প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম আসছেন আজ টানেল যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ

123

এবার টানেল যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে যাওয়া এই টানেল চট্টগ্রামের দুই প্রান্তকে সংযুক্ত করবে। এর মাধ্যমে ট্রান্স এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হওয়ার পথে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। নদীর তলদেশে সুড়ঙ্গ করার কাজে ব্যবহার করা হবে অত্যাধুনিক টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম)।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রবিবার চট্টগ্রাম আসছেন। তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর এটা চট্টগ্রামে তার প্রথম সফর। তিনি আজ চট্টগ্রামে দু’টি মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেলের মূল খনন কাজ উদ্বোধন এবং লালখানবাজার-বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। পরে তিনি এক সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন বলে জানা গেছে।
জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াছ হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রবিবার দু’টি মেগা প্রকল্পের কাজ উদ্ধোধন করবেন। পরে তিনি সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। এ জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
একই দিন টিবিএম মেশিন দিয়ে সুড়ঙ্গ পথ তৈরির কাজ শুরু হবে। ১১ বছর আগে চট্টগ্রাম সফরে এসে টানেলের স্বপ্নের কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। যা এবার বাস্তব হতে যাচ্ছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে মাল্টি লেন রোড টানেল নামে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, রবিবার (আজ) প্রধানমন্ত্রী টিবিএম দিয়ে টানেল খনন কাজের উদ্বোধন করবেন। এর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
নকশা অনুযায়ী, টানেলের প্রবেশ পথ হবে এয়ারপোর্ট থেকে কর্ণফুলী নদীর দুই কিলোমিটার ভাটির দিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজের সামনে। তারপর আড়াই কিলোমিটার মাটির তলদেশ দিয়ে চার লেনের সড়ক যাবে। টানেলের বহির্গমন পথ হবে আনোয়ারা প্রান্তে সার কারখানার কাছে। চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড বাংলাদেশের প্রথম টানেল নির্মাণ কাজ করছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কর্ণফুলী টানেলের মূল খনন কাজ শুরু করার সকল প্রস্তুতি চ‚ড়ান্ত। মাটি খুঁড়ে টিউব ঢোকাতে চীন থেকে এসে গেছে ৯৪ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২২ হাজার টন ওজনের বোরিং মেশিন। দুটি টিউবের মধ্যে প্রতিটি টিউব চওড়ায় হবে প্রায় ৩৫ ফুট এবং উচ্চতা হবে প্রায় ১৬ ফুট। ফলে বড় যানবাহন চলাচলেও কোন সমস্যা হবে না। প্রতিটি টিউবে দুটি স্কেল থাকবে, যানবাহন চলাচল করবে দুই লাইনে। পাশে থাকবে একটি সার্ভিস টিউব। টিউব দুটির মাঝখানে দূরত্ব থাকবে ১১ মিটার।
দেশের প্রথম কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের কাজ দিন দিন দৃশ্যমান হচ্ছে। এক সময় চট্টগ্রামের মানুষের কাছে বিষয়টি একেবারেই অবিশ^াস্য মনে হতো। কিন্তু পদ্মা সেতুর মতোই এ প্রকল্পটি নির্মাণে সরকার সব সময়ই অনড় অবস্থানে ছিল। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রæতি পূরণে খুশি বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টানেলের নির্মাণ কাজ শেষ হলে বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ আন্তর্জাতিক রুটের সঙ্গে যুক্ত হবে এই টানেল। ফলে বাড়বে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও। প্রথম বছর এই টানেল দিয়ে ৬৩ লাখ যানবাহন চলাচলের সুযোগ পাবে।
তারা জানান, তিন কিলোমিটারের বেশি দৈর্ঘ্য এই টানেলের নদীর তলদেশে গভীরতা হবে ১৮ থেকে ৩১ মিটার। মোট দুটি টিউব নির্মিত হবে। এর একটি দিয়ে গাড়ি শহরপ্রান্ত থেকে প্রবেশ করবে, আরেকটি টিউব দিয়ে ওপার থেকে শহরের দিকে আসবে। টানেলের প্রতিটি টিউব চওড়ায় হবে ১০ দশমিক ৮ মিটার বা ৩৫ ফুট। উচ্চতায় হবে ৪ দশমিক ৮ মিটার বা প্রায় ১৬ ফুট।
উল্লেখ্য, কর্ণফুলী নদী চট্টগ্রাম শহরকে দুইভাগে বিভক্ত করেছে। এক ভাগে রয়েছে নগর ও বন্দর এবং অপর ভাগে রয়েছে ভারি শিল্প এলাকা। কর্ণফুলী নদীর উপর ইতোমধ্যে তিনটি সেতু নির্মিত হয়েছে, যা প্রচুর পরিমাণ যানবাহনের জন্য যথেষ্ট নয়। নদীর মরফলজিক্যাল বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর তলদেশে পলি জমা একটি বড় সমস্যা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যকারিতার জন্য বড় হুমকি। এই পলি জমা সমস্যার মোকাবেলা করার জন্য কর্ণফুলী নদীর উপর আর কোন সেতু নির্মাণ না করে এর তলদেশে টানেল নির্মাণ করা প্রয়োজন। এজন্য সরকার চট্টগ্রাম জেলার দুই অংশকে সংযুক্ত করার জন্য কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়।
