায় নাই। এইসময় গাড়ির সংখ্যা কম থাকাতে সকল প্রকার গাড়ি বেপরোয়া চালাতে থাকে।
আমাদের শহরগুলোতে বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে প্রচুর স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। সেগুলো উচ্ছেদ করে সড়ক সম্প্রসারণ করা আদৌ সম্ভব নয়। তাই বর্ধিত জনসংখ্যার সাথে ক্রমবর্ধমান যানবাহন চলাচলের জন্যে নির্মাণ করতে হচ্ছে ফ্লাইওভার বা উড়ালসড়ক। কিন্তু আমাদের দেশে অপরিনামদর্শী গাড়ির চালকগণ বেপরোয়া গাড়ি চালাতে গিয়ে, বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে যাত্রী আর পথচারি। চালকের ট্রাফিক আইনের প্রতি নেই কোন শ্রদ্ধা, নেই কোন নিজস্ব জ্ঞান-বিবেকবোধ। যাত্রী কর্তৃক তাদেরকে বুঝানো হলেও বেশীরভাগ চালক ক্ষুব্ধ হয়। তাই অনিচ্ছার সত্তে¡ও প্রবাদটি না বললে নয়, ‘মূর্খকে উপদেশ দিলে ক্রোধ বেড়ে যায়’। মাঝে মধ্যে প্রশ্নজাগে মনে, ফ্লাইওভারের যদি এমন অবস্থা হয়, ভবিষ্যতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে অথবা বহুতল ফ্লাইওভার নির্মিত হলে কি অবস্থা হবে? এই অবস্থায় সকল যাত্রী বা পথচারির স্বার্থ বিবেচনা করে, ফ্লাইওভারে কিছু দূর পর-পর অবশ্যই স্পিডব্রেকার প্রদান করা জরুরি। আশাকরি আমার এই ছোট লেখাটির বিষয়বস্তু যথাযথ অনুধাবন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিবেন।