প্রতিবেশী যুবককে কাঠের আঘাতে খুন করল স্বামী

97

স্ত্রীর পরকীয়ার জের ধরে স্বামীর কাঠের আঘাতে খুন মারা গেছেন জাহাঙ্গীর (৩৫) নামে এক যুবক। সোমবার সকাল ১১টার দিকে পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্টলী বশির শাহ মাজার সংলগ্ন শরীফ কলোনিতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাহাঙ্গীর কলোনির কেয়ারটেকারের ছোট ভাই।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাগরিকা এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় ফ্লোর ইনচার্জ হিসেবে কাজ করেন মো. ইমরান নাজির (৩৩)। দক্ষিণ কাট্টলীর শরীফ কলোনিতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। এ সুবাদে কলোনির কেয়ারটেকারের ছোট ভাই জাহাঙ্গীরের সাথে ইমরান নাজিরের স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরে ইমরান গত সোমবার চাকরিতে না গিয়ে এলাকায় থেকে গোপনে স্ত্রীর ওপর নজর রাখছিলেন। এরই মধ্যে তাদের বাসায় ঢুকেন জাহাঙ্গীর। এ সময় ইমরান রাগান্বিত হয়ে বাসায় এসে কাঠের বাটাম দিয়ে জাহাঙ্গীরের মাথায় আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে প্রতিবেশীরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করান। ওইদিন রাত ৯টার দিকে হামপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহাঙ্গীরের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জাহাঙ্গীরের ভগ্নিপতি বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আসামি ইমরান নাজিরকে গতকাল মঙ্গলবার ভোরে গ্রেপ্তার করে। বিকেলে আসামি ইমরান নাজির মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফি উদ্দিনের আদালতে ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সদীপ কুমার দাশ বলেন, প্রতিবেশী যুবক জাহাঙ্গীরের সঙ্গে স্ত্রী রাহেলাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে রাগের মাথায় কাঠের বাটাম দিয়ে আঘাত করে ইমরান নাজির। সোমবার সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত জাহাঙ্গীরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় জাহাঙ্গীরের দুলাভাই নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামি ইমরান নাজিরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সে আদালতে ঘটনা স্বীকার করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হালিশহরের শান্তিবাগ আবাসিক এলাকা থেকে ইমরান নাজিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় ঘটনায় ব্যবহৃত বাটামটিও উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত নাজির ঘটনা স্বীকার করেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই অর্ণব বড়ুয়া বলেন, আসামি ইমরান নাজির একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করে। তার দুই বউ। ছোট বউকে নিয়ে সে দক্ষিণ কাট্টলীর শরীফ কলোনিতে থাকে। ছোট বউয়ের পরকীয়ার বিষয়টি জানতে পেরে সোমবার চাকরিতে না গিয়ে এলাকায় থাকে। জাহাঙ্গীর তার বাসায় আসার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে সে বাসায় যায়। বউয়ের সাথে জাহাঙ্গীরকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে গাছের বাটাম দিয়ে আঘাত করে। ৪টি আঘাত জাহাঙ্গীরের মাথায় লাগে।
তিনি বলেন, ঘটনার পর ইমরান নাজির তার বউকে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ব্যবহৃত সিমটিও তাদের দিয়ে দেয়। নতুন সিম কিনে সে হালিশহর এলাকায় আত্মগোপন করে। ঘটনার অল্প সময়ের মধ্যে আজ (মঙ্গলবার) ভোর ৬টার দিকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফি উদ্দিনের আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আসামি ইমরান নাজির।