প্রবাসীর সন্তান ও পরিবারকে ৫ কোটি টাকার চেক বিতরণ

4

মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে সপ্তাহব্যাপী ‘মুক্তির উৎসব ও সুবর্ণজয়ন্তী মেলা’র আয়োজন করা হয়েছে।
গত ১৭ মার্চ শুরু হওয়া এই মেলার ৫ম দিন গতকাল সোমবার সকাল ১১টায় প্রবাসী কর্মীর মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি ও কোভিডকালীন সৌদি আরবগামী কর্মীর পরিবারের মাঝে হোটেল কোয়ারেন্টিন খরচ প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে।
বিগত ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত এস.এস.সি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ প্রবাসীর ১২১ জন মেধাবী সন্তানকে জনপ্রতি ২৭ হাজার ৫শ’ টাকা করে মোট ৩৩ লক্ষ ২৭ হাজার ৫শ’ টাকা ও কোভিড-১৯ চলাকালীন সময়ে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার সৌদি আরবগামী ২০৩৩ জন কর্মীর পরিবারকে হোটেল কোয়ারেন্টিন ভর্তুকি বাবদ জনপ্রতি ২৫ হাজার টাকা করে মোট ৫ কোটি ৮ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চেক বিতরণ করেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক (প্রশাসন ও উন্নয়ন) ও যুগ্ম সচিব মুশাররাত জেবীন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ডের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মো. নাজমুল হক ও সহকারী পরিচালক মো. আমিনুল হক। চেক গ্রহীতার পক্ষে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী আশফিয়া কানিজ নিহা ও প্রবাসী পরিবারের সদস্য মো. আবু তাহের।
ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ডের অর্থায়নে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহযোগিতায় চেক বিতরণ করা হয়। এছাড়া কক্সবাজার জেলার ৬২৩ জন সৌদি আরবগামী কর্মীর পরিবারকে হোটেল কোয়ারেন্টিন খরচ বাবদ ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ও প্রবাসী কর্মীর ৩৭ জন মেধাবী সন্তানকে শিক্ষা বৃত্তি বাবদ আরও ৭ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা চেক মূলে প্রদান করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক (প্রশাসন ও উন্নয়ন) ও যুগ্ম সচিব মুশাররাত জেবীন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণে জেলা জনশক্তি-কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরো ও সাথে ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ড নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ দেশ থেকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিশ্বের কোন কোন দেশে কর্মী পাঠানো যায় সে লক্ষ্যে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক। বিদেশে গিয়ে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা রয়েছে। অসুস্থতার গুরুত্ব বুঝে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা খরচ সরকারিভাবে দেয়া হয়। পাশাপাশি প্রবাসে কেউ মারা গেলে তাদের মরদেহ দ্রুত দেশে আনার ব্যবস্থা করা হয়। বিমানবন্দর থেকে মরদেহ নিজ এলাকায় নিয়ে যেতে কারও সামর্থ্য না থাকলে তাদের জন্য ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সেবা দেয়া হয়। মরদেহ দাফন বা সৎকারের জন্য সর্বোচ ৩৫ হাজার টাকা দেয়া হয়। বৈধভাবে বিশেগমণকারী মৃত কর্মীর পরিবারকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রবাসী কর্মীর প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধী ভাতা চালু করেছেন। কোন প্রবাসীর জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও অন্যান্য সমস্যা থাকলে তা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। যারা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈধভাবে বিদেশে গিয়ে ফেরত আসছে তাদের পাশে রয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। প্রবাসে সমস্যাগ্রস্ত নারী কর্মীদের সেইফ হোমে আশ্রয় প্রদানসহ প্রয়োজনে নিরাপদে দেশে আনার সহায়তা প্রদান করা হয়।