প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফর শুভ সাফল্য আশা করে দেশবাসী

43

কাতার মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনি দেশ। সেখানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এলডিসি সম্মেলন। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ৫ম জাতিসংঘ সম্মেলন এটি। বাংলাদেশ ইতোপূর্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুপরিকল্পিত পদক্ষেপে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বল্পোন্নত দেশের তকমা অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রæত এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২৬ সালের মধ্যে এলডিসি ফোরাম হতে আমাদের উত্তরণ ঘটবে। ৫ হতে ৯ মার্চ পাঁচদিনব্যাপী এলডিসি সম্মেলন যোগ দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গতকাল কাতারের পথে যাত্রা করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেশের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল কাতার গিয়েছেন। উক্ত দলের নেতৃত্ব দেবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। যুদ্ধসংক‚ল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে দেশের অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়েছে। শিল্পকারখানা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ইত্যাদি ক্ষেত্র ছাড়াও কৃষি উৎপাদনে তেলের প্রয়োজনীয়তা অধিক। জ্বালানি তেলের সহজলভ্যতা এবং মূল্য স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকলে দেশের জনগণের ব্যয়ভার কমার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতির চাকাও সচল হয়। মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে কাতার অন্যতম প্রধান জ্বালানি তেল সমৃদ্ধ দেশ। মুসলিম দেশ হিসেবে কাতার বিশ্বের অন্যান্য দরিদ্র মুসলিম দেশের প্রতি খুবই আন্তরিক। মুসলিম দেশসমূহের জন্য কাতারের সাহায্য উল্লেখযোগ্য। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাতারের কাছ হতে জ্বালানি তেলের চাহিদা মেটানোতে ব্যাপক সহযোগিতা আশা করতে পারে। গত ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করে কাতার উদারনৈতিক মুসলিম দেশ হিসেবে সমগ্র বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছে। কাতার বাংলাদেশকে জ্বালানি তেল প্রদানে নানা সহযোগিতার হাত বাড়ানোর ক্ষমতা রাখে। তাদের মাধ্যমে আমাদের মতো একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ লাভবান হলে তারা খুশিই হবে বলে এদেশের জনগণ বিশ্বাস করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এলডিসি সম্মেলনে জোরালো ভ‚মিকা রাখার পাশাপাশি দেশের কল্যাণে একগুচ্ছ চুক্তি সম্পাদন করবেন এমন আশা সমগ্র দেশবাসীর।
দেশের তেল সংকট এবং তেলের চাহিদা মিটানোর সুযোগ আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাতছাড়া করবেন না। যুদ্ধরত রাশিয়া আমাদের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল দিতে ইচ্ছুক হলেও দেশে পরিশোধনের সুব্যবস্থা না থানায় রাশিয়া হতে আমরা তেল আমদানি করতে ব্যর্থ হচ্ছি। অথচ স্বল্পমূল্যে তেল কিনে তুরুস্ক, চীন এবং ভারত রাশিয়ার হাত ধরে নানা ভাবে তাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে লাভবান হচ্ছে। কাতার ইচ্ছা করলে আমাদের স্বল্পমূল্যে পরিশোধিত তেল রপ্তানি করতে পারবে। তাছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাতারে দক্ষ-অদক্ষ শ্রমিক রপ্তানির বিষয়ে কাতার সরকারকে রাজি করাতে পারলে দেশের মানুষ সেখানে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা ও রেমিটেন্স পরিস্থিতিকে সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হবে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে জনশক্তি রপ্তানির আশানুরূপ সুযোগ সৃষ্টি করতে দেশের মানুষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপর আস্থা রাখে। আমাদের বিজ্ঞ প্রধানমন্ত্রী কাতারের শ্রমবাজারকে দেশের অনুক‚লে আনতে সক্ষম হবেন এমন আশায় দেশের জনগণ প্রতীক্ষার প্রহর গুণছে। তেল আমদানি এবং জনশক্তি রপ্তানি ছাড়াও কাতারের সাথে ব্যবসা বাণিজ্যসহ আরো অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে একগুচ্ছ চুক্তির সুফল নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাতার হতে ফিরবেন এমন একটি সম্ভাবনা দেশের মানুষ আশা করে। কাতারে অবস্থানকালীন সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাতারের আমিরসহ উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের সাথে বৈঠক করবেন। উদারনৈতিক কাতারের আমির বঙ্গবন্ধু কন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হতাশ করেন না এমন ধারণা দেশের মানুষের। দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার লক্ষে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের মানুষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফরের সফলতা কামনা করছে। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের প্রধানমন্ত্রী কাতার হতে খালি হাতে ফিরবেন না। তিনি ও তার উচ্চপর্যায়ের কমিটি দেশের স্বার্থে কাতার সফরকে ফলপ্রসু করতে আন্তরিকভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দৃঢ়পদ থাকবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফরে কাতার সরকারকে এদেশে বিনিয়োগের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস।