ফটিকছড়ি পৌরসভা নির্বাচন শেষ মুহূর্তে ঘরে ঘরে ভোট চাইছেন প্রার্থীরা

11

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি
তৃতীয় বারের মতো চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি পৌরসভা নির্বাচন হতে যাচ্ছে আগামি বুধবার। নির্বাচনী প্রচারণার শেষপ্রান্তে এসে প্রার্থীরা ভোটারদের দোয়া, আশীর্বাদ ও সমর্থন পেতে প্রতিটি ঘরে গিয়ে চাইছেন কাঙ্খিত ভোট।
পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১৯টি ভোট কেন্দ্রে ৩৬ হাজার ২৪৪ জন ভোটারের রায়ে নির্বাচিত হবেন জনপ্রতিনিধি। আগামি ২ নভেম্বর (বুধবার) ইভিএমের মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।
পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন তিনজন। তারা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী এএস এম মিনহাজুল ইসলাম জসিম (মোবাইল ফোন) এবং অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ কামাল পাশা (নারিকেল গাছ)।
পৌর এলাকার আমান বাজারের ভোটার আজিম উদ্দিন জানান, ‘দীর্ঘদিন এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বলতে গেলে গত কয়েক বছরে কোনো উন্নয়ন হয়নি। এবার নির্বাচনে যিনি নির্বাচিত হবেন এই অঞ্চলের কাঙ্খিত উন্নয়নে কাজ করবেন বলে আশা করছি’।
ফটিকছড়ি সদরের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে পৌরবাসী খুবই আনন্দিত। কেননা নতুন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হওয়ার মাধ্যমে এলাকায় নেতৃত্ব গড়ে উঠে। এছাড়া এলাকার উন্নয়ন তরান্বিত হবে’।
পৌর বাসিন্দা আইনজীবী মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা সেই প্রার্থীকেই নির্বাচিত করব, যে পৌরবাসীর মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য কাজ করবেন এবং সেবা দিবেন, কর বাড়াবেন না’।
জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৩ জুন উপজেলা সদর ধুরুং ও রাঙামাটিয়া ইউনিয়নকে নিয়ে গঠিত হয় পৌরসভা। ২০১২ সালের ১২ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে পৌর মেয়র হন আওয়ামী লীগের মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন।
ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনে মূলত আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের সাথে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী এ এস এম মিনহাজুল ইসলাম জসিমের প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে। এ দুই প্রার্থীর যে কোনো একজন মেয়র নির্বাচিত হবেন। তারা উভয়ে বর্তমানে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তবে অপর প্রার্থী মো. কামাল পাশাও বসে নেই। তারা সকলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মসজিদ-মন্দির, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানে আমি সেবা দিয়ে আসছি। বিশেষ করে এলাকাবাসীর মৌলিক অধিকার, বিদ্যুতের ন্যায্য দাবি নিয়ে আমি সর্বদা সোচ্চার ছিলাম। একারণে ভোটাররা আমার পক্ষে আবার রায় দেবেন’।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এ এস এম মিনহাজুল ইসলাম জসিম বলেন, ‘সাধারণ ভোটাররা নেতৃত্ব দেওয়ার মত যোগ্য, শিক্ষিত ও মার্জিত লোকের হাতে মেয়রের দায়িত্ব তুলে দিতে চায়। পৌরবাসীর বিদ্যুৎ সমস্যা দূরীকরণ, রাস্তাঘাটের উন্নয়নে ব্যাপক ভ‚মিকা রাখতে চাই। আশাকরি ভোটাররা আমাকে রায় দেবেন’।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিনই রাত-দিন সমানে এলাকায় গণসংযোগ করছেন তিন মেয়র প্রার্থী। এছাড়াও সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে ৭ জন এবং ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৩০ জন পুরুষ প্রার্থী সদস্য পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। তারাও চষে বেড়াচ্ছেন এ ঘর থেকে ও ঘরে। প্রচার-প্রচারণার শেষ পর্যায়ে ভোট প্রার্থনার পাশাপাশি দোয়াও চাইতে দেখা গেছে তাদের।
রিটার্নিং কর্মকর্তা দেবাশীষ দাস বলেন, ‘ইভিএমে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। আশা করি আমরা একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারব’।