প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম আর নেই

11

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব, প্রবীণ সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইহসানুল করিম হেলাল আর নেই। গতকাল রবিবার রাত ৮টা ১০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় আক্রান্ত ইহসানুল করিম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানেই গতকাল তার মৃত্যু হয় বলে পরিবারের সদস্যরা জানান। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলেকে রেখে গেছেন। তার পুত্রবধূ রাইসা মাসুদ জানান, আজ সোমবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জানাজা হবে। জোহরের নামাজের পর বনানী কবরস্থানে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।
জাতীয় বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক ইহসানুল করিম ২০১৫ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
তার আগে ছিলেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব।
ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে দেশ একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং দক্ষ কর্মকর্তাকে হারাল। দেশে সাংবাদিকতায় ইহসানুল করিমের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক শোক বার্তায় ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ইহসানুল করিম প্রেস সচিব হিসেবে অত্যন্ত সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুতে দেশের গণমাধ্যম হারালো একজন প্রিয় সহকর্মীকে আর আমি হারালাম একজন বিশ্বস্ত কর্মকর্তাকে।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। খবর বিডিনিউজ’র
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার অবস্থা খারাপ হয়। আমরা চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ৮টার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।
ইহসানুল করিমের জন্ম কুষ্টিয়া জেলায়, ১৯৫১ সালের ৫ জানুয়ারি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক করে ইনডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যাস কমিউনিকেশন থেকে স্নাতকোত্তর করেন তিনি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দেন ইহসানুল করিম। বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ)-এর সদস্য হিসেবে পশ্চিম রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেন।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে ১৯৭২ সালে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৭ সাল থেকে ৫ বছর তিনি নয়া দিল্লিতে বাসসের ব্যুরো প্রধান ছিলেন। বিবিসি, পিটিআইসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন। সহকর্মীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘হেলাল ভাই’ হিসেবে। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান ইহসানুল করিম। ওই বছরই তাকে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় ইহসানুল করিমকে।