বর্তমানে সেখানে চলছে কর্মযজ্ঞ। তলদেশে মাটি খুঁড়ে টিউব ঢোকানোর জন্য চীন থেকে আনা হয়েছে অত্যাধুনিক বোরিং মেশিন। ৯৪ মিটার দীর্ঘ ও ২২ হাজার টন ওজনের এই মেশিন প্রকল্প এলাকায় পৌঁছেছে গত বছরের জুলাই মাসে। জাহাজে করে চীন থেকে আসা বিভিন্ন অংশ ফিটিং শেষে বোরিং মেশিনটি খননের কাজে লাগানো হচ্ছে।
চট্টগ্রামে দেশের প্রথম টানেল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি এসেছিল ২০০৮ সালে। লালদীঘি মাঠের এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রতিশ্রুতি দেন। প্রথম প্রথম বাংলাদেশের জন্য প্রায় অসম্ভব মনে করে বিষয়টিকে ‘শুধুই জনসভার প্রতিশ্রুতি হিসেবে ভেবেছিলেন সবাই। কাজ শুরুর পর এখন সবাই আশাবাদী এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্নে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলে হাসি ফোটে সবার মুখে। দূর হয় সব শঙ্কা। এরপর জমি অধিগ্রহণ ও নির্মাণ কাজে অর্থছাড় করাতে যতটুকু সময় লাগে, ততটুকুই। এর পরই শুরু হয় নির্মাণ কাজ।
ভারতে সড়ক যোগাযোগে স্থলভাগে টানেল থাকলেও নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণে সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম। মুম্বাই থেকে আহমেদাবাদ পর্যন্ত ৫০৮ কিলোমিটার হাইস্পিড রেল করিডর নির্মাণ করার পরিকল্পনা এরই মধ্যে চূড়ান্ত করেছে ভারত। এরই মধ্যে ২১ কিলোমিটার সাগরের নিচ দিয়ে টানেল থাকবে। জাপানের সহায়তায় কাজটি চলতি বছরের শেষ দিকে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০২২ সালে। তবে এটিও রেল টানেল। সে হিসেবে বাংলাদেশই নদীর তলদেশে সড়ক টানেল নির্মাণে সার্কের মধ্যে প্রথম হতে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের কাজটি হাতে নেয়া হয়েছে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। মীরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত একটি মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। এই সড়ক যাবে টানেলের ভেতর দিয়ে। পতেঙ্গা-হালিশহরে বাস্তবায়নাধীন আউটার রিং রোড কাজ করবে টানেলের এ্যাপ্রোচ সড়ক হিসেবে। নগরী থেকে টানেল অতিক্রম করে মেরিন ড্রাইভ কক্সবাজার যাবে আনোয়ারা উপজেলা হয়ে। সেই আনোয়ারাতেই বাস্তবায়িত হবে চীনা ইকোনমিক জোন। উত্তর দিকে এই মেরিন ড্রাইভ চলে যাবে বাস্তবায়নাধীন দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল মীরসরাই ইকোনমিক জোন পর্যন্ত।
জানা যায়, চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি) এবং হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অভি অরূপ এ্যান্ড পার্টনারস হংকং লিমিটেড যৌথভাবে ফিজিবিলিটি স্টাডি প্রতিবেদন জমা দেয় ২০১৩ সালের এপ্রিলে। সেই সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা আছে, কর্ণফুলী টানেল চালুর প্রথম বছর ৬৩ লাখ গাড়ি টানেলের নিচ দিয়ে চলাচল করবে। এক সময় এই পরিমাণ এক কোটি ৪০ লাখে গিয়ে ঠেকবে। চালুর প্রথম বছরে চলাচলকারী গাড়ির প্রায় ৫১ শতাংশ হবে কনটেইনার পরিবহনকারী ট্রেইলর ও বিভিন্ন ধরনের ট্রাক ও ভ্যান। বাকি ৪৯ শতাংশের মধ্যে ১৩ লাখ বাস ও মিনিবাস, আর ১২ লাখ কার, জীপ ও বিভিন্ন ছোট গাড়ি।
প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশস্থলে আওয়ামী লীগ নেতারা :
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, দেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলেই দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রথম টানেল নির্মাণ হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের উন্নয়ন ব্যতিরেখে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এটি আমাদের প্রধানমন্ত্রী উপলব্ধি করেছেন বলেই চট্টগ্রামে টানেল নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। সারা দেশে উন্নয়ন ও অগ্রগতির যে ধারাবাহিতা তারই অংশ হিসেবে চট্টগ্রামেও উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন প্রমুখ।

লালখানবাজার-বিমানবন্দর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
চট্টগ্রামের সমৃদ্ধিতে
আরেক মাইলফলক
এমএ হোসাইন
