ফেসবুককে সম্পূর্ণ বদলে ফেলছেন জাকারবার্গ

36

বিগত ১৫ বছর ধরে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা জাকারবার্গ বিশ্ববাসীকে উদ্বুদ্ধ আসছেন তথ্য শেয়ারের ব্যাপারে আরও বেশি উন্মুক্ত হতে। তবে সদ্য লেখা তার এক ব্লগপোস্টে দেখা গেছে, সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছেন জাকারবার্গ।
ভবিষ্যতের অনলাইন বাস্তবতা চিন্তা করে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সুরক্ষার দিকটিকে প্রাধান্য দিয়ে ফেসবুককে এবার সম্পূর্ণ নতুন করে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। গ্রাহক তথ্যের গোপনীয়তা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ফেসবুকের ব্যর্থতার সাম্প্রতিক বেশকিছু নজির প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে জাকারবার্গ এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গ্রাহকের বিনিময়কৃত তথ্য স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ না করা, একই অ্যাপস ব্যবহার করে ভিন্ন ভিন্ন অ্যাপসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার ব্যবস্থা করা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রশ্নে অসহিষ্ণু দেশের আধেয় স্মৃতিতে না রাখার মতো নানা পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে এই গোপনীয়তা নিশ্চিত করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন অবস্থান নিতে পারলে ফেসবুককে যে কোনও ঘটনায় দায়ী করা কঠিন হবে। কবে ফেসবুকে এই বদল আসবে তা নির্দিষ্ট করে জানাননি জাকারবার্গ। তকে কয়েকবছরের মধ্যেই তার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হবে বলে আভাস দিয়েছেন তিনি।
হার্ভাড শিক্ষার্থী মার্ক জাকারবার্গের হাত ধরে ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। একটা সময় হয়ে ওঠে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট। বর্তমানে কোটি কোটি গ্রাহক ফেসবুক ব্যবহার করছেন। গ্রাহকরা এতে বিনামূল্যে সদস্য হন এবং বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত হন। ব্যক্তিগত তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। তৈরির শুরু থেকেই জাকারবার্গ চেয়েছেন গ্রাহকরা যত বেশি একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পারেন, যোগাযোগ করতে পারেন। সম্প্রতি ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে বেশ কয়েকটি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে ফেসবুক। সর্বশেষ ২০১৮ সালে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে যে, একটি রাজনৈতিক সংগঠনের কাছে ৫ কোটি ফেসবুক গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চলে যায়।
বুধবার লেখা ব্লগপোস্টে ফেসবুককে ‘প্রাইভেসি-ফোকাসড প্ল্যাটফর্ম’ হিসেবে গড়ে তোলার কথা জানিয়ে জাকারবার্গ লেখেন, ‘আমি টের পাচ্ছি অনেকেই মনে করছে না ফেসবুক এ ধরণের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কেন্দ্রিক প্লাটফর্ম তৈরি করতে পারবে বা তারা তৈরি করতে চায়। খোলামেলাভাবে বললে কারণ হলো বর্তমানে গোপনীয়তা সুরক্ষায় আমাদের সুনাম নেই। তবে বারবার আমরা দেখিয়েছি যে ব্যক্তিগত মেসেজ বা কন্টেন্ট আদান-প্রদানসহ মানুষের সত্যিকার চাহিদা অনুযায়ী সেবা তৈরির সামর্থ্য আমাদের রয়েছে’।
একই অ্যাপস ব্যবহার করে ভিন্ন ভিন্ন অ্যাপসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার ব্যবস্থা করা প্রসঙ্গে জাকারবার্গ লিখেছেন, ‘মানুষ অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সেবা বেছে নিতে চায়। যদি আপনি মানুষকে ফেসবুকে মেসেজ দিতে চান তাহলে আপনাকে মেসেনজার ব্যবহার করতে হয়, ইন্সটাগ্রামে ব্যবহার করতে হয় ডিরেক্ট আর হোয়াটসঅ্যাপে ব্যবহার করতে হয় হোয়াটসঅ্যাপ। আমরা মানুষকে এমন সুযোগ দিতে চাই যে এসব নেটওয়ার্কের যেকোনও একটি বেছে নিয়ে তিনি তার বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করতে পারবে।’