প্রসঙ্গ: বাঁশখালী প্রধান সড়ক সড়ক দূর্ঘটনা হতে মুক্তিচায় সর্বস্তরের মানুষ

67

সারাদেশে সড়ক দূর্ঘটনা একটি নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত যাওয়ার প্রতিযোগিতা, সড়ক আইন লঙ্ঘন, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, চালকের অদক্ষতা ইত্যাদি বিষয় সড়ক দূর্ঘটনার মূল কারণ। সারাদেশে সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছে না। দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলো মৃত্যুক‚পে পরিণত হয়েছে। মনে হয় যেন করার কিছু নেই। সড়কে যান জট, অবৈধ গাড়ি পার্কিন, সড়কের উপর বাসস্ট্যান্ড ইত্যাদি তো আছেই তার উপর হরেক রকম গাড়ির আধিক্য, ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন, রাস্তার উপর বাজার, সীমিত সড়কে বড় গাড়ির আধিক্য ও সড়ক দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ। দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, গাড়ি মালিক সমিতি ও গাড়ির শ্রমিক সমিতির অনিয়ম ও দৌরাত্ম্য থামানো যাচ্ছে না দেশে।
সড়ক আইন আছে কিন্তু আইন জানা ও মানার কোন বালাই নেই গাড়ি চালকদের। প্রতিযোগিতার মনোভাব এবং কার আগে কে গন্তব্যে পৌঁছবে এমন পড়িমরি অবস্থা দেশের সড়কগুলোকে নিরাপদ হতে দিচ্ছে না। বর্তমানে সড়কে হেঁটে কিংবা গাড়িতে চলাচল করতে গিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফেরা কিংবা গন্তব্যে পৌঁছা নিয়ে সর্বস্তরের মানুষ এক চরম উৎকণ্ঠায় দিন অতিবাহিত করছে। সড়কের আইন শৃঙ্খলা দেখার দায়িত্বে যারা কাজ করে তাদের অনিয়ম ও দূর্নীতি বর্তমানে আকাশ চুম্বী। দেশের প্রচার মাধ্যমগুলোতে প্রতিনিয়ত প্রতিবেদন প্রকাশ পাচ্ছে সড়ক দূর্ঘটনা বিষয়ে। কিন্তু কিছুতে কিছু হচ্ছে না। থামছে না সড়কে মৃত্যুর হার। গণপরিবহন থেকে শুরু করে প্রাইভেট গাড়ি পর্যন্ত সব ধরনের গাড়ি দূর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে দেশে। ‘সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি’ এমন ¯েøাগান বাসগুলোতে লিখা থাকে কিন্তু চালক নিজেই এমন নীতি বাক্যের তোয়াক্কা না করে গাড়ি চলায়। সড়কে গাড়ি সমূহের চালকদের সেচ্ছাচারিতার কারণে অধিকাংশ দূর্ঘটনা ঘটে থাকে।
দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার এক প্রতিবেদন হতে জানা যায়- সম্প্রতি চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার প্রধান সড়কে ভয়াবহ হারে সড়ক দূর্ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। ১৫ দিনে তিন মটর সাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। অর্ধ শথাধিক লোক আহত হয়েছে। বর্তমানে বাঁশকালী সড়ক একটি ব্যস্ততম সড়ক। এ সড়কে বাঁশখালীর যাত্রীবাহী গাড়ি ছাড়াও সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালীর যাত্রীরা যাতায়াত করছে। বাঁশখালী আন্তঃ উপজেলা গাড়ি সার্ভিস ছাড়াও এস আলম, সান লাইন, হাজার হাজার সিএনজি অটো রিক্সা, পণ্যবাহী ট্রাক, বেটারি চালিত অটোরিক্সা, মটর সাইকেলসহ বিভিন্ন গাড়ির চলাচল অধিক্যে বাঁশখালী প্রধান সড়কে সাধারণ মানুষ চলাচলের পরিবেশ হারিয়ে ফেলেছে। সড়কটিতে যে পরিমাণ ছোট বড় গাড়ি চলাচল করছে সে পরিমাণ সড়কটি প্রশস্ত নয়। এস আলমের মতো অভিজাত বড় আকারের গাড়ি যে সড়কে চলছে সে তুলনায় বাঁশখালী প্রধান সড়ক খুবই ছোট। বড় দু’টি গাড়ি ক্রস হয়ে যাওয়ার মতো স্পেস অনেক স্থানে এ সড়কে নেই। তা ছাড়া সড়কের উপর দোকানপাট, বাজার ও অবৈধ গাড়ি পার্কিং, সড়কটির দূর্ঘটনার সমূহ কারণে পরিণত। মটর সাইকেল এবং সিএনজি অটো রিক্সা চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর তেজদীপ্ততা এ দূর্ঘটনাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। মাটি, মাছ ও লবণের ট্রাক-মিনিট্রাক কে অনেকে মটর সাইকেল দূর্ঘটনার কারণ হিসেবে ব্যাপক ভাবে প্রচার করছে।
যে সকল যৌবনদীপ্ত যুবক মটর সাইকেলে বসে বিমানের গতিতে উড়ে যেতে চায় তারাও তাদের আত্মঘাতি মৃত্যুকে আহবান জানায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে। সড়কের মেজাজ ও পরিবেশ বোঝে গাড়ি চালানো সকলের কর্তব্য। এ কর্তব্য বোধ সব ধরনের গাড়ি চালক থাকা উচিৎ। বাঁশখালী সড়কে অসংখ্য সিএনজি অটো রিক্সা চলে। গাড়িগুলোর বৈধ কোন কাগজপত্র যেমন নেই তেমনি চালকদেরও লাইসেন্স নেই। এ সিএনজি অটোরিক্সা চালকরা সেকেন্ড পরিমাণ সময় ধর্য্য ধারণ করতে দেখা যায় না। যেমন খুশি তেমন করে দ্রুততার সাথে গাড়ি চালিয়ে অধিকাংশ দূর্ঘটনার কারণ হয়ে ওঠে। বাঁশখালী প্রধান সড়কে সিএনজি ও মটর সাইকেল চালকদের আবেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য আইনি ব্যবস্থাগ্রহণ জরুরি। তা ছাড়া বাঁশখালী প্রধান সড়ককে অবস্থার প্রয়োজনকে মাথায় রেখে দ্বিগুণ প্রশস্ত করা প্রয়োজন। বাঁশখালীর প্রশাসনসহ সড়কের সচেতনতা বাঁশখালী প্রধান সড়কের বর্তমান ব্যাপক সড়ক দূর্ঘটনা নিয়ন্ত্রিত হতে পারে। সড়কের সম্প্রসারণে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে সময়ের প্রয়োজনে- এমন ধারণা বাঁশখালীর সর্বস্তরের মানুষের।