ফটিকছড়িতে দুর্ভোগে দুই লাখ মানুষ

42

ফটিকছড়িতে বন্যা পরিস্থিতি এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে হালদার বেড়িবাঁধে ভেঙে পানি ঢুকে দৌলতপুর, সুন্দরপুর, পাইন্দং, নারায়ণহাট, সুয়াবিল, কাঞ্চননগর, রোসাংগিরী ও সমিতিরহাট ইউনিয়নের অন্তত অর্ধশত গ্রাম এখনো পানির নিচে। ফলে এসব গ্রামের প্রায় দুই লাখ মানুষ এখনো দুর্ভোগে।
এছাড়া গহিরা-হেঁয়াকো সড়কে সেতু ভেঙে বুধবার থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং নাজিরহাট-কাজীরহাট সড়ক ও নানুপুর-বিবিরহাট সড়কে হাঁটুপানি হওয়ায় যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তবে ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এখনো উপজেলায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে উপজেলার রোসাংগিরী, সুয়াবিল, সমিতিরহাট, ভূজপুর, লেলাং, কাঞ্চননগর, হারুয়ালছড়ি, নারায়নহাট ও দাঁতমারা ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চলের সবকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ভূজপুর ইউনিয়ন পরিষদ, সুয়াবিলের পূর্ব-সুয়াবিল ও ভাঙ্গাদিঘীর পাড়, রোসাংগিরী ইউনিয়নের আজিমনগর ও লেলাং ইউনিয়নের শাহনগর গ্রামের শত শত ঘর-বাড়ি হাঁটুপানিতে ডুবে রয়েছে। এসব গ্রামের পরিবারগুলো পাশের বাড়ি কিংবা উঁচু স্থানে অবস্থান নিয়েছে।
পূর্ব-ফরহাদাবাদ গ্রামের মুহাম্মদ সাহেদ বলেন, তার পৈত্রিক সম্পত্তির একাধিক মৎস্য পুকুর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
রোসাংগিরী গ্রামের মুহাম্মদ আলমগীর জানান, তার ৪০ শতক খেতের আমন বীজতলা তলিয়ে গেছে। তিনি সরকারের সাহায্য কামনা করেছেন।
রোসাংগিরী ইউপি চেয়ারম্যান এস এম শোয়েব আল ছালেহীন বলেন, ইউনিয়নের অনেক অংশে ভাঙ্গনএলাকা রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত।
নারায়ণহাট ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ হারুন বলেন, গ্রামের অনেক নি¤œাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
সমিতিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে অন্তত দশ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দী জীবনযাপন করছেন। এছাড়া গত মঙ্গলবার রাতে আরবানিয়া এলাকায় হালদার ভাঙ্গনের কবলে পড়ে সাতটি বসতঘর সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে।
লেলাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সরোয়ার হোসেন বলেন, ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম এখনো পানিতে থৈ থৈ করছে। এলাকায় শুকনো খাবারের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
কাঞ্চননগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রশিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চল এখনো পানির নিচে। এছাড়া চমুরহাট বাজারটি ধুরুং এর ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লিটন দেব নাথ বলেন, প্রায় ৫০০ হেক্টর আমন বীজতলা ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রায় এর বিরুপ প্রভাব পড়বে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সায়েদুল আরেফিন বলেন, বন্যাকবলিত এলাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন করা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত অন্তত অর্ধশতাধিক গ্রামের নি¤œাঞ্চল তলিয়ে আছে। সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য স্ব স্ব দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্রমেই দুর্গতদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।