ফখরুলের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত : তথ্যমন্ত্রী

7

‘পাকিস্তানই ভালো ছিল’ কথাটি বলার কারণে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
গতকাল সোমবার দুপুরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বঙ্গবন্ধুর ‘জন্ম শতবর্ষে সংসদে ভাষণ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রথমতো বিএনপির সব কিছুতেই হতাশা। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পাকিস্তানি ভালো ছিল। অতএব তাদের বাংলাদেশ নিয়েই হতাশা। আমিতো মনে করি তার এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া দরকার। তিনি কীভাবে বলেন পাকিস্তান আমল ভালো ছিল বা পাকিস্তান ভালো ছিল? খবর বাংলানিউজের
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের রাষ্ট্রদূতও একই কথা বলেছেন। যে কারণে তারা (বিএনপি) আরও হতাশ হয়েছে।
দেশের গুম-খুন প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো বিশেষ সংগঠনের তথ্য পাঠানোর পর সেটার ওপর যদি কোনো প্রতিবেদন তৈরি হয় সেটি ফল্টই হয়। আমরা দেখেছি অধিকার নামের একটি সংগঠন থেকে তথ্য উপাত্ত নেওয়া হয়েছে, আইন ও সালিশ কেন্দ্র থেকে নেওয়া হয়েছে এবং বিশেষ দুইটি পত্রিকা থেকে নেওয়া হয়েছে। এটা তো প্রতিবেদন নয়; বিভিন্ন জনের কনসার্ন- সেখানে বলা হয়েছে গুম-খুন বেড়েছে। বাস্তবতা তো দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশে যারা গুম হয়েছিল বলে কয়েকদিন আগে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল তার মধ্যে ১০ জন ফেরত এসেছে। ২০ জনের মতো দাগী আসামি হত্যা মামলাসহ পালিয়ে আছেন। কিছু গুম হয়েছে বিএনপি তখন ক্ষমতায় ছিল তাদের নামও তালিকায় রয়েছে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আরও বলেন, যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, অধিকার হেফাজতের যখন আন্দোলন হচ্ছিল তখন শত শত হেফাজত কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং আল জাজিরাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করেছিল। অন্যদের ছবি দিয়ে তারা সেগুলো প্রকাশ করেছিল। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, গ্রেপ্তারও হয়েছে। সেই সংগঠন যখন তথ্য উপাত্ত দেয় তখন সেটা ফল্ট। তো কোন সূত্র থেকে তথ্য নিচ্ছে সেটা হচ্ছে বড় বিষয়।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়েছে তখন; যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর, বিচার না হওয়ার জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করা হয়। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার জন্য হাজার হাজার সেনা সদস্যকে বিনা বিচারে হত্যা করেছে। তারপর খালেদা জিয়ার সময় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছে। তার জন্য একটা গাঁজাখুরি তদন্ত কমিটি হয়েছে। তবে সে মামলায় তারেক জিয়ার শাস্তি হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদÐ। অনেকের ফাঁসি হয়েছে। ২০১৩-১৪ ও ১৫ সালে যেভাবে মানুষ হত্যা করা হয়েছে, সেটা তো মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এগুলো প্রতিবেদনে আসা উচিৎ।
বনানী ও কুমিল্লা ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, অতি উৎসাহী হয়ে কেউ কিছু করে থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়টি দলের পক্ষ থেকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করলে সেখানে কারও বাধা দেওয়া সমীচীন নয় এবং বাধার দেওয়ার প্রশ্নও আসে না। প্রশাসন থেকে শুরু করে সবাই সহযোগিতা করছে তাদের। তবে, বিএনপি কি সব সময় সেটি করে? গত রবিবার চট্টগ্রামে নিজেরা নিজেরা চেয়ার ছোড়াছুড়ি করে সমাবেশে গন্ডগোল করেছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় তারা নিজেরা মারামারি করেছে। বনানীতে কি ঘটেছে সে বিষয়টি তদন্তাধীন। সেখানে বিএনপির আভ্যন্তরীণ কারণে ঘটেছে না তৃতীয় পক্ষ কেউ হামলা পরিচালনা করেছে। না কি অন্য কেউ করেছে। মূল কথা হচ্ছে, কোনো শান্তিপূর্ণ সমাবেশে কেউ বাধা দিক সেটি আমরা চাই না বা কখনো সমর্থন করি না।
বিষয়গুলো তদন্তাধীন। তদন্তে বেরিয়ে আসবে আসলে কি ঘটেছে। বিএনপি পুলিশের ওপর হামলা করেছে। বিএনপি নিজেরাই গন্ডগোল করে। সেক্ষেত্রে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হয়। তবে শান্তিপূর্ণ কোনো সমাবেশে কেউ বাধা দিক সেটা আমরা চাই না। বিএনপি যদি মানুষের ওপর, পুলিশের ওপর হামলা করে তাহলে তো পুলিশ চুপ করে বসে থাকতে পারে না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সাবেক সভাপতি বিএফইউজে’র সদস্য মনজুরুল আহসান বুলবুল। এছাড়া ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সহসভাপতি আসাদুজ্জামান সম্রাট ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ এবং দৈনিক সময়ের আলোর বিশেষ প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম সবুজ।