প্রবাসীবান্ধব হবে পুলিশ

175

পুলিশ প্রবাসীদের বন্ধু হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা। প্রবাসীদের আইনগত সমস্যা সমাধানে প্রবাসী সহায়তা ডেস্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন। গতকাল জেলা পুলিশ লাইনের সিভিক সেন্টারে কেক কেটে এ ডেস্কের উদ্বোধন করা হয়। ডেস্কে তাৎক্ষণিক যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বর, ই-মেইল, ফেসবুক, ফ্যাক্স মাধ্যমও উন্মুক্ত করা হয়।
পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা বলেন, ঢাকায় প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক আছে। সেখান থেকে আমাদের কাছে অনেক অভিযোগ আসে। যা অনেকদূর ঘুরে আসার কারণে কাজ করা কঠিন হয়। এতে বিভিন্ন রকম সমস্যা আমরা দেখতে পাই। এরমধ্যে বেশি আসে প্রবাসীদের জায়গা-জমি দখল করছে এমন অভিযোগ। একশ্রেণির সিন্ডিকেট জায়গা দখল করে। জমিজমার প্রতি আগ্রাসন থাকে বেশি। আমাদের থানায় কিছু দুষ্টু লোক আছে, যারা স্থানীয় লোকদের সাথে মিলিত হয়ে প্রবাসীদের হয়রানি করে।
থানা ও সার্কেলের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশকে ভালো ব্যবহার করতে হবে। প্রত্যেক থানায় একই সাথে হেল্পডেস্ক চালু করা হবে। আমাদের অনেক সমালোচনা থাকতে পারে। প্রতিদিন ১৮-২০ ঘন্টা কাজ করি বলেই এমন সমালোচনা হয়। কাজ করলে সমালোচনা হবেই।
বিমানবন্দরে পুলিশি হয়রানি ও মধ্যপ্রাচ্যে ইয়াবা পাচার নিয়ে প্রবাসীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসে চিঠি পাঠাবো। প্রবাসে যাতে আমরা লজ্জা না পাই সেদিকে নজর রাখবো। কিভাবে এ জিনিসগুলো সেখানে যায় তা দেখতে বলবো।
সর্বোপরি বিমানবন্দরে যাতে পুলিশ কোনোধরনের হয়রানি না করে সেদিকটায় আমরা লক্ষ্য রাখবো। সংগঠন কিংবা প্রবাসী কমিউনিটি নিয়ে কাজ করে এমন ব্যক্তিদের তালিকা পুলিশের কাছে জমা দিতে অনুরোধ জানান তিনি।
আবুধাবীতে বসবাসকারী বাঙালি কমিউনিটি নেতা ইফতেখার হোসেন বাবুল বলেন, ২০১৩ ও ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী আরব আমিরাত সফরে গেলে আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক খোলার দাবি জানাই। মন্ত্রীদের সফরেও প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক খোলার দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার আমাদের সে দাবিকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ করলে পুলিশের প্রতি প্রবাসীদের আরো বেশি আস্থা বাড়বে।
ওমান প্রবাসী ইয়াছিন চৌধুরী সিআইপি বলেন, আমাদের চেহারা দেখে সমগ্র প্রবাসীদের জীবনমান বিবেচনা করা যাবে না। যারা প্রবাসে আছেন তাদের অধিকাংশই অত্যন্ত নিরীহ। অনেক কষ্ট করে দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখেন। দেশে আসার পর সমাজে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হন প্রবাসীরা। এখানে পুলিশের ভূমিকা থাকা চাই। কিছুদিন ধরে গাঁজা-ইয়াবার চালান ওমানে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এ প্রবাসী।
জাপান প্রবাসী নগর পরিকল্পনাবিদ গাজী হাবিব সিআইপি বলেন, বাংলাদেশ আমদানি নির্ভর দেশ। প্রত্যেক জিনিস আমদানি করতে হয়। প্রবাসীরা অনেক পরিশ্রম করেন বলেই আজকে দেশে রিজার্ভ বেড়েছে। রিজার্ভ ব্যালেন্স কমে আসলে এলসি করা যাবে না। ডলারকে সিকিউর করছেন প্রবাসীরা। আমাদের প্রবাসীদের কোনো প্লাটফর্ম নেই। প্রবাসী সহায়তা ডেস্কের মাধ্যমে সে ধারার কিছুটা সূচনা হলো।
চট্টগ্রাম জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও প্রশাসন) একেএম এমরান হোসেন ভুঁইয়ার পরিচালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন, কাতার প্রবাসী নুর মোহাম্মদ, আবদুল জলিল, মো. আরব আমিরাত প্রবাসী সেলিম উদ্দিন, ওমান প্রবাসী জসীম উদ্দিন, আবুধাবী প্রবাসী নাছির তালুকদার, মো. আলাউদ্দিন, মোসাদ্দেক চৌধুরী, দুবাই প্রবাসী আলম সিকদার, ডা. নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।
ডেস্কে যোগাযোগ : চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের প্রবাসী সহায়তা ডেস্কের হটলাইন নম্বর ০১৭৬৯৬৯৪২৭৪। ই-মেইল- ংঢ়পযরঃঃধমড়হম@ঢ়ড়ষরপব.মড়া.নফ । ফ্যাক্স +৮৮০৩১-৭২৬৮৬৬।