প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা প্রস্তুতি : প্রয়োজনীয় পরামর্শ

281

প্রিয় শিক্ষার্থীরা,কেমন আছো?আশা করছি পরীক্ষা প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছো। লেখার শুরুতে তোমাদের সফলতা কামনা করছি। ক’দিন পর থেকেই (১৭ নভেম্বর) দেশব্যাপী শুরু হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা। এজন্য আজ কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেব। তোমরা জানো যে সবধরণের গঈছ টাইপ প্রশ্ন থাকছেনা। প্রশ্নপত্র প্রণীত হবে শতভাগ যোগ্যতার ভিত্তিতে। বিদ্যালয়গুলোতে ইতোমধ্যে প্রস্তুতিমূলক নানা মূল্যায়ন/ মডেল টেস্ট/ চূড়ান্ত মডেল টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। নানা কারণে অনেক ছাত্র/ ছাত্রী যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্নোত্তরের সাথে নিজেদের পুরোপুরি খাপ খাইয়ে নিতে পারেনা। এরপরও চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত। পরীক্ষায় এ+ পেতে হলে ৬টি বিষয়ের (বাংলা, ইংরেজি,গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়,প্রাথমিক বিজ্ঞান এবং ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা) প্রত্যেকটিতে আলাদভাবে ৮০ নম্বর বা তারও অধিক নম্বর পেতে হবে।
এখানে একটি কথা জানিয়ে রাখি, তা হলো মোট নম্বর যার যত বেশি হবে তার বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনাও ততটুকু বাড়বে। যে জন্য কঠোর পাঠ অনুশীলন ও পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। বিশেষ করে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলোর ব্যাপারে অধিক যতœবান হতে হবে। কারণ,এখানে সব শুদ্ধ উত্তরের জন্য নম্বর কাটার সুযোগ থাকে না, যা পরীক্ষক দিতে বাধ্য থাকেন। রচনামূলক প্রশ্নগুলোর পাশে দেওয়া পূর্ণমান দেখে তার সাথে সামঞ্জস্য করে উত্তর লিখতে হয়। এখানে অতিরিক্ত বা কম লেখার সুযোগ থাকে না।খেয়াল রাখতে হয় সময়ের দিকেও।
একটা কথা মনে রাখতে হবে, পরীক্ষার খাতায় যা লিখবে তার মাঝে যতটুকু শুদ্ধ হবে ততটুকুতে অবশ্যই নম্বর পাবে। তাই যা লিখবে তা যেন সঠিক ও শুদ্ধ হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়। যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্নের উত্তর প্রশ্নে দেওয়া তথ্যের আলোকে লিখতে হবে।যথাযথ হলে পূর্ণ নম্বর পাওয়া যাবে।কখনোই প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। অবশ্য, একটু বুঝে লেখার চেষ্টা করবে। যদিও প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারীগণ পরীক্ষা উপযোগী প্রশ্ন তৈরি করার চেষ্টা করে থাকেন। পরীক্ষায় প্রত্যেক বিষয়ে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।ইচ্ছাকৃতভাবে কোন প্রশ্নের উত্তর যেন বাদ না পড়ে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। ভালো রেজাল্ট করতে হলে প্রত্যেক প্রশ্নের উত্তর সঠিক ও যথাযথ হওয়া চাই। মেধাবীদের অবশ্য আরো ভালো করতে হবে। কারণ,এ পরীক্ষা থেকেই প্রাথমিক বৃত্তি প্রদানের জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়। তবে অনেকে মনে করেন, আগের নিয়মে আলাদা করে বৃত্তি পরীক্ষা চালু করলে মেধাবীদের সহজে যাচাই করার সুযোগ থাকতো।অথচ এখন তো সব ছাত্রের উপযোগী করে প্রশ্ন তৈরি করতে হয়। খেয়াল রাখতে হয় সবদিক। প্রস্তুতি শেষের দিকে হলেও পরীক্ষা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে তার গতি আরো বাড়াতে হবে। নতুন করে শেখার তেমন কিছু নেই। যা পড়েছো,শিখেছো তা ভালভাবে আয়ত্ত করতে প্রচুর অনুশীলনের কোন বিকল্প নেই। রিভিশনের ওপর থাকতে হবে। ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিত সাময়িক পরীক্ষা ও মডেল টেস্টের
প্রশ্নগুলো বারবার দেখা যেতে পারে। করা যেতে পারে পুনর্মূল্যায়ন। এসবের ফলে ছোটখাটো ভুল সংশোধন করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। সম্পূর্ণরূপে বাদ রাখতে হবে খেলাধুৃলা, টিভি দেখা,বেড়ানো ইত্যাদি। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতনতা ও কঠোরতা জরুরি। সন্তানের জীবন সঠিক ও সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে মা-বা অভিভাবকের ভূমিকা অপরিসীম যা কোনভাবে এড়ানো যায় না। সে জন্য জীবনের প্রতি পদক্ষেপে সন্তানের শিক্ষা গ্রহণ যেন কোনভাবে বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে যেন কোন ধরনের ঘাটতি না থাকে সে ব্যাপারে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। পাশাপাশি পরীক্ষার্থীর ঘুম,স্বাস্থ্য ইত্যাদির প্রতিও নজর দিতে হবে। আজ আর নয়। পরে আবারো কথা হবে। ধন্যবাদ সবাইকে।
লেখক : শিক্ষক