প্রগতি দেশে শিল্পায়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম

71

দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়ক অতিক্রম করছে। শিল্পায়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্ব দুয়ারে অন্যতম প্রতিদ্ব›দ্বী। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর দেশ যে উন্নতির শিখরে দাঁড়িয়েছে, তা আজ দৃশ্যমান। অচিরেই আমরা উন্নত দেশ হিসেবে মর্যাদা লাভ করব। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে ১৯৭২ সালে জাতীয়করণের মাধ্যমে যে নবসূচনার দ্বার খুলে দিয়েছিলেন আজ সেই প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ শিল্পায়নে দেশে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে স্বক্ষম।
গতকাল শনিবার বিকালে আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্মেলন কক্ষে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহামুদ হুমায়ুন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিজনেস হাব। নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রগতির বড় ভূমিকা রয়েছে। আর বঙ্গবন্ধুর অহংকার ছিল প্রগতি নিয়ে। জাপানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতেন যদি পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তাকে হত্যা করা না হতো। এই প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মকর্তাদের মনে করতে হবে তারা প্রগতির অংশীদার।
সভায় বিশেষ অতিথি চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, দেশের অর্থনীতির হৃদপিÐ ও প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম। আধুনিক গাড়ি বানালে ব্যবসায়ীরা প্রগতির গাড়ি কিনবে। প্রগতি দেশের সম্পদ। আমরা মেডিসিন বিদেশে রপ্তানি করছি। চট্টগ্রামে বিএসটিআইয়ের আধুনিকায়ন জরুরি।
এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, প্রগতি প্রতিষ্ঠার সুদীর্ঘ ৫২ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। পুরাতন ম্যানুয়েল পদ্ধতির উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তে বিশ্বমানের আধুনিক অটোমেটিক এ্যাসেম্বলি প্ল্যান্ট স্থাপন, ঢাকার তেজগাঁও এ পিআইএল’র মালিকানাধীন ১.৫০ একর জায়গায় ৩৮৬.৮২ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে একটি অত্যাধুনিক ওয়ার্কসপ, তিন বেইজমেন্টসহ ৩৭ তলাবিশিষ্ট ভিত্তির উপর আপাতত ১৪ তলা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ, সকল বিভাগীয় শহরে আধুনিক সার্ভিস সেন্টার ও শো-রুম স্থাপন, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে ৫০ একর জমি লিজ নিয়ে যন্ত্রাংশ উৎপাদন কারখানা স্থাপন, চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে প্রগতির খরিদকৃত ৪.৩১ একর জমিতে গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা স্থাপনসহ কয়েকটি মেগা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন আছে। এগুলোর মধ্যে বগুড়া ও খুলনায় সার্ভিস সেন্টার, শো-রুম ও অফিস স্থাপনের কাজ চলমান আছে। এসব পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়িত হলে বিপুল পরিমাণ লোকের কর্মসংস্থানসহ প্রগতির ব্যবসা বহুগুণ সম্প্রসারিত হবে।
একইভাবে প্রগতি ব্যাটারি, টায়ার ও পার্টস করবো। সরকারিভাবে নয় বেসরকারি পর্যায়েও প্রগতির গাড়ি ব্যবহারে উৎসাহিত করা হবে। সিকেডির সংজ্ঞা দেওয়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারে আনতে হবে। অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। এর মধ্যে বকেয়া আদায়ও রয়েছে। বিআরটিসির কাছে ১৪৩ কোটি টাকা পাবে প্রগতি। প্রগতির টাওয়ার নির্মাণে বাধা দূর করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তৌহিদুজ্জামান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, দেশের গাড়ি সংযোজন খাতে প্রগতি একমাত্র শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, বঙ্গবন্ধু জাতিকে স্থানীয়ভাবে গাড়ি সংযোজন ও উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জনের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে প্রাথমিকভাবে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের পণ্য ও গণপরিবহণ খাত পুনর্গঠনের গুরুদায়িত্ব পড়ে প্রগতির উপর। তাই প্রগতি এককভাবে সরকারি-বেসরকারি খাতে দ্রæততার সাথে ৪৫০০ গাি সরবরাহ করে একদিকে সড়ক পরিবহন খাতকে সমৃদ্ধ করেছে অন্যদিকে দেশের অর্থনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে আসছে এবং বিগত কয়েক বছর যাবৎ গড়ে প্রায় ১৭০ কোটি টাকা হারে সরকারকে রাজস্ব প্রদান করে আসছে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ ।
প্রগতির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ও প্রশাসন বিভাগীয় প্রধান মো. আবদুল খালেকের পরিচালনায় আলোচনায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও হিসাব বিভাগীয় প্রধান মো. রেজাউল করিম, ব্যবস্থাপক (ক্রয়) মোহাম্মদ আবু সাঈম, ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) ও সভাপতি, অফি. এসোসিয়েশন মো. সাইদুর রহমান জামালী, উপ-প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) ও ইনচার্জ কারখানা কায়কোবাদ আল মামুন, সিবিএ কার্য নির্বাহী সভাপতি মো. রাফিক, সাধারণ সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন প্রমুখ।