ফেনীতে ফেসবুক লাইভে স্ত্রী হত্যা স্বামীর ফাঁসি

1

ফেনীতে ফেসবুক লাইভে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত। ফেনীর জেলা ও দায়রা জজ বেগম জেবুন্নেছা গতকাল বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন। এছাড়াও আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বিচারক। সাজাপ্রাপ্ত ওবায়দুল হক ভূঁঞা টুটুল (৩৩) ফেনী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বারাহিপুর এলাকার গোলাম মাওলা ভূঁঞার ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন।
মামলার নথি অনুযায়ী, স্ত্রী তাহমিনা আক্তারকে (২৮) ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল পারিবারিক কলহের জেরে হাত-পা বেঁধে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন টুটুল। হত্যার এ দৃশ্য ফেসবুকে লাইভে দেখান টুটুল। লাইভে টুটুল সে সময় বলেন, ‘আমার পরিবারকে ব্লাকমেইল করত তাহমিনা। আজ থেকে আমার পরিবার আর ব্লাকমেইলের শিকার হবে না’। লাইভে এসে টুটুল তার স্ত্রীকে হত্যার জন্য সবার কাছে ক্ষমা চান এবং ঘটনার জন্য নিজেই দায়ী বলে স্বীকার করেন। লাইভে তার মেয়েকে দেখভালের জন্য তিনি সবার কাছে অনুরোধ করেন।
এর আগে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে রাজধানী ঢাকায় লকডাউন শুরু হলে কাপড়ের দোকানের চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন টুটুল।
স্ত্রীকে হত্যার পর টুটুল নিজেই ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে তার বাড়িতে যেতে বলেন। হত্যায় ব্যবহৃত দা ও টুটুলের মোবাইল ফোন জব্দ করে পুলিশ।
মামলার নথি অনুযায়ী, তাহমিনা আক্তার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের আকদিয়া গ্রামের সাহাব উদ্দিনের মেয়ে। বাড়ি থেকে পালিয়ে চট্টগ্রামে বিয়ে করেন ফেনীর টুটুলকে। বিয়ের পর থেকে অভাব-অনটন নিয়ে পরিবারে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হতো। যৌতুকের জন্য তাহমিনাকে টুটুল নির্যাতন করেন এবং শ্বশুরবাড়ি থেকে কয়েক দফা টাকা নেন। একপর্যায়ে আরও টাকার জন্য চাপ দিলে তাহমিনা দিতে অপরারগতা প্রকাশ করেন।
ওই আদালতের পিপি হাফেজ আহমেদ মামলার নথির বরাতে বলেন, হত্যার দিনই তার বাবা সাহাব উদ্দিন বাদী হয়ে ফেনী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. ইমরান হোসেন গত বছরের ১১ নভেম্বর আসামি টুটুলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর টুটুলের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করে। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মামলায় ১৯ জনের মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্য নেয় আদালত।