যানজটমুক্ত শহর গড়ার ক্ষেত্রে আরো একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম। আজ (রোববার) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ নির্মাণ কাজের। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে যানজটমুক্ত ও বিদেশি বিনিয়োগবান্ধব নগরী হিসেবে চট্টগ্রাম আরও এক ধাপ উন্নতি লাভ করবে। একই সাথে কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের খনন কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ দুই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হলে চট্টগ্রামে বিদেশি বিনিয়োগ অনেক বৃদ্ধি পাবে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও চট্টগ্রাম আরও সমৃদ্ধি লাভ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’। দুই মাস আগে প্রকল্পের পাইলিং কাজে হাত দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আজ প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করার পর মূল কাজে হাত দিবেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তবে প্রচুর যানবাহনের চাপ থাকা সড়কের উপরে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে হওয়াতে সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। প্রকল্পের কাজ চলমান থাকাকালীন নগরবাসীকে যেন যানজটে আটকা পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সেজন্য আলাদা আলাদা বøক করে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে করে প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন সময়ে নগরবাসীর দুর্ভোগ অনেকটা কম হবে।
কথা হলে সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। মাত্র ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম শহরের যে কোনো জায়গায় যাওয়া সম্ভব হবে। তখন বিনিয়োগবন্ধব পরিবেশ বিরাজ করবে। বিদেশিরা প্রচুর বিনিয়োগ করবে। শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান হবে।
তিনি বলেন, নগরবাসীর দুর্ভোগ কমাতে পুরো প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হবে একাধিক বøকে ভাগ করে। প্রকল্পটি মূলত নেয়া হয়েছে যানজটমুক্ত নগরী গড়ে তোলার লক্ষ্যে। শুধু যানজটের কারণে চট্টগ্রামে বিদেশি বিনিয়োগ দিনদিন কমছে। বিদেশি ব্যবসায়ীরা বিমানবন্দর থেকে শহরে আসতে ২ থেকে তিন ঘণ্টা বা আরও অধিক সময় যানজটে আটকা পড়েন। এতে তারা চট্টগ্রামে বিনিয়োগে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছেন দিনদিন। এ সমস্যার সমাধান হবে প্রকল্পটির মাধ্যমে।
নিয়মিত যানজটের কারণে দুর্ভোগের সড়কে পরিণত হয়েছে নগরীর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়ক। বিমানবন্দর সড়কে নিয়মিত দীর্ঘস্থায়ী যানজটের কারণে বিদেশিদের কাছে চট্টগ্রামের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে। যানজটে পড়ে বিদেশি যাত্রীদের বিমানবন্দর থেকে মূল শহরে হেঁটে আসার ঘটনাও আছে। অন্যদিকে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) আশপাশের এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটের কবলে পড়তে হয় যাত্রীদের। নিত্য ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকাবাসী ও পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের। এছাড়া বিমানের যাত্রীদের যাত্রা বাতিল হওয়ার ঘটনাও অহরহ। নিত্য যানজটের দুর্ভোগ থেকে রেহাই দিতেই মূলত সিডিএ লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়েছে। আজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর পুরোদমে কাজ করা হবে নতুন এ উড়াল সড়কের। আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার আশা সংশ্লিষ্টদের।
সিডিএ’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করেছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার আশা করছি। যানজটপূর্ণ সড়ক হওয়াতে নগরবাসীর দুর্ভোগ যেনো না বাড়ে সেজন্য একাধিক বøকে ভাগ করে কাজ করা হবে। পাশাপাশি বিকল্প সড়কগুলোও খুলে দেওয়া হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রথমদিকে নগরীর মুরাদপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। পরবর্তীতে প্রকল্পের ডিজাইন পরিবর্তন করে লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার প্রকল্পের দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করা হয়। গত ২০১৭ সালের অক্টোবরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পের বাস্তবায়ন ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয় জুন ২০২০ সাল পর্যন্ত। প্রকল্পের ঠিকাদার হিসেবে ম্যাক্স র‌্যানকিন জেভিকে নিয়োগ করা হয়। ম্যাক্স র‌্যানকিন জেভি ইতিমধ্যে প্রকল্প এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে পাইলিং কাজ সম্পন্ন করেছে।