প্রকল্প বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপণ নয়

68

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, নগরীর অবকাঠামোগত উন্নয়নে একনেক সভায় যেসব প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে, সেই প্রকল্পগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপণ কোনোভাবে কাম্য হবে না। এতে কোন অজুহাত নয়, কাজের গুণগত মান অক্ষুণ্ণ রেখে আন্তরিকতার সাথে কাজ সম্পদান করতে এক্ষুনি মাঠে নেমে পড়তে হবে। এই কাজে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে অবহিত করবেন।
গতকাল সিটি কর্পোরেশনে প্রকৌশল বিভাগের মাসিক সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এ কথা বলেন।
সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আধুনিক নগর ভবন নির্মাণ ও স্মার্ট সিটি প্রকল্প আগামী ২৯ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য প্রি-একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য উত্থাপিত হচ্ছে। চসিকের আধুনিক নগর ভবণ নির্মাণ ২’শ ৪ কোটি টাকা এবং স্মার্ট সিটি প্রকল্পের জন্য ২৭০ কোটি টাকাসহ মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪’শ ৭৪ কোটি টাকা। প্রকল্প দুটি প্রি-একনেকে অনুমোদন হওয়ার পর একনেক সভায় উত্থাপিত হবে।
সভায় নগরীর জনগুরুত্বপূর্ণ ৬টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা হয়। এতে উপস্থাপন করা হয়, প্রকল্পগুলোর মধ্যে বন্যা ও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সমূহের উন্নয়ন এবং নালার প্রতিরোধ দেয়াল, ব্রিজ ও কালভার্ট এর নির্মাণ/পুনঃনির্মাণ ব্যয় ৭১৬ কোটি ২৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, টেন্ডারযোগ্য লট ১৯৮টি, টেন্ডারকৃত ১৯৬টি, অবশিষ্ট লট ২টি টেন্ডারের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কাজের ভৌত অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ, প্রকল্পের মেয়াদ ডিসেম্বর ২০১৯ সাল পর্যন্ত। এছাড়া ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার যোগ্য লট ৮৭ টি, কাজের ভৌত অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এবং ব্রিজ সমূহের উন্নয়নসহ আধুনিক যান-যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও সড়ক আলোকায়ন বাবদ ৩৮২ কোটি ১৯ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা, টেন্ডারযোগ্য লট ৮৮টি, কাজের ভৌত অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ, প্রকল্পের মেয়াদ জুন ২০২০ইং পর্যন্ত।
অন্যদিকে বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন খাল খনন ব্যয় ১ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা, প্রকল্পের মেয়াদ ৩০ জুন ২০২০পর্যন্ত, চসিক সেবক নিবাস নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ২৩১ কোটি টাকা, ভবন সংখ্যা ৭টি, ভৌত অগ্রগতি ১২ শতাংশ, প্রকল্পের মেয়াদ ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডের সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন এবং বাস টার্মিনাল নির্মাণ ব্যয় ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা, এরমধ্যে রাস্তার উন্নয়ন ৫৫৪ কি.মি., প্রতিরোধ দেয়াল ২০৬ কি.মি., ড্রেইন ৮৯৫ কি.মি., ফুটপাত ৩৭৩ কি.মি., ব্রিজ ১৭৪টি, কালভার্ট ৩৭টি, ভূমি অধিগ্রহণ ৮.১০ একর, টেন্ডারযোগ্য লট ২২১টি, প্রকল্পের মেয়াদ ৩০ জুন ২০২০ সাল পর্যন্ত।
এ ৬টি প্রকল্প বাবদ প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৯ শত ৭৪ কোটি ৫৬ হাজার টাকা। প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৩০ জুলাই ২০১৯ পর্যন্ত চসিক ব্যয় করেছে ১ হাজার ৫শ কোটি ৪৫ লক্ষ ৪শ ৫৭ টাকা। এছাড়া এয়ারপোর্ট রোড সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন ২ হাজার ৭’শ কোটি টাকা এবং সলিট ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প ১১’শ কোটি টাকা, নগরীর ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাসমূহ পুনর্বাসন/উন্নয়ন ও এ্যাসফল্টপ্ল্যান্ট স্থাপন ১৯৯ কোটি ৯৯ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, বিএমডিএফ ১৬৫ কোটি টাকার প্রকল্প, জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সংস্কার ১২২ কোটি টাকা, জাইকার অর্থায়নে স্কুল, সাইক্লোন সেন্টার ও ডিজেস্টার মেনেজমেন্ট ৯০০ কোটি টাকা, পশু জবাইখানা ৮৩ কোটি টাকা, থোক বরাদ্দ প্রকল্প, অতিবর্ষণে নগরীর রাস্তা সমূহের সংস্কার ও মেরামত, চকবাজার ও বহদ্দারহাট মার্কেট নির্মাণ, টিউবলাইট ফ্যাক্টরি, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, রং ফ্যাক্টরি বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সিটি মেয়র আরও বলেন, যত দ্রæত সম্ভব সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে হবে। প্রয়োজনে একটি কাজকে একাধিক ভাগে বিভক্ত করে কাজ সম্পন্ন করার পরামর্শ দেন মেয়র। আর যে সমস্ত প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছে অথচ টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি, সেই সমস্ত কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য তিনি তাগিদ দেন। কর আদায়ের উপর চসিকের সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড নির্ভরশীল। কর্পোরেশনের সেবাবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন পৌর কর বৃদ্ধি করা। এই কর বৃদ্ধির পাশাপাশি আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হওয়ার আহব্বান জানান মেয়র।