প্রথম দিনেই বাকলিয়ার তিন ওয়ার্ডে ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’

46

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারী বর্ষণে নগরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির পর নড়েচড়ে বসেছে নগরীর সেবা সংস্থাগুলো। জলাবদ্ধতার কারণ খুঁজতে চার সদস্যের কমিটি গঠনের পর পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা অপসারণে ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ শুরু করেছে ওই কমিটি।
গতকাল বাকলিয়া এলাকায় ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শেষ করার কথা। আজ রবিবার নগরীর হালিশহর ও মোহরা ওয়ার্ডে ক্রাশ প্রোগ্রাম চলবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ৭নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও চসিক বর্জ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মোবারক আলী পূর্বদেশকে বলেন, আমরা প্রথমদিনেই বাকলিয়া এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং খাল-নালায় চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি। নগরীতে সবচেয়ে বেশি জলাবদ্ধতা হয় ৬ নং পূর্ব ষোলশহর, ১৬ নং চকবাজার, ১৭ নং পশ্চিম বাকলিয়া এবং ১৮ নং পূর্ব বাকলিয়া এলাকায়। দুইদিনের বৃষ্টির পানি নামতে লেগেছে ছয়দিন। তাই এলাকায় সামনের বৃষ্টিতে পানি উঠলে যাতে দ্রæত নেমে যায়, সেদিকে খেয়াল রেখে আমরা কাজ করছি।
মোবারক আলী জানান, রাজাখালী খালের দুইটি অংশ ১৮নং ওয়ার্ডের কৃষিখাল হিসেবে পরিচিত শাখা খালের অপর পাশে ৬ নং পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ড। এটি সিডিএ’র মেগা প্রকল্পের বাইরে। বগারবিল, মিয়াখান নগর, ওয়াইজ পাড়া অংশের পানি কৃষিখাল হয়ে প্রবাহিত হওয়ার কথা। খালটি প্রায় ভরাট হয়ে আছে। তাই দৈনিক ১শ শ্রমিক নিয়োগ করে খালটি ইতোমধ্যে পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সিটি করপোরেশন। কৃষিখাল ও রাজাখালে সংযোগ অংশ পানি প্রবাহের জন্য পরিষ্কার করা হবে।
তিনি আরও জানান, বির্জাখালে বেশ কয়েকটি অংশে বাঁধ থেকে গেছে, অনেক জায়গায় ছোট করে বাঁধ অপসারণ করা হয়েছিল, এগুলো সম্পূর্ণ সরানোর কাজ করছে সেনাবাহিনী। একইসাথে কৃষিখালকে মেগাপ্রকল্পের আরডিপিতে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য আমরা সুপারিশ করেছি।
তিনি আরও জানান, তক্তারপুল এলাকায় খালের উপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরঞ্জাম ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করলে, তা অপসারণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। চন্দনপুরা এক্সেস রোডের ব্রিজের নিচে মাটি জমে পানি আছে। এগুলো অপসারণ করার দায়িত্ব সেনাবাহিনী বুঝে নেয়। রবিবার সিটি করপোরেশনের বাজেট অধিবেশন শেষ করে হালিশহর ও মোহরা এলাকায় ক্রাশ প্রোগ্রাম চালাবে চসিক-সিডিএ’র যৌথ কমিটি।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে অস্থায়ী নগর ভবনে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নিয়ে জলাবদ্ধতা বিষয়ে বৈঠক করেন সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগরের পানি নিষ্কাশনের সব প্রতিবন্ধকতা অপসারণে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যেসব ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতার প্রকোপ বেশি দৃশ্যমান হয়েছে, সেসব স্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ শুরু করা হবে।
মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কমিটি কাজ শুরু করেছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত কাউন্সিলররা ওয়ার্ড পর্যায়ে পানি নিষ্কাশনের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে দুই দিনের মধ্যে কমিটিকে অবহিত করবে। সেক্ষেত্রে কাউন্সিলররা নিজস্ব উদ্যোগে স্কেভেটর, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও জনবল নিয়ে নিজ নিজ ওয়ার্ডের নালা, নর্দমা, খালের, আবর্জনা দ্রুত পরিষ্কারে উদ্যোগ নেবেন।
অন্যদিকে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিডিএকে প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে যেখানে বাঁধ ও মাটি ভরাট করা হয়েছে, সেসব স্থানে বাঁধ অপসারণ এবং মাটি সরিয়ে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক করারও আহব্বান জানান মেয়র।