প্রসবপূর্ব প্রস্তুতি

6

ডা. সোমা চৌধুরী

গর্ভাবস্থা একটি আনন্দঘন অনুভূতি। প্রথম গর্ভাবস্থার অনুভূতি এবং একাধিকবার গর্ভবতী হওয়ার অনুভূতি কিন্তু এক নয়। একটি শিশু যখন প্রথম স্কুলে যায় তখন তার মধ্যে অজানা এক শঙ্কা কাজ করে। অর্থাৎ অজানা ভয় আর অনভিজ্ঞতা, জীবনের নতুন একটি অধ্যায়। তবে যে কোনো যাত্রার প্রাক্কালে আমাদের কিছু পূর্বপ্রস্তুতি প্রয়োজন।
গর্ভাবস্থায় নয় মাসের একটি যাত্রা তার সঠিক গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য ডেলিভারীর পূর্বে কিছু অত্যাবশ্যকীয় প্রস্তুতি দরকার। কারণ কিছু প্রস্তুতি আগে নিয়ে রাখলে পুরো গর্ভকালীন সময়টা অনেক নিশ্চিন্তে থাকা যায় এবং পথটি হয় মসৃণ আর গুছানো। এই প্রস্তুতিই প্রসবকালকে নিরাপদ রাখতে পারে।
যে বিষয়গুলো গর্ভবতী মায়ের ও পরিবারের সদস্যরা আগে থেকে ঠিক করে রাখতে পারেন তা হলো-
কোথায় এবং কাকে দিয়ে ডেলিভারি করাবেন?
প্রশিক্ষিত দক্ষ কর্মী/পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা /মিডওয়াইফ /নার্স /চিকিৎসক /বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। আগে থেকেই এদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে মোবাইল নম্বর সংগ্রহে করে রাখতে হবে।
কীভাবে যাবেন?
আগেই সেবা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য যানবাহন ঠিক করে চালকের মোবাইল নম্বর জেনে রাখতে হবে। বাড়িতে প্রসব পরিকল্পনা না করাই নিরাপদ।
টাকা-পয়সা
আগে থেকে সঞ্চয় করে রাখা প্রয়োজন।
রক্ত
রোগীর রক্তের একই গ্রæপের মানুষ মিলিয়ে রাখতে হবে। যিনি প্রয়োজনে রোগীকে রক্ত দান করবেন।
কে যাবে?
শক্ত-সামর্থ্য, মধ্য বয়সী, স্মার্ট, কিছুটা পড়াশোনা জানা এমন সঙ্গী বেছে নেওয়া উত্তম।
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ব্যাগ
মা এবং নবজাতকের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তালিকা কওে সেবা কেন্দ্রে যাওয়ার আগেই পৃথক দুটি ব্যাগে গুছিয়ে রাখলে অযথা তারাহুড়া হবে না।
উপরের বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে মাথায় রেখে গর্ভবতী মায়ের পরিবারের সদস্যরা একটু সচেতন থাকলে গর্ভবতীর ও গর্ভের সন্তানের বিপদ অনেকাংশেই কম হয় এবং প্রসবের পূর্ব প্রস্তুতির মাধ্যমে আমরা সুস্থ মা ও সুস্থ শিশু নিশ্চিত করতে পারি।

লেখিকা: এমবিবিএস, ডিজিও (বিএসএমএমইউ),
প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ।