প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে ৪৩৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা

38

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যয় বাড়ানো হয়েছে কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের। গতকাল মঙ্গলবার প্রকল্পটির (২য় সংশোধনী) অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ৪৩৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা বেড়ে বর্তমানে প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৪৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সময় বাড়ানো হয়েছে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত। ইতোপূর্বেও প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।
সড়ক কাম বেড়িবাঁধ নির্মাণ হিসাবে প্রকল্পটি গ্রহণ করেছিল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। কালুরঘাট থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত এ প্রকল্পটি নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজকে অগ্রাধিকার দিয়ে নেয়া হয়েছিল। সাড়ে ৮ কিলোমিটার প্রকল্প এলাকার মধ্যে ৬ কিলোমিটার জুড়ে কাজ করছে সিডিএ। ইতিমধ্যে কালুরঘাট সেতু থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী মাটি ভরাট করে সড়ক কাম বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্প এলাকায় ১২টি স্লুইস গেটের মধ্যে ১০টির কাঠামো তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে ৫টি স্লুইস গেট নির্মাণ কাজ শেষের দিকে। সার্বিকভাবে প্রকল্পের ৬২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যয় করা হয়েছে ১ হাজার ১৫৫ কোটি ৩৮ লাখ ৩২ হাজার টাকা। অনুমোদিত প্রকল্পটির মেয়াদ ছিল ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২ হাজার ২৭৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। মাঝে দুই দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত করা হয়েছিল। এবার প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনী আনা হয়। এতে নতুন করে এক বছর সময় ও ৪৩৬ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। অনুমোদন পাওয়া সংশোধিত প্রকল্পটির মেয়াদ আগামী বছরের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।
সিডিএ’র প্রকল্প পরিচালক রাজীব দাশ বলেন, প্রকল্পের অগ্রগতি ৬২ শতাংশ। আরো কিছু কাজ যুক্ত করে সংশোধনী আনা হয়েছে। নতুন করে ৪৩৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা অনুমোদন দিয়েছে। সিডিএ সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির শেষ সময়ে রাস্তার দৈর্ঘ্য ৪৮৪ মিটার বৃদ্ধি, আরসিসি কিলোমিটার পোস্ট, বাস-বে, ফুট ওভারব্রিজ, যাত্রী ছাউনি, রাস্তার পাশের স্থায়িত্ব বাড়াতে রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ, সড়কের মাঝখানে নিউ জার্সি ব্যারিয়ার, দুটি সংযোগ সড়ক অন্তর্ভুক্তি, ২৫০ বর্গমিটারের একটি ব্রিজ, রেগুলেটরের সঙ্গে আনুষঙ্গিক কার্যক্রম যোগ করা, বিভিন্ন ড্রেন নির্মাণ যুক্ত, রেগুলেটরের মুখে
স্লোপ প্রটেকশনের কাজ, রিটেইনিং ওয়াল, ওয়ার্কওয়ে নির্মাণ, ১ হাজার ৮৪টি এলইডি সড়ক বাতিসহ অন্যান্য কাজ যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়। এজন্য প্রকল্পের ব্যয় ৪৩৬ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব ছিল।
১৯৯৫ সালের চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাস্টার প্ল্যানে কালুরঘাট থেকে শাহ আমানত ব্রিজ পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কথা উল্লেখ ছিল। একই সাথে ২০০৬ সালে নগরের অপ্রতুল অবকাঠামোগত অসুবিধা চিহিৃত করতে সমীক্ষা পরিচালনা করে জাপান ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি)। সমীক্ষায় দুটি রিং রোড ও ছয়টি শাখা রোড নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। এই সমীক্ষার ফলাফলকে যুক্ত করে শহর রক্ষাবাঁধ কাম সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি হাতে নেয় সিডিএ। সেই সাথে জলাবদ্ধতা নিরসন ও পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে অন্যান্য সুবিধা সংযোজন করে সিডিএ। ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন লাভ করে। কাজ শুরু করতে কিছুটা সময় বিলম্বিত হয়। ২০১৮ সালের অক্টোবরে আনুষ্ঠানিক প্রকল্পের কাজে হাত দেয় সিডিএ। ২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের আওতায় কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৪ ফুট উঁচু ও ৮০ ফুট প্রশস্ত চার লেনের সড়ক কাম বাঁধ এবং ১২টি খালের মুখে জোয়ার-ভাটা প্রতিরোধক রেগুলেটর (সুইস গেট) ও পাম্পহাউজ স্থাপনের কথা রয়েছে।