প্রতিদিন যানজটে ২-৩ ঘণ্টা আটকে থাকছেন যাত্রী

33

আবেদ আমিরী, পটিয়া

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার ইন্দ্রাপুল এলাকায় প্রতিদিন গড়ে ২-৩ ঘণ্টার যানজটে আটকে থাকতে হয় চলাচলকারী যাত্রীদের। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যেতে বা কক্সবাজার থেকে ফিরতে সব যানবহনকেই পুরো দিনভর এসব যানজটের শিকার হতে হয়। বিকাল হলে প্রতিদিন যানজটে যানবাহনের লাইন ৫-৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়।
তবে চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করে হাইওয়ে পুলিশ বলছে- ভিআইপিদের গাড়ির জন্য এবং চলমান উন্নয়ন কাজের জন্য যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। হাইওয়েতে ট্রাফিক বিভাগ না থাকায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাজ করার সিস্টেম নেই বলেও জানান হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা।
সাপ্তাহিক বন্ধের দিন গতকাল শুক্রবারও দুপুরের পর শুরু হওয়া যানজট সন্ধ্যায় ৭-৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়। পটিয়ার বাইপাসের ইন্দ্রাপুল এলাকাটিতে যানজটের চরম অবস্থা বিরাজ করলেও তা নিরসনে হাইওয়ে পুলিশকে কাজ করতে দেখা যায় না।
যাত্রীদের অভিযোগ- হাইওয়ে পুলিশ পটিয়া বাইপাস ও মনসা বাদামতল এলাকায় গাড়ির কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত থাকেন বেশিরভাগ সময়। যানজটের দিকে তাদের কোনো নজর থাকে না। ট্রাফিক ডিউটি করার কোনো সিস্টেম নাই হাইওয়ে পুলিশে। এ কারণে হাইওয়ে পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করতে পারে না।
যাত্রীদের অভিযোগ, হাইওয়ে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে চরম বিশৃঙ্খলার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষেরা।
সরেজমিনে পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পটিয়ার বাইপাস মোড়ে উভয় দিকে প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার সড়কজুড়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রতিটি যানবাহন দিনভর যানজটের কবলে পড়ছে। পটিয়ার ইন্দ্রাপুল থেকে মহাসড়কের উভয় দিকে ৫-৬ কিলোমিটার যানজট এখন নৈমত্যিক ঘটনা। বিকাল গড়ালে সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ে। সাথে যানজটের দৈর্ঘ্যও বাড়তে থাকে। কিন্তু হাইওয়ে পুলিশের কোনো নজরদারি নেই তাতে।
মোহাম্মদ কাসেম নামের এক গাড়ি চালক জানান, গত তিন মাস ধরে পটিয়া এলাকায় রাস্তায় সার্বক্ষণিক যানজটের ঘটনা ঘটছে। হাইওয়ে পুলিশ ব্যস্ত থাকেন টোকেন বাণিজ্যে। তারা দিনের চেয়ে রাতের বেলায় ডিউটির নামে মালবাহী গাড়ি থেকে চাঁদাবাজিতে বেশি মনোযোগ দেন। দিনের বেলায় কোনো কোনো সময় রাস্তায় দেখা গেলেও তারা সিএনজিচালিত অটোরিকশা আটকে রেখে আদায় করেন মোটা অংকের টাকা।
চালকেরা জানান, পটিয়ার বাইপাস সড়ক হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজির নিরাপদ জোনে পরিণত হয়েছে। সিএনজি অটোরিকশাসহ ছোট গাড়ি আটক করে হাইওয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে অধিকাংশ গাড়ি নির্জন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানে দফারফা করে চাঁদা আদায়ের পর ছেড়ে দেয়া হয়।
যাত্রীরা জানান, হাইওয়ে রোডের কোথাও হাইওয়ে পুলিশের কোনো ট্রাফিক পুলিশ বা টিম থাকে না। এ কারণে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যানজটের কবলে পড়তে হয় যাত্রীদের।
মোহাম্মদ হাসান নামের এক মাহিন্দ্র গাড়ির মালিক জানান, হাইওয়ে রোডে যেতে হলে হাইওয়ে পুলিশকে মাসিক নির্দিষ্ট অংকের বিনিময়ে ম্যানেজ করতে হয়। ফলে হাইওয়ে রোডে অবৈধ গাড়ির চলাচল বেড়ে গেছে।
হাইওয়ে পুলিশের ওসি (টিআই) ¯েœহাংশ বিকাশ যানজটের জন্য ভিআইপি যাত্রী ও সড়কের চলমান উন্নয়ন কাজকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, এ রুটে ভিআইপির গাড়ির চলাচলের সুবিধা দিতে গিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। এছাড়া রাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্রাফিক পুলিশের কাজ করার জন্য তাদের কোনো নিয়ম নেই। হাইওয়ে পুলিশের কোনো ট্রাফিক বিভাগ নেই।
আর গাড়ি থেকে চাঁদাবাজি ও নির্জন স্থানে নিয়ে গাড়ি ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি তার জানা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা মানুষের সচেতনতা। প্রতিদিন তারা ১০টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে টার্গেট পূরণ করেন।