ফেসবুক ফলোয়ার বাড়াতে পীরগঞ্জে ‘উসকানিমূলক পোস্ট’: র‌্যাব

21

সৈকত মন্ডলের ফেসবুক পাতায় ‘ধর্মীয় অবমাননার’ পোস্ট দেখে রংপুরের পীরগঞ্জে মানুষ জড়ো হয়ে মাঝিপাড়ায় হিন্দুদের উপর হামলা করেছিল বলে র‌্যাব দাবি করেছে। আর সৈকতের বিষয়ে র‌্যাব বলেছে, ফেসবুকে অনুসারীর সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে তিনি ‘ধর্মীয় উস্কানিমূলক’ পোস্ট দিয়েছিলেন। পীরগঞ্জে সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িত অভিযোগে সৈকত মন্ডল (২৪) ও রবিউল ইসলামকে (৩৬) গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তারের পরদিন শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে র‌্যাব। সৈকতের নির্দেশে রবিউল পাশের মসজিদের মাইক ’থেকে’ লোকজনকে জড় হওয়ার জন্য প্রচার চালিয়েছিলেন বলে র‌্যাব জানিয়েছে। খবর বিডিনিউজের
র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সৈকত তার ব্যক্তিগত ‘ইমেজ’ প্রচার এবং তার ফেসবুকে ‘ফলোয়ার’ বাড়াতে উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে লোকজন জড় করে।
ফেসবুকে সৈকত গত ১৭ অক্টোবর রাতে পোস্ট দিয়েছিলেন- ‘এ মুহূর্তে গ্রাম পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া সংবাদ, হিন্দুদের আক্রমণে এক মুসলিমকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
দুর্গাপূজার মধ্যে কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের পর সেই রাতে পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ২৩টি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, সৈকত পোস্ট দেওয়ার পর লোকজন জড়ো হলে একটি উঁচু ঢিবির উপর দাঁড়িয়ে লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ও রবিউল আত্মগোপনে চলে যান। সৈকত স্থানীয় একটি কলেজের স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থী, রবিউল স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন। এর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছিল, হিন্দু এক তরুণের ফেসবুকে ইসলাম অবমাননাকর মন্তব্য দেখে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল।
হিন্দু ওই তরুণকে ইতোমধ্যে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার সঙ্গে দ্বন্দ্বে থাকা স্থানীয় এক মুসলমান তরুণকেও আটক করা হয়েছে।
র‌্যাব মুখপাত্র আল মঈন বলেন, তাদের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক ছিল। একবার হিন্দু তরুণ তার ফেসবুকে ইসলাম সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে মুসলমান তরুণের সঙ্গে দেখা করে কেমন লাগে বলেছিল। পরে হিন্দু তরুণ একটা পোস্ট দিয়ে তুলে ফেললেও মুসলমান ওই তরুণ তা সেভ করে প্রচার করে দেয়। আর ওই মুসলমান তরুণের ফেসবুক বন্ধু হিসেবে সৈকত ওই পোস্টটি নিয়ে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন বলে জানান আল মঈন।
পীরগঞ্জের সেই হামলার জন্য সৈকতের উস্কানিমূলক প্রচারকেই দায়ী করেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।
সৈকতের রাজনৈতিক কোনো দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল কি না, সেই প্রশ্নে আল মঈন বলেন, তেমন কিছু তারা পাননি। সৈকত নিজেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলের লোক পরিচয় দিলেও কোনো সংগঠনের কোনো পদে কখনও ছিলেন না।