ফিনিশ লাইনে এসে শেষ হয়ে গেল জীবনও!

7

নিজস্ব প্রতিবেদক

পটুয়াখালীর দৌড়বিদ গহর জামিল হোসেন টুকু। প্রায় ৫০ বছর বয়সী এই দৌড়বিদ চট্টগ্রামে এসেছিলেন হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। ২১ কিলোমিটার দৌড় শেষ করে ফিনিশিং লাইনে পৌঁছে দুই আঙ্গুল উঁচিয়ে বিজয়ের আনন্দ প্রকাশ করেন। পরক্ষণেই সেই বিজয়ানন্দ বিষাদে পরিণত হয় যখন গহর জামিল হোসেন হঠাৎ লুটিয়ে পড়ে যান মাটিতে। হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক জানান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার।
নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে গতকাল শুক্রবার সকালে এই দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ‘টীম চট্টগ্রাম’ নামে ফেসবুক ভিত্তিক একটি সংগঠন। দৌড়বিদের এমন আকস্মিক মৃত্যুতে আয়োজক এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিউলি শবনম জানান, ২১ দশমিক এক কিলোমিটার এবং ১০ কিলোমিটার- দুই ধরণের দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। গহর জামিল হোসেন টুকু ২১ কিলোমিটারে অংশ নেন। শুরু থেকেই তিনি একদম স্বাভাবিক ছিলেন। প্রতিযোগিতা নিয়ে সবার সঙ্গে আনন্দ-উচ্ছ¡াসেও মাতেন। ২১ কিলোমিটার দৌড়ে এসে ফিনিশ লাইনে পৌঁছে তিনি দুই আঙ্গুল উঁচিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বসার সময় হঠাৎ তিনি লুটিয়ে পড়ে যান মাটিতে। প্রতিযোগিতা উপলক্ষে আগে থেকেই অ্যাম্বুলেন্স রাখা ছিল সেখানে। এসময় দ্রæত তাকে সেই অ্যাম্বুলেন্সে করেই দ্রæত হাসপাতালে নেওয়া হয়। খবর আসে, উনি আর নেই।
ম্যারাথনে সাত শতাধিক প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। পতেঙ্গা থেকে শুরু হয়ে চৌচালা এলাকা থেকে ইউটার্ন দিয়ে পুনরায় সৈকত এলাকায় ফিরে আসার কথা ছিল প্রতিযোগী টুকুর। সে অনুযায়ী ফিরে আসার পর ফিনিশ লাইনে হঠাৎ তিনি পড়ে যান। পরে অ্যাম্বুলেন্সে তাকে স্থানীয় নৌ-বাহিনী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চমেক হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নগরীর পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, দৌড়ে এসে শেষপর্যায়ে উনি (গহর জামিল হোসেন টুকু) হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমে উনাকে নেভি হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে উনাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
দৌড় ক্রীড়াক্ষেত্রের পরিচিত মুখ টুকু জামিল পটুয়াখালীতে দৌড়বিদদের সংগঠন ‘টীম পটুয়াখালীর’ প্রতিষ্ঠাতা। গহর জামিল হোসেন টুকুর বাড়িও পটুয়াখালী সদর উপজেলায়। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জেনারেল ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ক্রীড়াবিদ হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন।