ফটিকছড়িতে একের পর এক চুরি

11

মো. এমরান হোসেন, ফটিকছড়ি

ফটিকছড়িতে একের পর এক গরু চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বাসিন্দারা, রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে গোয়াল ঘর। এই নিয়ে ফটিকছড়ি থানায় ক্ষতিগ্রস্তরা লিখিত অভিযোগ করলেও পুলিশের ভ‚মিকায় হতাশ হয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। তবে চোর চক্রকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন বলে দাবিী পুলিশের ।
জানা গেছে, রাতের অন্ধকারে নির্দিষ্ট স্থানে পিক আপ কিংবা মিনি ট্রাক রেখে তাতে করে চুরি করা গরু নিয়ে পালাচ্ছে চোর চক্র। স¤প্রতি কয়েক মাসের মধ্যে উপজেলার রোসাংগিরী ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌর এলাকার মাত্র ২ কি. মি মধ্যে ৫ পরিবারের ১৬টি গরু চুরি করে চোর চক্র। ৫ পরিবারে তাদের পালিত গরুগুলো ছিলো শেষ সম্বল। ক্ষতিগ্রস্তরা এই নিয়ে ফটিকছড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও পুলিশের ভ‚মিকায় হতাশ হয়েছেন অভিযোগকারীরা। অভিযোগের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন থানা পুলিশ।
স¤প্রতি চুরির একটি ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, চোরের দল কিভাবে চুরি করতে এসেছে, তারা কতজন ছিলো এক সঙ্গে এবং দেখা গেছে গরু নিয়ে পালানোর দৃশ্য। একই চোর চক্র একের পর চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে, একজনকে ধরতে পারলে সব বেরিয়ে আসবে এমন মন্তব্য সাধারণ মানুষের।
এদিকে একের পর এক চুরির ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গরু পালনের প্রতি তাদের আনীহা বেড়েছে। রাতজেগে গোয়াল ঘর পাহারা দিলেও জান-মাল দুইয়ের জন্য তারা আতঙ্কগ্রস্ত তারা।
জানা গেছে, চোরের ভয়ে যেনতেন ম‚ল্যে গরুর বিক্রির করছে স্থানীয়রা। রাত-বিরাতে চলাচলেও ভীতসন্ত্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ি চাকরিজীবীরা।
স‚ত্রমতে, কয়েক মাসের ব্যবধানে রোসাংগিরি ইউনিয়নের আজিমনগর গ্রামের বর্গা চাষী নুরুল ইসলামের ৪টি গরু, আলম বাড়ীর রুবেলের ৩টি, ৪নং ওয়ার্ড় মনসফ বাড়ির গাড়িচালক মুহাম্মদ নাছিরের ৩টি, নাজিরহাট পৌরসভার কৃষক আলী আকবরের ৩টি ও সাদা মসজিদ এলাকার কৃষক হারুন ভান্ডারীর ৩টি গরু চুরি করে চোর চক্র।
সর্বশেষ গত ১ নভেম্বর রোসাংগিরী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মুহাম্মদ নাছিরের ৩টি গরু চুরি হয়। তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার চুরি হওয়া ৩টি গরুই ছিলো আমার শেষ সম্বল। যার বাজার ম‚ল্য আনুমানিক ৩লাখ টাকা। গাভি হতে দৈনিক ৮/১০ কেজি দুধ পেতাম। পূর্বের ঘটনায় পুলিশ তৎপর হলে আমার এত বড়ো ক্ষতি হতনা।
একই ইউনিয়নের আজিমনগর গ্রামের বর্গা চাষী নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, আমি একজন বর্গাচাষী। চাষাবাদ করে পরিবার পরিজন নিয়ে কোনমতে সংসার আমার। আমার চুরি হওয়া ৪টি গরুই ছিল শেষ সম্বল। যার বাজার ম‚ল্য ছিল আনুমানিক ৪লাখ টাকা। ঘটনার পর থানায় অভিযোগ করি। এরপর দুইজন পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিল। পরবর্তীতে পুলিশের আর কোন ভ‚মিকা নাই।
নাজিরহাট পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের নুরুল্লাহ মুন্সি বাড়ির বাসিন্দা আলী আকবর জানান, আমি পেশায় একজন কৃষক। আমার ৩টি গরু চুরি হয়। ঘটনার পর থানায় অভিযোগ করি। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। পার্শ্ববর্তী একজনের সিসি ক্যামেরায় চোরের দল এবং চুরি করে পালানোর দৃশ্য দেখা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ আসলাম জানান, আমি কাচাঁমালের ব্যবসা করি। রাত-বিরাতে আমাদের চলাচল করতে হয়। চোরের দল চুরি করে পালানোর সময় আমাদের রাস্তায় দেখলে তো দেখে ফেলেছি বলেই হত্যা করার সম্ভাবনা আছে। আমরা জীবন নিয়ে আতঙ্কিত।
জানতে চাইলে ফটিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী মাসুদ ইবনে আনোয়ার বলেন, অপরাধীদের ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা কোন অপরাধীকে ছাড় দিবো না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি থানার ওসিকে বলা হয়েছে। কাজ করছে, ইনশাআল্লাহ দেখা যাক।