ফুলকির সাংস্কৃতিক উৎসবে শিশু-কিশোরদের মিলনমেলা

19

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফুলকির আয়োজনে শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক উৎসব শিশু-কিশোর ও অভিভাবকদের মিলনমেলায় রূপ নিয়েছে। তিন দিনব্যাপী উৎসবের দ্বিতীয় দিনে গতকাল শুক্রবার নানা আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন নগরীর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন ছড়াকার ও শিশু সাহিত্যিক সুকুমার বড়ুয়া। শুক্রবার সকালে শিশু-কিশোর সমাবেশে অতিথি ছিলেন সাহিত্যিক ও কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক। বিকেলে বিভিন্ন স্কুলের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, প্রজেক্ট প্রদর্শনী, পাপেট শো, চারুকলা পদক প্রদান করা হয়। সন্ধ্যায় নাট্যপালা ‘বক বধ’ মঞ্চায়ন করা হয়। শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় উৎসবে উপচেপড়া ভিড় ছিল।নিজেদের সমবয়সীদের অংশগ্রহণে নৃত্য-গানসহ বিভিন্ন পরিবেশনায় মুগ্ধ হতে দেখা যায় শিশু-কিশোরদের। অভিভাবকরাও ছিলেন উৎফুল্ল। আয়োজকরা জানান, তিনদিনের এ উৎসবে আজ (শনিবার) থাকছে জাদু প্রদর্শনী। এছাড়াও বাঁশি, তালপাখা, শীতলপাটি, ছাপচিত্র, ক্র্যাফট ও মাটি দিয়ে তৈরি জিনিসপত্রের কর্মশালায়ও অংশ নেবে শিশু-কিশোররা। ৯ থেকে ১৬ বছরের সকল শিশু-কিশোর নিবন্ধনের মাধ্যমে এ কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। নন্দনকাননের ফুলকি প্রাঙ্গণে নিবন্ধন করা যাবে। এছাড়া আজ (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত জেলা শিল্পকলা একাডেমির উৎসব প্রাঙ্গণেও নিবন্ধনের সুযোগ রয়েছে। পরে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও জাদু প্রদর্শনের মাধ্যমে এ উৎসবের শেষ হবে।
গত বৃহস্পতিবার উৎসবের উদ্বোধনকালে ছড়াকার ও শিশু সাহিত্যিক সুকুমার বড়–য়া বলেন, ১৯৫০ সালের পর থেকে চট্টগ্রামের নালাপাড়া এলাকায় বিভিন্ন পূজা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান, নাচ ও যাত্রা দেখা যেত। প্রায় ৭২ বছর পর সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে অনেকটাই। যে সকল অভিভাবক শিশুদের এখনও সাংস্কৃতিক কাজে অনুপ্রেরণা দেন তাদের সাধুবাদ জানান তিনি।
ফুলকির সভাপতি কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, শিশুদেরকে নম্বর দিয়ে বিবেচনা করা যায় না। শুধুমাত্র পাঠ্যবই ও পরীক্ষাকেন্দ্রিক শিক্ষা দিয়ে জ্ঞান অর্জন সম্ভব নয়। শিশুদের শিক্ষার পরিবেশ হতে হবে আনন্দময়। তাদেরকে সাংস্কৃতিক কাজে যুক্ত করতে হবে। সরকার নতুন শিক্ষাক্রমে সে প্রকল্প নিয়েছে। ফুলকি শুরু থেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি সৃজনশীল শিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ফুলকির সর্বাধ্যক্ষা শীলা মোমেন বলেন, যে সকল গুণীজনদের লিখা পড়ে শিশুরা বড় হচ্ছে, এই উৎসবের মাধ্যমে তারা সেসব লেখকদের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। সত্যিকার বড় মানুষদের তারা চিনতে শিখছে। শৈশবের স্মৃতিগুলোই শিশুদের বড় হতে সহায়তা করে। শিশুদের শৈশব হতে হবে আনন্দময়। তাদের কৈশোর হতে হবে ফুটন্ত ফুলের মত। স্বাধীনভাবে তাদের বেড়ে উঠতে না দিলে তাদের সৃজনশীল বিকাশ হবে না। সৃজনশীল কাজে শিশুরা জ্ঞানে, মেধায়, শরীরে, মননে ও চিন্তায় বাড়বে।