ফানুসে ছেয়ে যায় রাতের আকাশ

37

বান্দরবান প্রতিনিধি

বান্দরবানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা উৎসবকে ঘিরে বিহারগুলোতে চলছে ফানুস উড়ানোর মহোৎসব। দায়ক-দায়িকারা মোমবাতি, ধুপকাঠি প্রজ্জ্বলন আর ভিক্ষুদের ছোয়াইং (বিভিন্ন ধরনের খাবার) প্রদান করে দিবসটি পালন করেন। রাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি উজানি পাড়া বৌদ্ধ বিহারে প্রার্থনা শেষে ফানুস উড়ানোর উদ্বোধন করেন। এই উৎসবে রাতের আঁধারে শত শত ফানুসের বর্ণিল আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে আকাশ। পর্যটকসহ বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের হাজার হাজার মানুষ এই ফানুস উড়ানোর উৎসবে যোগ দেয়। এতে কয়েক হাজার ফানুস উড়ানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সাঙ্গু নদীতে রথ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এই প্রবারণা উৎসব।
এদিকে বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ও প্রবারণা উৎসব উদযাপন কমিটির আয়োজনে গত বুধবার সকাল থেকে দুইদিনব্যাপী জেলাজুড়ে চলে নানা আনুষ্ঠানিকতা। সকাল থেকে বিহারে বিহারে প্রার্থনা, ভিক্ষুদের উন্নত খাবার বিতরণ আর সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় হাজার বাতি প্রজ্জ্বলন, মহা রথ টানা, ফানুস বাতি উত্তোলন ও পাড়ায় পাড়ায় পিঠা তৈরির উৎসব। জেলাজুড়ে মারমা সম্প্রদায়ের পাশাপাশি, চাকমা, ত্রিপুরা, চাক, বড়ুয়াসহ পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টির জনসাধারণ এই উৎসবে যোগ দিয়েছে। সকাল থেকে বিহারে বিহারে চলে প্রার্থনা আর প্রদীপ প্রজ্জ্বলন। প্রবারণার এই উৎসবে যোগ দিয়েছে বাঙালিসহ দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুরাতন রাজবাড়ীর মাঠ থেকে মহা মঙ্গল রথ টেনে বান্দরবানের বিভিন্ন পাড়া প্রদক্ষিণ শেষে মধ্যরাতে সাঙ্গু নদীতে রথ উৎসর্গের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুই দিনব্যাপী এই বর্ণাঢ্য প্রবারণা পূর্ণিমার আয়োজন।
পাহাড়ি মারমা তরুণ-তরুণীরা বলেন, প্রবারণা ও ওয়াগ্যোই পোয়ে তাদের খুবই আকর্ষণীয় একটি উৎসব। এ উৎসবে উড়ানোর জন্য আগে থেকেই বন্ধু বান্ধবীরা মিলে ফানুস বানায়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। আষাঢ়ী পূর্ণিমার পরের দিন থেকে টানা তিনমাসের বর্ষাবাস শেষে বৌদ্ধ নর-নারীরা বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে পঞ্চশীল, অষ্টশীল ও দশশীল গ্রহণ করেন এবং প্রবারণা পূর্ণিমা (মাহা ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে) পালন করে থাকে। এসময় সকল অহিংসা ও পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার মন্ত্রে দীক্ষিত হন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মানুসারীরা।