ফাস্ট ট্র্যাকের জন্য দুটি লেন সংরক্ষিত হচ্ছে

242

শাহ আমানত সেতুতে ফাস্ট ট্র্যাকে রেজিস্ট্রেশনভুক্ত গাড়ি চলাচলালের সুবিধার জন্য দুটি লেন সংরক্ষিত করা হচ্ছে। টোল আদায় করতে টোল প্লাজায় গাড়ি না থামিয়ে ফাস্ট ট্র্যাকে রেজিস্ট্রেশনভুক্ত গাড়ি চলে যেতে পারবে নিজ নিজ গন্তব্যে। এ পদ্ধতিকে আরো জনপ্রিয় ও সুবিধাজনক করতে উভয় দিকে ৬টি লেনের মধ্যে ৩ ও ৪ নম্বর লেন দিয়ে ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্যকোন গাড়ি চলাচল করতে পারবে না। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে এটি কর্যকর হবে। অবশিষ্ট ৪টি লেন দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের বাইরের গাড়িগুলো চলাচল করবে। বর্তমানে উভয় দিক থেকে ৬টি লেন ব্যবহার করে যানবাহন চালকরা। ফাস্ট ট্রাক পদ্ধতির জন্য দুটি লেন সংরক্ষিত করা হলে শুরুতে জানজটে বিশৃঙ্খলার সম্ভাবনা থাকলেও ফাস্ট ট্র্যাকে গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের আওতা বাড়লে এ সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
উল্লেখ্য, সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত ২৭ অক্টোবর ফাস্ট ট্র্যাক পদ্ধতি উদ্বোধনের পর থেকে চট্টগ্রামে শহ আমানত সেতুতে প্রথম এ পদ্ধতি চালু করা হয়। কিন্তু এসব গাড়ির জন্য আলাদা লেন সংরক্ষিত না করায় এ পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পায়নি। এ পদ্ধতি পুরোপুরি বাস্তবায়নে দুটি লেন সংরক্ষণ করায় আগামী ১ জানুয়ারি থেকে টোল আদায় করতে শাহ আমানাত সেতুর টোল প্লাজায় এসব গাড়িকে থামতে হবে না। ফাস্ট ট্র্যাক পদ্ধতিতে সয়ংক্রিয়ভাবে টোল আদায় হয়ে যাবে রকেট একাউন্ট থেকে।
চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ জানান, সুবিধা বাড়ানোর লক্ষে শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজায় উইন্ডশিল্ড বেইজড ফার্স্ট ট্র্যাক ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ইটিসি) স্থাপন করা হয়েছে। এ ট্র্যাকের আওতাভুক্ত গাড়িগুলো ১ জানুয়ারি থেকে পুরোপুরি সুফল পাবে। এর ফলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ী হবে। এ সেবা পেতে গাড়ির ডিজিটাল নম্বর প্লেটধারী এবং নির্দিষ্ট একটি ফরম পূরণ ও রকেট মোবাইল একাউন্ট খুলতে হবে।
সূত্র জানায়, ইটিসি পদ্ধতিতে গাড়ির সামনের আয়নার উপরিভাগে সংযুক্ত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেনটিফিকেশন বা আরএফআইডি ট্যাগের সঙ্গে টোল গেটের অ্যানটেনার সংকেতের মাধ্যমে টোল আদায় হবে। যানবাহন টোল প্লাজা পার হওয়ার সময় রকেট হিসাব থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত টোল কাটা হয়ে যাবে। টোল আদায়ের পরপরই ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে গ্রাহককে জানিয়ে দেয়া হবে। এ প্রক্রিয়াটি শেষ হতে ১০ সেকেন্ডেরও কম সময়ের প্রয়োজন হবে। তবে রেজিস্ট্রেশনভুক্ত গাড়ি একেবারে না থামিয়ে টোল প্লাজা পেরিয়ে যেতে পারবে। ইটিসি সেবা গ্রহণের জন্য যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন করতে প্রাথমিক সহযোগিতা দিচ্ছে ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। এছাড়া ফরম পূরণে সহযোগিতা দিচ্ছেন সেতুর ইজারাদার কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা ফাস্ট ট্র্যাক পদ্ধতিতে গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের আওতা না বাড়লে ধর্মীয়সহ নানা উৎসবে ও সরকারি ছুটির দিনে যানজটের তীব্রতা বাড়তে পারে। তবে এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে পরিবহন সংশ্লিষ্টরাই ফাস্ট ট্র্যাক পদ্ধতি বেছে নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে যাত্রী ও চালকদের যানজটে আটকা পড়া ও ধীর গতিতে চলার ভোগান্তি থাকবে না। সে ক্ষেত্রে রকেটের মোবাইল একাউন্টে পরিমিত টাকা থাকা বাধ্যতামূলক। না থাকলে জরিমানা গুণতে হবে।
ইজারাদার কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ কোম্পানি ইউডিসি-ভ্যান জেভি এর অপারেশন ডাইরেক্টর অপূর্ব সাহা জানান, ইটিসি জনপ্রিয় করতে টোল আদায়কারী কর্তৃপক্ষ পরিবহন মালিক, শ্রমিকসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন। এ সেবা চালু হলে পাল্টে যাবে মহাসড়কের দৃশ্যপট। দাঁড়িয়ে টোল আদায় আর প্রতিদিন যানজটে আটকে থাকার সেই চিরচেনা দৃশ্য আর থাকবে না। এসব গাড়ির জন্য আলাদা লেন সংরক্ষন না করায় গত দুই মাসে তেমন রেজিস্ট্রেশন হয়নি। এ পদ্ধতি জনপ্রিয় করতে ১ তারিখ থেকে দুটি লেন সংরক্ষিত করার পাশাপাশি গাড়ির চালক ও মালিকদের সেবা নিতে যাবতীয় সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, শুরুতে উভয় পাশে দুটি লেন দিয়ে এ পদ্ধতির বাইরে গাড়ি চলাচল করতে গিয়ে কিছু বিশৃঙ্খলা হতে পারে। তবে এ সমস্যা বেশিদিন থাকবে না। এর বাইরে টোল প্লাজায় দুই পাশে আরো দুটি লেন নির্মাণের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। আরো দুটি লেন তৈরি হলে আর কোন সমস্যা থাকবে না।