পৌরকর : ৩৩ সরকারি দপ্তরে পাওনা ২৩৪ কোটি টাকা

12

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত সরকারি দপ্তরগুরোকে নির্ধারিত হারে পৌরকর দিতে হয়। এমন ৩৩ সরকারি দপ্তর থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) পৌরকর বাবদ পাওয়া প্রায় ২৩৪ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ না থাকায় এসব পাওনা টাকা পরিশোধ করছে না দপ্তরগুলো। বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে অবহিত করেন চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এরই প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে চসিকের পৌরকর পরিশোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। বকেয়া টাকা উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব জহিরুল ইসলাম। বিষয়টি নিশ্চিত করে পূর্বদেশকে সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘অর্থ সংকটে কাজ করতে পারছি না। অপরদিকে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের বিপুল পরিমাণে পৌরকর বকেয়া। তা আদায়ে মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চেয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
চসিকের রাজস্ব বিভাগে সূত্র বলছে, সবচেয়ে বেশি পৌরকর বকেয়া আছে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে ১১০ কোটি ৯৫ লাখ ৪০ হাজার ৩১৮ টাকা। এর মধ্যে চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের হাল দাবি ২৯ কোটি ৫৯ লাখ ৬২ হাজার ৫৪৩ টাকা। বাকি ৮১ কোটি ৩৫ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৫ টাকা ২০২১-২০২২ অর্থবছর পর্যন্ত বকেয়া। অন্য মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত চসিকের পাওনা ২৯ কোটি ৮৫ লাখ ৩৬ হাজার ৬১২ টাকা, আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে পাওনা ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬৭ হাজার ৩২৩ টাকা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জননিরাপাত্তা বিভাগের কাছে ৫ কোটি ৪৫ লাখ ৬ হাজার ৩১৮ টাকা এবং সুরক্ষা সেবা বিভাগের কাছে ১ কোটি ৯৮ লাখ ১৯২ টাকা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে ৬ কোটি ২৮ লাখ ২ হাজার ৪৫২ টাকা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের কাছে ১০ কোটি ৯৫ লাখ ২৩ হাজার ৩০৯ টাকা এবং কারিগরী ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের কাছে ২ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ৭৫ টাকা, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ৫ কোটি ৫৮ লাখ ৯০ হাজার ৮৩৭ টাকা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের কাছে ৭ কোটি ২২ লাখ ২৯৫ টাকা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের কাছে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৬৬ হাজার ২০২ টাকা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কাছে ২ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার ৩১৮ টাকা, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের কাছে ৩ কোটি ৭৯ লাখ ৮৫ হাজার ১৭ টাকা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাছে ১ কোটি ৭১ লাখ ৫১ হাজার ৫৯৭ টাকা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে ২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৮ হাজার ২৯ টাকা এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের কাছে ৩ কোটি ২৬ লাখ ৪৭ হাজার ৩৮৬ টাকা, শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছে ৫ কোটি ১৪ লাখ ৫৪ হাজার ৪২০ টাকা, ভ‚মি মন্ত্রণালয়ের কাছে ২ কোটি ১৪ লাখ ৩২ হাজার ৭৩০ টাকা, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৯২০ টাকা, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের কাছে ৭ কোটি ৫৭ লাখ ৯৫ হাজার ৬৩২ টাকা, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৩৯ হাজার ৩১১ টাকা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে ৭৩ লাখ ৮০ হাজার ১১০ টাকা, তথ্য ও স¤প্রচার মন্ত্রণালয়ের কাছে ৩৮ লাখ ৯২ হাজার ৮৭৯ টাকা, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে ৯২ লাখ ৩৫ হাজার ৬০ টাকা, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে ৪ কোটি ৭৯ লাখ ৩৫ হাজার ৪৩৫ টাকা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে ৩১ লাখ ৫০ হাজার ২৩ টাকা, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে ৪২ লাখ ২৫ হাজার ৪৭২ টাকা, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে ২৬ লাখ ৯২ হাজার ২২৪ টাকা, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাছে ৮৭ লাখ ৪০ হাজার ৪৯৫ টাকা, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৬৫ হজার ২২২ টাকা, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কাছে ১১ লাখ ৪৮ হাজার ৩০ টাকা, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কাছে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৪১ হাজার ৯২০ টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কাছে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের কাছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার ১২০ টাকা এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কাছে ৩৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬০০ টাকা বকেয়া রয়েছে চসিকের।