ফটিকছড়িতে আখ চাষের দিকে ঝুঁকছে চাষিরা

577

ক্রমে আখ চাষে বিপ্লব ঘটছে আমন চাষাবাদের এলাকা চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায়। উপজেলার কুম্ভারপাড়া গ্রামে এখন আখের ক্ষেতে ভরে গেছে। এখানে মাঠজুড়ে আখ খেতের সমারোহ। চাষ করা খেত থেকে ইতোমধ্যে আখ বিক্রি চলছে। আশাতীত ফলনে তাদের মুখে হাসি। দামও পাচ্ছেন। সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কুম্ভারপাড়া বিলে প্রতিবছর আমনের চাষ করেন চাষিরা। কয়েকবছর ধরে ধানের দাম না পাওয়ায় তারা বিকল্প ফসল আবাদের চিন্তা করেন। এরই মধ্যে কয়েক মৌসুম থেকে আখের চারা লাগিয়ে চাষ শুরু করে। চাষে সাফল্যে এখন রোসাংগিরী, সমিতিরহাট, সুয়াবিল, আবদুল্লাহপুর, লেলাং ও দৌলতপুরসহ ক্রমে ছড়িয়েছে বিভিন্ন গ্রামে। উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩২ হেক্টর জমিতে আখের চাষবাদ করা হয়েছে। এছাড়া এর বাইরে আরো ২০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। যেখানে গত দুই বছর আগেও ছিল ১৮ হেক্টর। বছর বছর চাষ বাড়ায় কৃষকেরা বেজায় খুশি। গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন আখ। চাষিরা খেতের এক পাশে চুরি ঠেকাতে পাহারা দিচ্ছেন। খেতেই পাইকারগন এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কথা হয় কুম্ভারপাড়া গ্রামের চাষি মুহাম্মদ আবদুল হালিমের সাথে। তিনি বলেন, আশপাশের সব জায়গাতে আখের চাষ হয়েছে। অনেকেই ক্ষেত থেকে বিক্রি করছেন। আমিও ১৬ শতকে চাষ করেছি। ফলন ভাল হওয়ায় ৭০-৮০ হাজার টাকার বিক্রি করেছি। আরও অনেক বিক্রি করতে পারব। এছাড়া, এখানে পরে রবিশস্যও ফলানো যাবে। চাষী মুহাম্মদ রবিউল আলম বলেন, এবার আখের বিপ্লব হয়েছে। আমি ৮০ শতকে চাষ করেছি। আমনে খরচ হতো ২৫ হাজার, আখে হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। ৪০ হাজার টাকার আখ বর্তমানে বিক্রি করেছি, খেতের সব আখ বিক্রি করে আরও অন্তত ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। গত বছরও এভাবে লাভবান হওয়ায় আমন বাদে এখন আখ চাষে ঝুঁকেছি। চাষিরা বলেন, প্রতি কানিতে (৪০ শতক) খরচ গড়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। প্রতি কানিতে আখের সংখ্যা হয় গড়ে এক হাজার।
প্রতিটি আখের বর্তমান দাম ৫০ থেকে ৮০ টাকা। চাষিরা পরিপক্ব আখ তুলে খেতের পাশে জড়ো করছেন। ব্যবসায়ীরা খেত থেকেই আকার অনুযায়ী কিনে নিচ্ছেন। কিনতে আসা বিবিরহাটের ব্যবসায়ী মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ক্ষেত থেকে তোলা প্রতিটি আখ আন্দাজ করে দরদাম করা হয়। এরপর সেই আকারের আখ আলাদা করে গাড়িতে করে বাজারে নেওয়া হয়। বড় আকারের প্রতিটির মূল্য ৬০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লিটন দেব নাথ বলেন, উপজেলায় গত কয়েক বছরে কৃষকেরা আখ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। আখ চাষ ক্রমে বাড়ছে। তিনি বলেন, সঠিকভাবে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের আখের ফলন ভাল হয়।