প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিনিয়োগকারীদের উজ্জীবিত করবে

30

বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াদিল্লির হোটেল তাজ প্যালেসের দরবার হলে ইন্ডিয়া ইকোনমিক সামিটে দেওয়া বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেছেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির কেন্দ্র হয়ে ওঠার বিপুল সম্ভাবনা আছে। তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিনিয়োগ সম্ভাবনা, বিভিন্ন খাতের উন্নয়ন নিয়েও কথা বলেছেন। জানা যায়, ৪০টি দেশের ৮০০ প্রতিনিধি দুই দিনের এ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সম্মেলন শেষ হয়েছে। শেখ হাসিনা ‘আমরা এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক হাব হিসেবে’ ভূমিকা রাখতে পারি বলে উল্লেখ করে বলেন, পূর্ব এশিয়া, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পশ্চিমে চীন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যবর্তী হওয়ায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক এবং ভারতের ব্যবসার অন্যতম ক্ষেত্র হতে পারে। শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের নিজস্ব ১৬ কোটি মানুষ ছাড়াও প্রায় ৩০০ কোটি মানুষের একটি বিশাল বাজারের যোগাযোগের পথ হতে পারে বাংলাদেশ।’
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে উত্তম পরিবেশ বিরাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারী বিশেষ করে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে শিক্ষা, হালকা প্রকৌশল শিল্প, ইলেকট্রনিক্স শিল্প, অটোমোটিভ শিল্প, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিল্পের মতো ক্ষেত্রগুলোয় বিনিয়োগ করার সময় এখন। তিনি আরও বলেন, ‘আজ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি স্বাধীন ও উদার বিনিয়োগের পরিবেশ বিরাজ করছে। বিনিয়োগবান্ধব বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরদের জন্য আইনি সুরক্ষা, উদার রাজস্বব্যবস্থা, মেশিনপত্র আমদানির ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড়, আনরেস্ট্রিকটেড এক্সিট পলিসি, সম্পূর্ণ বিনিয়োগ ও পুঁজি নিয়ে চলে যাওয়াসহ নানাবিধ সুবিধা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নিরবচ্ছিন্ন সুবিধা ও সেবা নিশ্চিত করে ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করেছি। এর মধ্যে ১২টি অঞ্চল ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে। দুটি অঞ্চলকে ভারতের বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের জন্য বেশ কয়েকটি হাই-টেক পার্ক প্রস্তুত করা হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের এই ব্যাপক উন্নয়নের জন্য সামাজিক মূল্যবোধ ও বাংলাদেশের মানুষের আস্থার প্রশংসা করে বলেন, অনেকেই বাংলাদেশকে ‘৩ কোটি মধ্য ও উচ্চবিত্ত মানুষের একটি বাজার’ ও ‘অলৌকিক উন্নয়নের দেশ’ হিসেব দেখে থাকেন।
আমরা প্রধানমন্ত্রীর আশাবাদ ও যৌক্তিক বক্তব্যের প্রশংসা করি একই সাথে প্রত্যাশা করি, প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যে দেশীয় ও বৈদেশিক বিনোয়োগকারীদের উৎসাহিত করবে। দেশের সামাজিক মূল্যবোধ নিয়ে অতি সন্তুষ্ট হওয়ার কারণ নেই। বিগত কয়েকমাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে নৈতিক স্খলনজনিত ঘটনাগুলো ঘটেছে তাতে আমাদের লজ্জিত করেছে। এ ব্যাপারে সরকারের পদক্ষেপগুলো অবশ্যই প্রশংসনীয়। আমরা আশা করি, প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরার যে প্রয়াস অব্যাহত রেখেছেন-এর সাথে আমাদের জনগণ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সহযোগী হিসাবে আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে বাংলাদেশ আঞ্চলিক অর্থনীতির কেন্দ্র হবে নিঃসন্দেহে।