গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস থেকে দেশবাসীকে রক্ষায় দেশের প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় সরকারের অধিনস্থ সংস্থাসমুহ, স্বাস্থ্য কর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন। জানা যায়, আগামীকাল তিনি জাতির উদ্দ্যেশ্যে আবারও বক্তব্য রাখবেন। এর আগে ২৫ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রাদূর্ভাব থেকে জাতিকে রক্ষায় বেশ কিছু নির্দেশনাসহ জাতির উদ্দ্যেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলেন। এরপর দেশের জেলা প্রশাসকদের সাথে ভিডিও কনফারেন্স করে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন এবং হত দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর কাছে যে যেখানে আছে সেখানেই ত্রাণ যেন যথাযথভাবে পৌঁছানো যায়-সেই ব্যাপরে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেছিলেন। এরপর দশদিনের মাথায় তিনি আবারও জাতির সামনে আসবেন। গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়ে জাতিকে আশ্বস্ত করবেন, সাহস যোগাবেন-এমন প্রত্যাশা আমাদের।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণের আগেই ৩১ দফা নির্দেশনা জরুরি ভিত্তিতে পালনে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনায় তিনি কোন উপসর্গ দেখা দিলে জনগণকে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং কোন গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া- এভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, করোনা উপসর্গ দেখা দিলে লুকিয়ে না রেখে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা রোগীদের সঙ্গে মানবিক আচরণ, ত্রাণকার্যে স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে অবশ্য পালনীয় হিসেবে ৩১ দফা নিদের্শনা প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তালিকা করে তাদের কাছে খাদ্য পৌঁছানো, উৎপাদন অব্যাহত রাখার স্বার্থে জমি পতিত ফেলে না রাখা, নববর্ষে সকল জনসমাগম বর্জন করা, বাজার মনিটরিং, গণমাধ্যম কর্মীদের যথাযথ দায়িত্ব পালন এবং গুজব ছড়ানো প্রতিরোধসহ জনগণ এবং প্রশাসনের জন্য ৩১ দফা নির্দেশনা মেনে চলার এবং কার্যকর করার আহবান রয়েছে। আমরা মনে করি, সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও ক্রমান্বয়ে করোনাভাইরাস বিস্তার লাভ করছে। এ মুহূর্তে এ ভাইরাস থেকে রক্ষার উপায় বিশ্বস্বাস্থ্যও দেশের সরকার প্রধান ও স্বাসস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যে নির্দেশনা আসছে তা যথাযথভাবে পালন করা। আমরা মনে করি, সরকার প্রধান তাঁর অবস্থান থেকে দেশের জনগণ ও ভাইরাস মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও দায়িত্বশীলদের কাছে যে নির্দেশনাগুলো দিচ্ছেন তা যথার্থ এবং সময়োপযোগী। ছোট্ট দেশ অথচ জনবহুল এ অঞ্চলে নি¤œ আয়ের ও হত দরিদ্রের সংখ্যা বেশি হওয়ার পরও সরকার ও জনগণ এ যাবত তা সঠিকভাবে সামাল দিতে পেরেছেন-এটাই যথেষ্ট। তবে এ মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ধৈর্য ও সরকার প্রদত্ত নির্দেশনাগুলো মেনে ঘরে অবস্থান করা। সমকালীন গবেষণায় করোনা প্রতিরোধে এর বাইরে আর কোন ব্যবস্থাপনা নেই। আমরা আশা করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ৩১ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সকলে নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও প্রতিপালনে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেব। বাঙালি কোনকালে কোন সংগ্রাম-দুর্যোগে পরাজয় মানে নি, এবারও আমাদের সম্মিলিত প্রয়াসে সেই দুর্যোগ মোকাবেলা করে বাঙালির বিজয় নিশ্চিত করব-এমন প্রত্যাশা আমাদের সকলের।