প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ে জীবন বাঁচে

8

পূর্বদেশ ডেস্ক

দেশের নেতৃস্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা গতকাল শনিবার এক সম্মেলনে জীবন বাঁচাতে প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, সচেতনতার অভাব ও সামাজিক কলঙ্কের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ ঘাতক রোগটি অগ্রসর পর্যায়ে শনাক্ত করা হয়। তারা নগরীর একটি হোটেলে চতুর্থ বাংলাদেশ ব্রেস্ট ক্যান্সার কনফারেন্স-২০২২-এ বলেন, দেরিতে শনাক্তকরণ এবং স্বাস্থ্যসেবা সুবিধার সীমিত সুযোগসহ অনেক কারণ বাংলাদেশে স্তন ক্যান্সার রোগী বৃদ্ধির জন্য দায়ী। খবর বাসস।
বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টাডি (বিএসবিসিএস) এই সম্মেলনের আয়োজন করে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান চিকিৎসকরা এতে অংশ নেন। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির মেডিসিন অ্যাÐ সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডন এস ডিজন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ক্যান্সার রিসার্চ অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. স্বপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজিএইচএস) অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএসবিসিএস সভাপতি অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান চৌধুরী, সহ-সভাপতি ডা. মো. সেলিম রেজা এবং বিএসবিসিএস-এর পৃষ্ঠপোষক অধ্যাপক ডা. সানওয়ার হোসেন।
ডন এস ডিজন বলেন, স্তন ক্যান্সার একটি শীর্ষ ক্যাটাগরির ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে এবং বাংলাদেশে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই এটি তৃতীয় প্রাণঘাতী রোগ।
ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (আইএআরসি) পরিচালিত গবেষণায় জানা গেছে, জনগণের অসচেতনতা ও ভুল পরীক্ষণ, দুর্বল আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো এবং পরিবেশের কারণে বাংলাদেশে ৬৫.৫ শতাংশ স্তন ক্যান্সারের রোগীর রোগ নির্ণয়ে ছয় মাসেরও বেশি সময় বিলম্বিত হয়। এটি ক্রমে বাড়ছে।
ডা. কামরুজ্জামান বলেন, বিশ্বব্যাপী এবং বাংলাদেশেও মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার রোগ সবচেয়ে বেশি দেখা দিচ্ছে। স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য সার্জারি, কেমোথেরাপি, হরমোনাল থেরাপি এবং ইমিউনোথেরাপির মতো বহুমুখী পদ্ধতির প্রয়োজন।
ডা. সানওয়ার বলেন, স্তন ক্যান্সার বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যমান ক্যান্সার এবং একটি লুকানো মানসিক চাপ, যা ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর ৬.৬%-এর জন্য দায়ী। ৩৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী বাংলাদেশী নারীদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
ডিজিএইচএস সূত্র জানিয়েছে, প্রতি বছর ১২,০০০ জনেরও বেশি রোগী নতুনভাবে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং মৃত্যুর হার বেড়ে প্রায় ৭,০০০-এ দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে তিনটি ক্যান্সার হাসপাতাল রয়েছে এবং সরকার খুব শিগগির দেশে আরও পাঁচটি ক্যান্সার হাসপাতাল স্থাপন করবে।