প্রাণ-প্রকৃতিতে ভরা সিআরবিতে কোনো স্থাপনা নয়

11

 

প্রায় ত্রিশ লক্ষাধিক মানুষের প্রাণের জায়গা এক টুকরা সবুজ নিরিবিলি ভূমি চট্টগ্রামের সিআরবি। ব্রিটিশ আমল থেকেই এই জায়গাটি প্রাণ, প্রকৃতিতে ভরা। বড় বড় শিরিষ গাছগুলো এখনো সেখানে কালের সাক্ষী হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বলা হয়ে থাকে সিআরবির এক একটা শিরিষ গাছের বয়স এক’শ থেকে দু’শ বছর পর্যন্ত হবে, এমন একটি প্রকৃতিময় জায়গায় বেসরকারিভাবে একটি বৃহৎ হাসপাতাল গঠনের উদ্যোগকে চট্টগ্রামবাসী মোটেই মেনে নিতে পারছেনা। আসলে বিষয়টি মেনে নেয়ার কথাও নয় কারণ চট্টগ্রামবাসীর একমাত্র বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক চর্চা করার জায়গা হচ্ছে এই সিআরবির শিরিষতলা। পহেলা বৈশাখসহ যেকোনো অনুষ্ঠান এই সিআরবিতে করা হয় সেখানে হাসপাতাল হলে চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক চর্চা থেমে যাওয়াসহ ধ্বংস হবে এর প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য। প্রকৃতপক্ষে চট্টগ্রামবাসীর জন্য হাসপাতালের প্রয়োজনও রয়েছে তবে তা এমন ইতিহাস, ঐতিহ্য, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে নয়, আর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড -এর সাথে যে হাসপাতাল স্থাপনের মেগাপ্রকল্প হাতে নিয়েছে তাতে যে চট্টগ্রামের কোনো গরিব রোগী প্রবেশও করতে পারবেনা তা প্রকল্পের মেপ দেখেই আঁচ করা যায় ফলে উক্ত হাসপাতালটি চট্টগ্রামের অন্যকোনো জায়গায় হলে চট্টগ্রামের মানুষের কোনো অভিযোগও থাকবেনা। মূলতঃ চট্টগ্রামের সিআরবি এরিয়াটি শুধু একটি উন্মুক্ত জায়গাই নয় এই জায়গারটির প্রতি জড়িয়ে আছে চট্টগ্রামের মানুষের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং ভাবাবেগ। ফলে এখানে কোনো স্থাপনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া মানেই চট্টগ্রামের মানুষের ভাবাবেগ নিয়ে খেলা করা। এবিষয়ে ইতিমধ্যে চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনেরাসহ আপামর জনসাধারণ এক হয়ে সিআরবিতে কোনো স্থাপনা না করার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এবং এই আন্দোলন যথেষ্ট যুক্তিসংগত বিধায় ইতিমধ্যে পুরো চট্টগ্রামবাসী বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাজবিজ্ঞানী শ্রদ্ধেয় ড. অনুপম সেন- এর নেতৃত্ব এক হয়েছে। ফলে এবিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ একটি দ্রæতই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেবেন এটাই প্রত্যাশা করে চট্টগ্রামবাসী।