ফখরুলের বক্তব্যে মানুষও হাসে, হনুমানও হাসে

26

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের বক্তব্যে দেশের মানুষও হাসে, হনুমানও হাসে। মির্জা ফখরুল বললেন, সরকার নাকি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তার এ বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণ হয় কুমিল্লার ঘটনার পেছনে তাদের ইন্ধন ছিল। সরকার দেশ চালায়। সরকার সবসময় চায় দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। কিন্তু মির্জা ফখরুলের কথায় মনে হচ্ছে, তিনি বাংলাদেশের মানুষকে বোকা ভাবছেন।
গতকাল শনিবার বিকেলে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নুরুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শিমুল গুপ্তের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন তপু। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। কুমিল্লার ঘটনায় কারা মিছিল বের করেছে, সেই ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে আছে। তারা কোন দলের সমর্থক, তারা কোন মতাদর্শে বিশ্বাস করে, সেগুলো বের করে জনসমক্ষে আমরা প্রকাশ করব- ইনশাআল্লাহ। আমাদের এ দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা কোনভাবেই বিনষ্ট হতে দেব না।
তিনি বলেন, যারা বিশৃঙ্খলার সাথে যুক্ত ছিল, এখনো যুক্ত আছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা অপপ্রচার চালিয়েছে এবং চালাচ্ছে, সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কুমিল্লায় কারা ঘটনা ঘটিয়েছে, তা দিবালোকের মতো পরিষ্কার হবে এবং তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকার বদ্ধপরিকর।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে পাকিস্তান দীর্ঘশ্বাস ফেলে। তাদের প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করে বলেন, মানব উন্নয়ন, সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ সব সূচকে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে। একই সাথে মানব উন্নয়ন, সামাজিক সূচকসহ মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে আমরা ভারতকেও পেছনে ফেলেছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা পঞ্চমুখ সারাবিশ্ব। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা আগেই অর্জন করার জন্য জাতিসংঘ জননেত্রী শেখ হাসিনাকে পুরস্কৃত করেছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ প্রশংসা করছেন- এসব অনেকের পছন্দ হয় না।
ড. হাছান বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা পছন্দ হয়নি বিধায় নানা ষড়যন্ত্র হয়। বিএনপি-জামায়াত রাজনৈতিকভাবে শেখ হাসিনাকে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। কুমিল্লায় যে ঘটনা ঘটিয়ে সারাদেশে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেয়া হয়েছে এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। এর পেছনে বিএনপি-জামায়াতসহ ধর্মান্ধ গোষ্ঠী যুক্ত। তারা এ ঘটনা ঘটিয়ে সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার তা কঠোর হস্তে দমন করেছে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেতা বিনির্মাণের কারখানা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে এবং পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে হাতে বই-খাতা এবং কলম তুলে দিয়েছিলেন। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে তিনি সবসময় অনুপ্রেরণা দেন। ছাত্রলীগ করার পাশাপাশি লেখাপড়ায় যেন সবাই মনযোগী থাকে। ছাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে যেন লেখাপড়ার ক্ষতি না হয়, সবসময় সেই পরামর্শ দেন তিনি।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়। ছাত্রলীগের ভাইবোনদের বিনয়ী হতে হবে। কারণ উদ্যত আচরণ কেউ পছন্দ করে না। পাশাপাশি লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করতে হবে। লেখাপড়া বাদ দিয়ে শুধু ছাত্রলীগের কাজ করার প্রয়োজন নেই।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা স্বজন কুমার তালুকদার, আবুল কাশেম চিশতী, শাহজাহান সিকদার, নজরুল ইসলাম তালুকদার, মুহাম্মদ আলী শাহ, ডা. মোহাম্মদ সেলিম, আকতার হোসেন খাঁন, শফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, গিয়াস উদ্দিন খাঁন স্বপন, যুবলীগের সভাপতি আরজু সিকদার প্রমুখ।
পূর্বদেশের রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি জানান, উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠত হয়নি। এছাড়া গতকাল উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিও ঘোষণা করা হয়নি। সংগঠনের নেতারা বলেন, পরে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।